আবার বছর কুড়ি পরে তার সাথে দেখা হয় যদি
আবার বছর কুড়ি পরে-
হয়তো ধানের ছড়ার পাশে-
কার্তিকের মাসে-
তখন সন্ধ্যার কাক ঘরে ফেরে - তখন হলুদ নদী
নরম নরম হয় শর কাশ হোগলায়- মাঠের ভিতরে!
আবার দেখা হয় যদি কোন এক মিছিলের ফাঁকে
আবার কুড়ি বছরের পরে
লাল-নীল ব্যানারের অক্ষর হয়ে-
বয়সী চুল আর কথার আড়ালে-
রাজপথ ছেড়ে মেঠো রাস্তার ধারে-
তখন মুখের মুখোশগুলো অনেক রঙের-চেনা অবয়বে
ভাবনার দোলাচল শূণ্য দৃষ্টির অগোচরে!
অথবা নাইকো ধান ক্ষেতে আর,
ব্যস্ততা নাইকো আর,
হাঁসের নীড়ের থেকে খড়
পাখির নীড়ের থেকে খড়
ছড়াতেছে; মনিয়ার ঘরে রাত, শীত আর শিশিরের জল।
শিশিরের জল প্রখর রৌদ্রের ভাঁপে
হয়তো সরে যেতে পারে
আমাদের চোখ আর অতীত গল্প পাঠে-
আমরা চোখ বুজে অনুভব করে নেবো
সেইসব অন্য ছোঁয়ায়,ধোঁয়াশায় কিংবা আনন্দ-বিষাদের ঘাটে।
জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি, বছরের পার,-
তখন হঠাৎ যদি মেঠো পথে পাই আমি তোমারে আবার!
হয়তো এসেছে চাঁদ মাঝরাতে একরাশ পাতার পিছনে
সরু -সরু কালো-কালো ডালপালা মুখ নিয়ে তার,
শিরীষের অথবা জামের,
ঝাউয়ের-আমের;
কুড়ি বছরের পরে তখন তোমারে নাই মনে!
আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার,-
বৃত্তিক জীবনের চেনা পথ ধরেই আবার
হর্ষ-বিষাদে মাখানো চাদের আলোয়
সেই পরিবেশ,বিভক্ত অধ্যায় জোড়া দেওয়া চেষ্টার!
হয়তো সে আলো আমাদের হবেনা; কোন ডাল ছোঁয়ে
চুইয়ে পরবেনা ভুল হয়ে
আমরা ভুলে যাব সব,নৈর্ব্যক্তিক কথার পিঠে।
জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার-
তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার!
তখন হয়তো মাঠে হামাগুড়ি দিয়ে পেঁচা নামে-
বাবলার গলির অন্ধকারে
অশথের জানালার ফাঁকে
কোথায় লুকায় আপনাকে!
চোখের পাতার মতো নেমে চুপি কোথায় চিলের ডানা থামে।
থেমে থাকা ডানার ধূসর পালকে
ক্রমশঃ ঘনায়মান সন্ধ্যার যাত্রাপথে
হঠাৎই দেখা হয় যদি তোমার আমার;তবে ভেবে নেয়া যাক
প্রয়াত ভবিষ্যৎ,অবিরত বয়ে যাওয়া স্রোতের প্রলাপ-
যেখানে বিনিময় হবে স্মৃতির ব্যবচ্ছেদ
হয়তো সেখানে চিত্রিত হবে কল্প-বাস্তবে স্মৃতির সংকেত;
আর শব্দ সুখের মত চুপিচুপি দিয়ে যাবে ডাক।
সোনালি সোনালি চিল- শিশির শিকার করে নিয়ে গেছে তারে-
কুড়ি বছরের পরে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে!
তবে কোন কথা থাকবেনা ভাবানুবাদে জড়ানো আশ্রয়ে
আবার কুড়ি বছরের পরে দেখা হয় যদি হঠাৎ দু'জনে!
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ গুগল।
কুড়ি বছর পরে-জীবনানন্দ দাশ এবং আমার ভাবনার কয়েকটি চিরকুট!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২৬টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?
মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়
প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)
সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন
যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।
আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন
তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?
আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন