somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু পুরুষ মানুষের গল্প , যারা আসলে নারী ছিলো (২য় পর্ব) :|:|

২৩ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ম পর্ব

“ছাইয়া” শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত , তবে ছাইয়ার বিপরীতক্রমও কিন্তু আছে ,অর্থাৎ নারী হয়েও তারা পুরুষের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছিলো এবং সেটা ভার্চুয়ালী নয় বরং বাস্তব জীবনে । আজ সেই ধরনের আরও কিছু নারীর সাথে সংক্ষেপে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেস্টা করবো

ডরোথি টিপটনঃ


১৯১৪ সালে আমেরিকাতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৩ সাল থেকে তিনি বিভিন্ন বার এবং রেস্তোরাতে পিয়ানিস্ট এবং সেক্সোফোনিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন , ১৯৪০ সাল থেকে সম্পূর্ন রূপে পুরুষ হিসেবে বাচতে শুরু করেন , তার নতুন নাম হয় বিলি টিপটন টিপটন। ধীরে ধীরে একজন মিউজিসিয়ান হিসেবে অনেক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন একের পর এক সফল অ্যালবাম বের করেন । টিপটনের সাথে একাধিক নারীর সমকামী সম্পর্ক ছিলো । যার ফলে তাকে কেউ সন্দেহ করতোনা যে সে একজন পুরুষ ,এর মধ্যে একজনের সাথে সে খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে , এবং স্বামী স্ত্রীর মত বসবাস করতে থাকে । টিপটন এবং সঙ্গী তিন জন শিশুকে দত্তক নেয় । একজন ভালো বাবা হিসেবে টিপটনের বেশ সুনাম ছিলো । ১৯৮৯ সালে তার মৃত্যু হয় ,তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার আসল পরিচয় গোপন ছিলো।


মার্গারেট অ্যানঃ


১৭৯২ সালে ব্রিটেনে জন্মগ্রহণ করেন । তিনিই প্রথম ব্রিটিশ মহিলা যে কিনা ডাক্তার হতে পেরেছিলেন । মার্গারেটের স্বপ্ন ছিলো চিকিৎসক হওয়া ,কিন্তু সেই যুগে একজন নারীর পক্ষে চিকিৎসক হওয়া সম্ভব ছিলোনা । তাই সে মা বাবার সহায়তায় ছেলের রূপ ধারন করে এবং তার নাম হয় জেমস ব্যারী । ডাক্তারী পড়া শেষে তিনি ব্রিটিশ আর্মীর সার্জন হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ব্রিটিশ মিলিটারী হাসপাতালের মহাপরিদর্শক হিসেবে কর্মজীবন শেষ করেন , তার কর্মজীবনের বেশীরভাগ সময় কাটে আফ্রিকা এবং এই উপমহাদেশে । তিনিই প্রথম শল্য চিকিৎসক যে কিনা মা ও শিশু উভয়কে সুস্থ রেখে সফলভাবে সিজার অপারেশন করেন। তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার আসল লিঙ্গ পরিচয় কেউ জানতো না , মৃত্যুর পরে তার লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশিত হলে সেটা দীর্ঘদিন গোপন রাখা হয়।


ব্রিটা নিলস্টডার

১৭৫৬ সালে সুইডেনে জন্ম নেয়া এই নারী ১৭৮৫ সালে আন্দ্রেস পিটার হ্যাগবার্গ নামের এক সৈনিক কে বিয়ে করে করে ।বিয়ের কিছুদিন পরেই তার স্বামীকে রুশ-সুইডিশ যুদ্ধে (১৭৮৮-১৭৯০) অংশগ্রহন করতে হয় । যুদ্ধের সময় দীর্ঘদিন কোন খোজ না থাকায় , ব্রিটা নিজেই পুরুষের বেশ ধরেন , এবং পিটার হ্যাগবার্গ নামে দিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এবং একাধিকবার সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেয় । এই যুদ্ধের মাঝেই তিনি তার স্বামীকে খুঁজতে থাকেন । একদিন ব্রিটা যেই সৈন্যদলের সাথে যুদ্ধের ছিলেন ,সেই দলের অধিনায়ক “হ্যাগবার্গ ” বলে ডাক দেন । এবং তখন দুজন একসাথে এগিয়ে যান , তারা পরস্পরকে চিনিতে পারেন , কিন্তু তারা এই দুজনেই এই বিষয়টি গোপন রাখেন । তার কিছুদিন পরে যুদ্ধের সময় ব্রিটা আহত হন ,এবং যখন তাকে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় , তখনই তার আসল পরিচয় উদ্ভাসিত হয় । যদিও পরিচয় গোপন করার জন্য তাকে কোন শাস্তি দেয়া হয়নি । যুদ্ধশেষে তিনি অন্য সৈন্যদের মতই পেনসন সহ অন্যান্য সুবিধা পান এবং মৃত্যুর পরে পূর্ন সামরিক মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।


ডরোথি লরেন্স



একজন ফরাসী নারী , তার বয়স যখন ১৯ তখন ইউরোপ জুড়ে ২য় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে । তার স্বপ্ন ছিলো যুদ্ধক্ষেত্রের সাংবাদিক হওয়া , কিন্তু তৎকালীন সময়ে একজন মেয়ের পক্ষে সেটা ছিলো অসম্ভব । তখন সে একজন ব্রিটিশ সৈনিককে ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে ,সেই সৈনিকের ইউনিফরম কিনে নেয় , এবং নিজের চুল ছোট করে গায়ের রঙের পরিবর্তন করে , একজন ব্রিটিশ সৈন্যের রূপধারণ করে এবং তার নাম হয় ডেনিস স্মিথ । একজন সৈন্য হিসেবে তাকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একটি দলের সাথে পাঠানো হয় ,সেখানে ডরোথি সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিটে কাজ করতে থাকে , মাঝে মাঝেই তাকে প্রচন্ড গোলাগুলির মধ্যে দিয়েও কাজ করতে হয়েছিলো । ডরোথির বাত-জ্বরের সমস্যা ছিলো এবং সেই সময়ে প্রচন্ড ঠান্ডার তার অবস্থা দিনে দিনে খারাপ হয়ে ওঠে । একটা পর্যায়ে সে ভাবতে শুরু করে সে যদি কোন কারনে মারা যায় বা বন্দী হন তাহলে সে যে সৈনিকের কাছে থেকে পোশাক নিয়েছিলো ,সে খুব বিপদের পরতে পারে। তাই সে নিজেই কোম্পানী কমান্ডারের কাছে ধরা দেন , এবং তাকে একজন স্পাই হিসেবে যুদ্ধবন্দী করা হয় । যদিও ব্রিটিশরা এই খবর গোপন রেখেছিলেন তার কারন এই খবর জেনে গেলে অনেক নারীই ছদ্মবেশে সেনাবাহিনীতে ঢুকে যেতে পারে । পরবর্তীতে ডরোথিকে একাধিকবার অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় , এবং যখন পুরুষ সাজার আসল কারন তারা জানতে পারে , তখন তাকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়া হয় । শর্ত অনুযায়ী পুরুষ হিসেবে ব্রিটিশ সেনাদলে কাজ করার অভিজ্ঞতা সে কখনোই প্রকাশ করবে না । ১৯৬৪ সালে তার মৃত্যু হয়
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:৫৯
৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×