চার দলীয় জোটের প্রধান দল বিএনপি-র সিদ্ধান্তহীনতাই এর মূল কারণ। জামায়াতে ইসলামী প্রথম থেকেই নির্বাচনে যাবার পক্ষে ছিল। কিন্তু বিএনপির কারণে তারা স্পষ্ট ঘোষণা দিতে পারেনি। দুটি বিষয় ভাবতে ভাবতেই বিএনপির সময় চলে গেছে; জেনারেল এরশাদের শাসনামলের মতো আপোষহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তী নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিতকরণ অথবা ভগ্ন বিএনপিকে সুসংগঠিত করার স্বার্থে হলেও নির্বাচনে অংশ নেয়া। দ্বিতীয় ভাবনারই বিজয় হয়েছে। দ্বিতীয় ভাবনার বিজয়কে আমি বিএনপির বিজয় বলেই মনে করছি।
বিএনপি-র নেতৃত্বাধীন জোট নির্বাচনে জিতবে কি না, সে ব্যাপারে এখনই কিছুই বলা যাচ্ছে না। জেতার সম্ভাবনা উড়িয়েও দেয়া যাবে না কোন যুক্তিতেই। নির্বাচনে না জিতলেও চার দলীয় জোট যে সংসদে একটি শক্তিশালী জোটের মর্যাদা পাবে,তা সহজেই অনুমেয়। কারণ বিএনপি-তে ভাঙ্গন দেখা দিলেও তৃণমূল পর্যায়ে দলটি এখনও বেশ শক্তিশালী। যেভাবেই হিসেব নিকেশ করা হোক না কেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের একটা ইতিবাচক ফল বেরিয়ে আসবেই। এছাড়া, নির্বাচনে যাবার ঘোষণার ফলে বিএনপির সব নেতাই এখন খালেদা জিয়ার কাছে ভিরবেন এবং ইচ্ছে করলে তিনি এ সুযোগে দলকে ভগ্নদশা থেকে উদ্ধার করতে পারবেন। এ সুযোগে দ্বিধাগ্রস্ত রাজনীতিকদের মনে নতুন করে চাঙ্গা ভাব জাগিয়ে তোলাও সম্ভব হবে। সংস্কারপন্থীরাও আরও কোনঠাসা হয়ে পড়বে। নির্বাচনে যাবার ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে জোট থেকে হারানোর আশংকাও পুরোপুরি কেটে গেছে।
কিন্তু নির্বাচনে না গেলে কি হতো? হতে পারতো অনেক কিছুই। ভগ্ন বিএনপি পরবর্তী নির্বাচনে বিজয়তো দূরের কথা, অস্তিত্ব সংকটে পড়তো। সংস্কারপন্থীরা আরও শক্তিশালী হতো। এখনও দলের যেসব নেতা-কর্মী জেলে আছে,তাদের মুক্তির সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যেতো। চার দলীয় জোটও হয়তো ভেঙ্গে যেতো। আর দেশবাসী বঞ্চিত হতো জরুরি অবস্থার খড়গমুক্ত পরিবেশে ভোট দানের অধিকার থেকে। সরকার চার দলীয় জোটের আন্দোলন ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অজুহাত দেখিয়ে আসন্ন নির্বাচনে জরুরি অবস্থা পুরোপুরি বহাল রাখার সুযোগ পেত। চার দলীয় জোট স্বাভাবিক ভাবেই আন্দোলনের নামে নানা পন্থায় নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে দেশে আবারও ১/১১-র পূর্বের পরিস্থিতি সৃষ্টির আশংকা ছিল,যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতাম আমরা জনগণ। কাজেই চার দলীয় জোটের নির্বাচনে যাবার ঘোষণার ফলে জনগণেরই বিজয় হয়েছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




