somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু পুরুষ মানুষের গল্প , যারা আসলে নারী ছিলো (১ম পর্ব) :|

১৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“ছাইয়া” শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত , এই শব্দটির সাথে আমার পরিচয় হয় আজ থেকে ১০-১২ বছর আগে ইয়াহু চ্যাটরুমে । ভার্চুয়াল লাইফ ছাড়া বাস্তব জীবনে আমি কোনদিন ছাইয়ার দেখা পাইনি । তবে ছাইয়ার বিপরীতক্রমও কিন্তু আছে ,অর্থাৎ নারী হয়েও তারা পুরুষের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছিলো এবং সেটা ভার্চুয়ালী নয় বরং বাস্তব জীবনে । আজ সেই ধরনের কিছু নারীর গল্প বলবো।
ব্র্যান্ডন টীনাঃ


ব্র্যান্ডন টীনা ১৯৭২ সালে আমেরিকায় জন্মগ্রহন করেন। কিশোর বয়সে এক ছেলে আত্মীয়ের মাধ্যমে ধর্ষিত হবার পর টীনা তার নিজ শহর থেকে অন্য আরেক শহরে চলে যায় । এবং সেখানে গিয়ে সম্পূর্ণ পুরুষ মানুষের বেশে জীবন কাটাতে শুরু করে । সেখানে সে দুজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী জন লটার এবং নিসেনের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে এবং লানা নামে এক মেয়ের সাথে ডেটিং শুরু করে । কিছুদিন পরে , চেক জালিয়াতির জন্য টীনাকে পুলিশ আটক করে এবং লানা তাকে জেল থেকে মুক্ত করে আনে , জেল থেকে মুক্ত করার সময় লানা জানতে পারে যে টীনাকে মেয়েদের সেলে রাখা হয়েছিলো , তখন লানা এ ব্যাপারে জানতে চায় । জবাবে টীনা বলে যে ,সে আসলে নপুংশক হয়ে জন্মেছিলো এবং ডাক্তার বলেছে সে কিছুদিনের মধ্যে পূর্নাঙ্গ পুরুষে রূপান্তরিত হবে । এই কথায় লানা শান্ত হয় এবং বলে “তুমি যাই হও না কেনো ,তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা অটুট থাকবে” । টীনার আটক হবার বিষয়টি পরেরদিন পত্রিকায় ছাপা হয় । এবং ছাপা হবার পরেই লটার এবং নিসেন , টীনাকে তার পুরুষত্বের পরীক্ষা দিতে বলে , কিন্তু এ ক্ষেত্রে টীনা ধরা পরে যায় , ধরা পরার পর নিসেন এবং লটার , টীনাকে ধর্ষন করে বন্দী করে রাখে , যদিও টীনা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সমর্থ হয় এবং পালিয়ে পুলিশের কাছে ধর্ষনের অভিযোগ জানায় । এ ঘটনায় লটার এবং নিসেন ক্ষুব্ধ হয়ে টীনাকে হত্যা করে ।
এই সত্য ঘটনার উপর Boys don’t cry নামে একটি চলচিত্র নির্মিত হয় ।
হানা স্নেলঃ



১৭২৩ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহন করেন । ১৭৪৪ সালে সে জেমস নামের এক পুরুষের সাথে বিয়ে হয় । বিয়ের পরে তাদের একটি কন্যা সন্তান হয় । কিন্তু সেই কন্যা সন্তান কিছুদিনের মধ্যেই মারা যায় এবং পরবর্তীতে তার স্বামী তাকে পরিত্যাগ করে । পরবর্তীতে সে স্বামীকে খুঁজে পাবার জন্য পুরুষের ছদ্মবেশে ভ্রমন শুরু করে এবং সবার কাছে নিজেকে “জেমস গ্রে” নামে পরিচয় দিতে শুরু করে । একসময় সে রাজকীয় নৌবাহিনীতে যোগদান করেন । এবং তাকে দুইবার সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহন করতে হয় যুদ্ধের সময় সে একাধিক বার আহত হন , তবে সে কিভাবে নিজের লিঙ্গ গোপন রেখেছিলেন সেটা জানা যায়নি ।
যুদ্ধ শেষে সে দেশে ফিরে আসে , এবং ফিরে এসে সে সবাই তার আসল পরিচয় জানিয়ে দেয় এবং সে তার হারানো স্বামীকেও খুঁজে পায় যদিও তার স্বামী তখন খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলো , স্বামীকে খুঁজে পাবার পর সে তার স্বামীকে ডিভোর্স দেয় ।
যদিও সে নারী হয়েও সত্য গোপন করে নৌবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলো ,তবুও যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য তার তথ্য গোপনের অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়া হয় , এবং মৃত্যুর পরে তাকে পূর্ন সামরিক মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
জেনী আইরিনঃ



১৮৪৩ সালে আমেরিকার জন্ম গ্রহন করেন , এবং ১৮৬২ সালে পুরুষের রূপ ধারন করেন , নিজের নাম পরিবর্তন করে “আলবার্ট চেসিয়ার” রাখেন । পুরুষ ছদ্মবেশে সে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন । ৪০টির অধিক যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন এবং একবার সে যুদ্ধবন্দীও হন তবে নিজের বুদ্ধিমত্তা এবং শক্তির মাধ্যমে গার্ডদের পরাজিত করে বন্দী দশা থেকে মুক্ত হন । সাধারণ সৈনিকদের মধ্যে তার কোন পার্থক্য ছিলোনা , তবে সে একা থাকতে বেশী পছন্দ করতো । যাইহোক সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহন করার পরে সে অন্যান্য অনেক কাজই করেছে এমনকি পুরুষ হিসেবে ভোট ও দিয়েছেন । তবে ১৯১০ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে ডাক্তারের কাছে তার আসল রূপ ধরা পরে, যদিও ডাক্তার সেটা গোপন রাখে , জীবনের শেষ বয়সে এসে সামরিক বাহিনীর অবসরকালীন আবাস স্থলে দিন কাটাতে শুরু করে , সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে , এক আয়া তাকে গোসল করানোর সময় তার আসল লিঙ্গ জেনে ফেলে । ১৯১৫ সালে তার মৃত্যু হয়।


ম্যালিন্ডা ব্লেলকঃ



আমেরিকান সিভিল ওয়্যারের অন্যতম নারী যোদ্ধা । যদিও তার যুদ্ধে যাওয়ার কথা ছিলোনা , কিন্ত যখন দেখলো তার স্বামী যুদ্ধে যাচ্ছে , তখন সে স্বামীকে হারানোর ভয়ে নিজেও স্বামীর সাথে যুদ্ধে গেলো তবে নাম বদল করে , তার নতুন নাম হলো “স্যামুয়েল ব্লেলক” এবং তার পরিচয় হলো তার স্বামীর বড়ভাই !
ম্যালিন্ডা খুব সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেছিলেন ,এবং কেউ তার পরিচয় জানতে পারে নাই । তবে একদিন স্বামী এবং স্ত্রী দু জনেই সৈন্য দল থেকে নিখোজ হওয়ার পরে তাদের পরিচয় ধীরে ধীরে প্রকাশিত হয়।


২য় পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:৫৯
৬৭টি মন্তব্য ৬৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×