কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রাতবিরেতে চলাফেরা করতেন বাউন্ডুলে জীবনযাপনের কারণে । গাঁজার আসর থেকে পূজোর আসর কিংবা সাহিত্যবাসর সবখানেই ছিল অবাধ যাতায়াত । এক রাতে গাঁয়ের বাড়ি ফিরছিলেন মেঠো পথ ধরে । নিশুতি রাতের জনমানবশূণ্য জোছনালোকিত নির্জন পথ । গন্জিকার নেশাটাও জমেছে জবর , ভালোই লাগছে জোছনায় হাঁটতে । একটি নড়বড়ে সাঁকো পেরিয়ে খানিকটা এগোতেই হঠাৎ টের পেলেন অতি সন্তপর্ণে কে যেন পান্জাবির পকেটে হাত ঢুকিয়েছে । বিদ্যুৎগতিতে নিঃশব্দ বজ্রমুষ্টিতে শরৎবাবু হাতটা ধরে ফেললেন । সাথে সাথেই কঁকিয়ে উঠে হাতের মালিক কাতর স্বরে বলে উঠল 'দাদা ঘড়ি দেখতে চাইছিলুম ! কয়টা বাজে আজ্ঞে ?' ঘুরে দাঁড়িয়ে দুম করে বিরাশি সিক্কার একটা কিল পিঠে বসিয়ে দিয়ে শরৎবাবু শ্লেষের সাথে উত্তর দিলেন ' একটা ! ' পিঠে হাত বুলোতে বুলোতে চোর ভায়া স্বস্তির নিঃশাস ফেলে বললো 'ভাগ্যিস বারোটা বাজে নি ...! '
বিভূতিভুষণ বন্দোপাধ্যায় একবার ভীষণ বেগ পাওয়ায় রাস্তার ধারেই প্রস্রাব করতে বসতে বাধ্য হলেন । পুলিশ তাঁকে ধরে থানায় নিয়ে গেল । দারোগাবাবু ধমকে জিজ্ঞেস করলেন ' রাস্তা নোংরা করলেন কেন ?' বিভূতিভুষণের জবাব ' নইলে জামাকাপড় নোংরা হত যে !' এই জবাবে মোটেই সন্তুষ্ট হতে পারলেন না দারোগাবাবু । শুরু করলেন জেরা । বিভূতিভুষণের নাম ধাম জেলা দু'চার কথাতেই দারোগাবাবু ধরে ফেললেন ধৃত ব্যক্তিই বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক বিভূতিভুষণ । সাহিত্যপ্রেমী দারোগাবাবু সসম্ভ্রমে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে করজোড়ে নমষ্কার করে উৎফুল্ল স্বরে বললেন ' কি পরম সৌভাগ্য আমাদের যে "পথের পাঁচালি"র স্রষ্টাকে এই থানায় আমরা পেলাম ! অনেক কিছু জানার আছে আপনার কাছে । কিন্তু তার আগে , আমাদের এখানে একটা সুন্দর বাথরুম আছে আপনি চাইলেই সেটা ব্যবহার করতে পারেন ।' 'না ভাই' বিভূতিভুষণ বললেন ,' এক্ষুণি জলবিয়োগ হল , এখন শুধু জলযোগই হতে পারে ।' উত্তর শুনে পুলকিত দারোগাবাবু মিষ্টি আনতে পাঠালেন !
সাইকো এ্যানালিসিস শুরু করার পর অনেক সময়েই নাকি রোগিদের সাইকো-এ্যানালিস্টের ওপর রাগ হয় । এই প্রসন্গে গিরীন্দ্রশেখর বসুর একটি গল্প আছে । তাঁর এক রোগি একদিন এসে বললেন ' জানেন ! কাল রাতে আমি স্বপ্ন দেখেছি যে , আপনি নালার মধ্যে পড়ে গেছেন , আর আমি অনেক কষ্ট করে সেখান থেকে আপনাকে টেনে তুললাম । অথচ আপনি সেদিন বললেন যে , আপনার ওপর আমার নাকি চাপা রাগ আছে ।' গিরীন্দ্রশেখর মুচকি হেসে বললেন , ' খুব ভালো কথা আপনি আমাকে তুলেছিলেন , কিন্তু নালায় আমায় ফেলেছিল কে ?'
ব্যারিস্টার রাসবিহারী ঘোষ বিখ্যাত ছিলেন তাঁর ক্ষুরধার বুদ্ধি ও ব্যন্গ করার ক্ষমতার জন্য । কলকাতা হাইকোর্টের চারপাশে তখন এতো বাড়িঘর ছিল না ; তার চত্বরে অনেক সময়েই ধোপাদের গাধা চরে বেড়াত । একদিন রাসবিহারী কোর্টে সওয়াল করছেন , হঠাৎ একটা গাধা ডেকে উঠলো । সাহেব জজ রাসবিহারী ঘোষকে খোঁচা দেবার লোভ সামলাতে পারলেন না । জজ সাহেব বললেন ,
' মিস্টার ঘোষ , দুজন একসন্গে নয় , একজন একজন করে বলুন ।' রাসবিহারী বাধা পেয়ে একটু চুপ করে আবার শুরু করলেন ।
সেই দিনই বিকেল বেলায় জজ সাহেব যখন তাঁর রায় পড়ছেন , হঠাৎ আবার একটা গাধা ডেকে উঠলো । রাসবিহারী ঘোষ চেয়ার থেকে লাফিয়ে উঠে জজ সাহেবকে বললেন ' মাই লর্ড , কেন জানিনা আপনার কথাগুলোর ভীষণ প্রতিধ্বনি হচ্ছে , আপনি কি দয়া করে আবার শেষের অংশটুকু পড়বেন ?'
খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা-১১
Click This Link
খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা-১০
Click This Link
খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা-৯
Click This Link
খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা-৮
Click This Link
খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা-৭
Click This Link
খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা-৬
Click This Link
খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা-৫
Click This Link
খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা-৪
Click This Link
খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা-৩
Click This Link
খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা-২
Click This Link
খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা-১
Click This Link
বাংলার খ্যাতিমানদের মজার ঘটনা
Click This Link