somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ দুপুরে

৩১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সূজনের মেজাজ এই মুহূর্তে অবস্থান করছে এক্সোস্ফিয়ারে।যেটা হলো গিয়ে সাত নম্বর আসমান।বাকি গুলোর নাম সূজন নিজে নিজেই মনে করার চেষ্টা করলো, ট্রাপোস্ফিয়ার,স্ট্রাটোস্ফিয়ার! আর মনে পড়ছেনা। বিরক্তিতে তার জোড়ালাগা ভ্রূ কুঞ্চিত হল। যেটা নিয়ে সোমা প্রায়শই ঠাট্রা করে বলে,তোমাকে লেডিস পার্লারে নিয়ে যেতে হবে।সেলুনে তো আবার ভ্রূ-প্লাকের ব্যবস্থা নেই! বলেই হাঁসতে থাকে। সোমার হাঁসিটা অন্যদের চেয়ে আলাদা। মনে হয়,চল্লিশ হাজার হার্জের কিছু একটা কানের ভেতর দিয়ে একেবারে মস্তিষ্কে গিয়ে বিঁধে। গা গুলিয়ে উঠে।
বহু সাধ্য-সাধনার পর ঘন্টা-দুয়েকের জন্য সজীবের বাসাটা ব্যবস্থা করেছিলো। সজীবের বাবা-মা নোয়াখালী গিয়েছে। সজীবের ছোটভাই সুমনকেও সাথে নিয়ে গেছে। এটা ভালো হয়েছে।ছোকরা মহা ফিচেল টাইপ। অবশ্য এমনি এমনি সূজনকে এই সুবিধে দিচ্ছেনা সজীব। বিনিময়ে দুই প্যাকেট বেনসন সিগারেট নিয়েছে। সজীবের ভাষায় যার নাম উপঢৌকন!
আমি বাসায় না আসা অবধি কোথাও যাবিনা! অফিসগামী মায়ের এই উক্তিটি সজীবের কানে বিষের মতো বেজেছে। আর সেই থেকেই তার মেজাজের পারদ ঊর্ধ্বমুখী।
সোমার সাথে সূজনের সম্পর্ক আঠারো মাসের। এই আঠারো মাসে সোমাকে অন্তত আঠারো শ’ বার ইনিয়ে বিনিয়ে সূজন একটা কথাই বলার চেষ্টা করেছে,যার সারমর্ম হলো ‘খিড়কী অভিসার’। বিয়ের আগে এসব নয়,আমার এসব পছন্দ না,আমি এমন মেয়ে না সহ নানান উছিলায় সোমাও বারংবার প্রত্যাখ্যান করেছে সূজনের চাওয়া প্রশ্রয় ও দেয়া প্রস্তাব। সূজনও নাছোড়বান্দা। অবশেষে একদিন বরফ গলতে শুরু করলো।সজীবের আর্জিতে মর্জি জানিয়ে সোমা বললো,এই একবারই কিন্তু।অন্তত বিয়ের আগে এটাই প্রথম,এটাই শেষ! সজীবের ফোন বাজছে,কিরে বাবা কই তুই?
-কই আবার?বাসায়।
-শোন,তুই কিন্তু বাসা থেকে কোথাও যাবিনা।
-আম্মা,আমার অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে,আমি বন্ধুর বাসায় যাবো। বোঝার চেষ্টা করো আম্মা !
-আমি অফিস থেকে আধবেলা ছুটি নিয়েছি। তোর আব্বার পেনশনের কাগজে নাকি কী ঝামেলা হয়েছে। তার অফিস থেকে চিঠি পাঠিয়েছে,তোকে বলা হয়নি।তোকে নিয়ে সেখানে যাবো। সে তো মরে গিয়ে বেঁচেছে!
-আম্মা আমি পারবোনা।তুমি যাও। রাগে গজগজ করতে করতে সূজন ফোন কেটে দিলো।এতো কষ্ট করে পাওয়া সুযোগ নষ্ট হবে? এখন বাজে এগারোটা দশ। বারোটার মধ্যে মগবাজারে থাকার কথা। সজীব যেখানে থাকে,সেই গলির মুখে। সোমাও সেখানে থাকবে,এমনটাই কথা হয়েছে। দ্রুত বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো সে। বেরোবার সময় মোবাইলটা বন্ধ করে দিলো। চার্জ ছিলোনা বা কিছু একটা বলে পরে মাকে বুঝানো যাবে।মা নাহয় বারবার ফোন দিয়ে বিরক্ত করেই যাবে।সবসময় এসব ভালো লাগে! ঠিক সময় মতোই সোমাকে নিয়ে সজীবের বাসায় পৌঁছালো সে।
তাড়াহুড়ো করে রাস্তা পার হচ্ছিলেন সূজনের মা মিসেস আসমা বেগম।দ্রুত বাসায় যেতে হবে।সেখান থেকে সূজনকে নিয়ে ওর বাবার অফিসে।ঝামেলা কী হয়েছ সেটা জেনে,দ্রুত সমাধান করতে হবে।পেনশন আটকে গেলে মহাবিপদ হয়ে যাবে।তাছাড়া,এই মাসে সূজনের ভার্সিটির সেমিস্টার ফি ও দেয়ার কথা।আর হয়তো সপ্তাহখানেক বাকি।
আসমা বেগমের রক্তাক্ত,নিথর দুখণ্ড দেহটা পড়ে আছে রাস্তায়।সুপ্রভাত পরিবহণের দ্রুতগামী একটি বাস চলে গেছে তার শরীরের উপর দিয়ে।পথচারীরা জড়ো হয়েছে।হাতের ব্যাগটা ছিটকে পড়েছে কয়েক হাত দূরে।কেও একজন ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করলো।কল লিস্টে একটিই নাম,সূজন।ডায়াল করতেই,ওপাশ থেকে স্বয়ংক্রিয় নারীকন্ঠের আওয়াজ ভেসে আসলো-'আপনার ডায়ালকৃত নাম্বারটি,এই মুহূর্তে বন্ধ আছে'!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:২৫
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×