somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামি ভূমিকম্প বনাম মালাউনি ভুমিকম্প

০২ রা মে, ২০১৫ রাত ১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নেপালে ভূমিকম্প উত্তর দূর্যোগ নিয়ে কূটনীতি হচ্ছে বিস্তর। এর মধ্যে আবার ধর্মীয় বিদ্বেষ ঢুকে যাচ্ছে। ভাবতে অবাক লাগে, বাংলাদেশের মত যুদ্ধ করে স্বাধীন হওয়া একটি দেশে ধর্মীয় বিদ্বেষের স্বাধীন চর্চা হচ্ছে। ফেসবুকের মাধ্যমে এর ডালপালা ছড়াচ্ছে। আজকাল বহু দাড়িটুপি থেকে শুরু করে ক্লিনশেভ এমনকি নাক টিপলে দুধ বের হয় এমন বাচ্চা পোলাপানরা পর্যন্ত পাকিস্তানের জন্য ব্যাকুল। অথচ এই পাকিস্তান ইসলামের নামে এই দেশে লাখ লাখ মানুষ হত্যা করেছে, বিসমিল্লাহ বলে মদের বোতলে চুমুক দিয়ে নারায়ে তাকবির দিয়ে আমাদের মা বোনদের ধর্ষণ করেছে। অথচ আজ আমরা বিস্মৃত। আমরা নেপালকে মালাউন বলে গালি দিচ্ছি, তাদের উপর আল্লাহর গজব পড়েছে বলে ফতোয়া দিচ্ছি। অথচ এর চেয়েও খারাপ অবস্থায় আমরা পড়তে পারি। বিজ্ঞানীরা সেই ভবিষ্যতবাণীই করছেন। অথচ সেদিকে আমাদের ভ্রুক্ষেপ নেই। এর আগে পাকিস্তান আর ইরানে ভূমিকম্পে হাজার হাজার লোক মারা গিয়েছিল। কিন্তু সেটাকে সেইসব বিবেকবান মুসলমানরা আল্লাহর রহমত বলে চালিয়ে দিচ্ছে। তখন আর সেটাকে গজব মনে হয়নি, বা তখন সুন্নীরা বলে শিয়াদের উপ্রে আল্লাহর গজব, আর শিয়ারা বলে সুন্নিদের উপ্রে আল্লাহর গজব। আমরা আর কতটা নিচে নামলে ভালো মুসলমান হব? আসল কথা হল যে আমরা নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে মিথ্যা আর ভ্রান্ত সাব্যস্ত করতে ভালোবাসি, এটা আমাদের মধ্যে একটা আলাদা ঈমানী জোশ সৃষ্টি করে। এর মধ্যে আবার পাকিস্তান নাকি নেপালে ত্রানের সাথে বিফ মাসালা (এক ধরনের খাবার) পাঠাইসে। এই নিয়া ফেসবুকে হিন্দু মুসল্মান তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলতেসে। পাকি লাভাররা নেপালিদের গালি দিতে দিতে কাহিল। তারা অভিসম্পাত দিয়ে বলতেসে যে পাকিস্তানের হালাল পাক গোশত খেলে নেপালীদের পাপ মোচন হত, এখন না খেয়ে মর!! অথচ এটা আমাদের বেলায় হলে তখন কি বলত? আমাদের দেশে ঝড় সাইক্লোনে যদি আমেরিকা শুয়রের মাংস পাঠায় আর আমরা না খাই, তখন যদি তারা আমাদের না খেয়ে মরে যেতে বলে আর কুত্তার বাচ্চা বলে গালি দেয়, ভাল্লাগবে? ছোটবেলায় আমাদের পরিবার আর সমাজ এমনভাবে ধর্ম শিক্ষা দিয়েছে যে আমরা নিজের ধর্ম বাদে অন্য সব ধর্ম আর বিশ্বাসকে শুধু ঘৃণা করতে শিখেছি। আমাদের বাবা মা আত্মীয়স্বজন একটা কালো বাচ্চাকে ছোটবেলা থেকেই বুঝিয়ে দেয় যে সে কালো। এর পর সেই মেয়ে একটু বড় হলেই শুরু হয় ফেয়ার এন্ড লাভলি মেখে ইয়ামী গৌতম হবার দীর্ঘ যাত্রা। আর ছেলে হলে সাইফ আলী খান হবার মিছে আশা। এভাবে আমরা আমাদের মনুষ্যত্বকে জন্মের সময়ই গলা টিপে হত্যা করছি। ধর্মের রোগে আমরা সবাই আক্রান্ত, ভগবান পৃথিবী বানিয়ে সেটাকে অটোমেটিক মোডে রেখে ছেড়ে দিয়েছেন, তাই কোথাও ঝড় হয়, কোথাও ভূমিকম্প। কেউ মরে যায় কেউ বেঁচে থাকে। এটা নিয়ে ঈশ্বরের কোন মাথা ব্যাথা নেই। যারা বেঘোরে মরে গেল তারা তো গেলই, যারা বেঁচে গেলো, তাদের উচিত ঈশ্বর কি ভাবলো সেটা না ভেবে নিজেকে বাঁচানো। কারণ তিনি আমাদের ঘটে যথেষ্ট বুদ্ধি দান করেছেন, এরকম পরিস্থিতিতে আমরা কিভাবে টিকে থাকি সেটাই তিনি দেখতে চান। কিন্তু আমরা মোল্লা-পুরোহিতদের সাজেশন মত প্রিপারেশন নেই তাই সেই পরীক্ষায় ফেল করি। মানুষের জন্য ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ না, তাই ধর্ম যখন আমাদের ঘাড়ে চেপে বসে, তাকে কিছুদিনের জন্য ছুটি দেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। ঈশ্বর সদয় হলে তো আর মাথার উপ্রে সব ভেঙে পড়তো না, আর যেহেতু তিনি সদয় হননি, তাই তিনি কিসে দুঃখ পান আর কিসে খুশি হন সে কথা ভাবার অবকাশ আছে কি? এটা সবারই বোঝা উচিত। প্রিয় নেপাল, আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫০
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×