somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক পায়েই রিকসা চালান দেলোয়ার ২১ বছর ধরে

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিন চাকার রিকশা। তা চালিয়েই তিনজনের সংসারের চাকা সচল রাখেন দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু জীবন আর রিকশার চাকা ঘোরাচ্ছেন তিনি এক পায়ে। এভাবেই চলছে অবিরাম ২১ বছর। বয়স তাঁর ৬০ ছুঁই ছুঁই।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার লেমুয়া গ্রামের দেলোয়ার কখনো রিকশা চালাতেন, কখনো করতেন দিনমজুরি। ১৯৯১ সালের একদিন ঘাস কাটতে গিয়ে তাঁর ডান পায়ের একটি আঙুল কেটে যায়। তাতে পচন ধরলে আঙুলটি কেটে ফেলতে হয়। কিন্তু পচন ঠেকাতে না পেরে চিকিৎসকেরা বাকি চারটি আঙুলও কেটে ফেলেন। তাতেও শেষ রক্ষা হয় না। ১৯৯২ সালে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) পা-ই কেটে ফেলতে হয়।
এর পরের সংগ্রাম অনেক করুণ। সংসার চালাতে এক পায়েই রিকশা চালানো শুরু করেন দেলোয়ার। কয়েক বছর ঢাকায় রিকশা চালান। ১৯৯৮ সালে বসবাস শুরু করেন নারায়ণগঞ্জে।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাঁ পায়ের সঙ্গে রিকশার এক পাশের প্যাডল বেঁধে রাখতে হয়। যানজটে বা খানাখন্দে পড়লে নেমে লাফিয়ে লাফিয়ে টানতে হয় রিকশা। কালভার্ট-সেতু বা উঁচু জায়গা আছে—এমন এলাকার যাত্রী নিয়ে যেতে পারেন না।
দেলোয়ারের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে বিয়ে করে আলাদা থাকেন। স্ত্রী ও ছোট ছেলে আল-আমিনকে (১৮) নিয়ে তাঁর সংসার। শহরের বাপ্পি চত্বরের কাছে দুই হাজার ২০০ টাকা ভাড়ায় একটি ঘরে থাকেন তাঁরা। প্রতিদিন একবেলা রিকশা চালিয়ে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা রোজগার করেন দেলোয়ার।
এভাবেও আর চলছে না দেলোয়ারের। কিডনির অসুখে ভুগছেন তিনি। এক পায়ে চাপ পড়ায় শরীরের বাঁ পাশে তীব্র ব্যথা হয়। কিন্তু চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই। তিনি আক্ষেপ করে বললেন, ‘নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, নগর ভবনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে অনেক বিত্তশালী যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছি। একটু সহযোগিতা চেয়েছি অনেকের কাছে, কারও মন গলেনি।’
দেলোয়ারের রিকশার মালিক জাকির বলেন, ‘তাঁর কষ্ট দেখলে খুব খারাপ লাগে। তাই কখনো রিকশার জমা ১০-২০ টাকা কম দিলে মেনে নিই।’ দেলোয়ারের স্ত্রী বানু জানান, প্রতিদিন সকালে লাঠিতে ভর দিয়ে বের হয়ে যান দেলোয়ার। দুপুরে ফেরেন। চোখ ভিজে যায় বানুর। বলেন, ‘নিজে কাম করতে পারলে ওনারে আর রিকশা চালাইতে দিতাম না।’
বানু হূদেরাগে আক্রান্ত। আগে গৃহ সহকারীর কাজ করলেও এখন আর পারেন না। তিনি বললেন, ‘রাস্তায় ভিক্ষা করলে উনি (দেলোয়ার) এত দিন বাড়িঘরও করতে পারতেন। কিন্তু তা কহনোই করবেইন না তিনি।"
যাঁরা দেলোয়ার হোসেনের পাশে দাঁড়াতে চান, তাঁরা যোগাযোগ করতে পারেন এই মুঠোফোন নম্বরগুলোতে।
০১৭১১৬৪৩৩৮৫ অথবা ০১৭১৩০৬৭৭০০
প্রথম আলোর সৌজন্যে
Click This Link
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×