গতকাল চট্টগ্রামে একজন আইনজীবীকে চারতলা থেকে ফেলে দিয়েছে অতি উৎসাহী পুলিশ সদস্যরা। আমি বুঝলাম না এরা কি ছাত্রলীগের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার মিশনে নেমেছে নাকি?
খবরে প্রকাশ----
চট্টগ্রামে জাহেদ মাহমুদ নামের এক আইনজীবীকে চারতলা থেকে ফেলে দিল পুলিশ। জাহেদের পরিবারের অভিযোগ, বুধবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে অপহরণে ব্যর্থ হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে চারতলা ভবন থেকে তাকে ফেলে দেয় সাদা পেশাকধারী ডিবি পুলিশ। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন আছেন। সম্প্রতি নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন জাহেদ মাহমুদ। এদিকে আইনজীবীর ওপর এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে আইনজীবী ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম। সংগঠনের নেতারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতার দাবি করেন।
তবে পুলিশের দাবি, এ আইনজীবী শিবিরের সাবেক ক্যাডার এবং বর্তমানে জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। গ্রেফতার এড়াতে তিনি নিজেই চারতলা থেকে লাফ দিয়েছেন এবং এখন গা ঢাকা দিয়ে আছেন। আহত ওই আইনজীবীর পরিবার সূত্র জানায়, বুধবার আদালতের কাজ শেষে সন্ধ্যায় নগরীর চন্দনপুরা এলাকায় নিজ বাসায় আসেন অ্যাডভোকেট জাহেদ মাহমুদ। রাতে সাদা পোশাকদারী ডিবি পুলিশের সদস্যরা তার চারতলা বাসায় অভিযান চালায়। এ সময় তাকে অপহরণের চেষ্টা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন তারা। পরে তাকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিলে তার সঙ্গে সাদা পোশাকদারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এরই একপর্যায়ে এ আইনজীবীকে নির্মমভাবে চারতলা থেকে মাটিতে ফেলে দেয়া হয়। চারতলা থেকে পড়ে তিনি মারা গেছেন ভেবে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে এলাকাবাসী আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিত্সার জন্য লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাতেই তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিত্সাধীন রয়েছেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে তাকে প্রকাশ্যে ভালো কোনো হাসপাতালে আনতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে আইনজীবীর ওপর সাদা পোশাকধারী ডিবি পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রামের আইনজীবী নেতারা। ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল চট্টগ্রাম আদালত নতুন ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে আইনজীবী ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম। ইসলামিক ল’ইয়ার্স কাউন্সিল চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল মল্লিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম নেতা ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট এনামুল হক, নগর বিএনপি নেতা ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, অ্যাডভোকেট জাকির উল্লাহ, সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোস্তফা নূর প্রমুখ। এছাড়া আইনজীবীর ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট কবির চৌধুরী, ইসলামিক ল’ইয়ার্স কাউন্সিল সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুদ্দীন আহমদ মির্জা, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ বিভিন্ন আইনজীবী সংগঠনের নেতারা।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. তারেক আহমেদ বলেন, রাতে টহলরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এক আসামিকে ধরার জন্য ওই বাসায় গিয়েছিল। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কাউকে না পেয়ে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা চলে আসেন। এ সময় পালানোর চেষ্টা করে ওই আইনজীবী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
সুত্রঃ Click This Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






