গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঘন্যতম ঘটনার রায়ের পর একজন আসামি আইএসের প্রতীকসংবলিত টুপি পরে এজলাস থেকে বের হন। ভ্যান থেকে এদের কে বের করে নিয়ে আসার সময় এবং ক্যামেরা এর সামনে স্টান্ট এর সময় আংগুল তুলে একই রকমের ভঙ্গি দেখাতে দেখা যায়।
২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়ংকর জঙ্গি হামলা স্তম্ভিত করেছিল পুরো বাংলাদেশকে। আর এই রায়ের সময় এরকম স্টান্টবাজি আমাদের মনে নানারকমের বিভ্রান্তির তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি বিভ্রান্তি এরকম-
এক:
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই টুপি আদালত পাড়া থেকে নয় কারাগার থেকেই জঙ্গিরা এনেছে। তারপরেই কারা অধিদপ্তর থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি নিজেদের উপরে তদন্ত করে নিজেদের ব্যপারে প্রতিবেদন দাখিল করে বলেছে ওই দিন জঙ্গিরা কারাগার থেকে কোনো টুপি নিয়ে বের হয়নি। সেদিন আদালতে আনার সময় প্রিজন ভ্যানে তোলার আগে তল্লাশি করা হয়েছিল। তখনো কোনো টুপি পাওয়া যায়নি। এমনকি আদালত থেকে এই আসামিদের কারাগারে ফেরত আনার পরও তল্লাশি করা হয়। সে সময়ও এমন কোনো টুপি তাদের কাছে পাওয়া যায়নি। টুপি খানা জেল হইতে আসেনি, অর্থাৎ জেল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করা যাবে না, তাঁরা গা বাচালেন।
এদিকে গোয়েন্দা বিভাগ থেকে বলেছিলেন, কারাগার প্রাঙ্গণে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তাঁরা দেখেছেন। জঙ্গি রাকিবুল আদালতের হাজতখানা থেকে মাথায় টুপি পরে বের হন। ব্যাপার টা নিয়ে বক্তব্যগুলো খুবই বিভ্রান্তিকর। পুলিশ ও কারা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন সম্পুর্ণ বিপরীতমুখী। দু পক্ষই সিসি ক্যামেরা দেখেছেন। তাহলে কি সিসি ক্যামেরা দুজনের কাছে দুরকমের ফুটেজ পাঠিয়েছে?
দুই:
নাকি এমন যে, বিশ্বকে দেখালাম আমরা ভেজাল আইএস নয়, শতভাগ খাঁটি আইএস দমন করছি। এবং যাদেরকে ধরা হয়েছে তারা আসল আইএস!
শহীদুল ইসলাম কথা বলার সাথে সাথে মুখ চেপে ধরা হয়। দেশের ভিআপিদের কেও আনা নেয়ার সময় বরাবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গায়ে লাইফজ্যাকেট এবং মাথায় হেলমেট পরিয়ে রাখে। আর আইএস টুপি দেখেও কোন পুলিশ এগিয়ে এলো না? পুলিশ এর হয়তো জানা ছিলো না এই আঁকাবাঁকা হিজিবিজি লিখা আইএস টাইপ কিছুর লোগো। কিন্তু ওই এলাকায় তো দেশের চৌকশ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা থাকার কথা। তারাও এগিয়ে এল না!
তিন:
আবার এরকম ও হতে পারে, হয়তো উপর মহলের স্থুল মস্তিস্কের পরিকল্পনায় জঙ্গীদের মাথায় এই টুপি পরিয়ে দেয়া হয়েছিল! আইএসের ভাবধারায় বিশ্বাসীদের এই বার্তা দেয়া যে, "দেখ তোমরা যারা এই লাইনে আছো, তার পরিণতি হল এই"।
----
মন্তব্য বা ধারনাগুলো সাধারন জনগনের ভিন্নমত থেকে আসছে। কিন্তু কিছু কিছু মন্তব্য দেখে মনে হলো, স্পষ্ট করে কোন কিছু না জানার কারনে জঘন্য এই বিষয়টা নিয়েও মানুষের মনের ভেতরে সাধারন করুনা জেগে উঠছে। এই করুনা আমাদের জঙ্গিবাদ বিরোধী সামাজিক আন্দোলনের অন্তরায়।