somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাইদীকে নিয়ে এক রাজাকারের গবেষণা

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হাসিনা বুবু- মাওলানা সাইদীর ফাঁসি দিবেন?ঠিক আছে দিয়ে ফেলুন-তবে জানবেন সাইদীর লক্ষ ভক্তের চোখের পানি আপনার জন্য ঘৃণা আর অভিশাপ হয়ে ঝড়বে সারা জীবনের জন্যঃ

বেশ কয়েকমাস ধরেই আমি মাওলানা সাইদীর ভক্তদের মনের অবস্থা জানার চেষ্টা করছিলাম। এটা যারা জামায়াত শিবির করে না সেই সব ভক্তদের মনের অবস্থা। শুনুন কয়েক ভক্তের কথা।
ভক্ত-১
আজ সকাল বেলা আমার মামা ফোন করেছেন। ঘুম ঝড়ানো কণ্ঠস্বর। ভাঙা ভাঙা। বুঝলাম ঠান্ডা লেগেছে। মামাকে বললাম,
মামা কি হয়েছে?
ঠান্ডা লেগেছে, বাবা। কিন্তু সেটা সমস্যা না। সমস্যা হল সকাল থেকে শুয়ে শুয়ে সাইদী সাহেবের ওয়াজ শুনছিলাম মোবাইলে। এখন আমার বুকের ভিতর খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। যদি ওনার কিছু হয়ে যায়!
আমি বললাম, মামা আপনি দোয়া করেন। আল্লাহ না চাইলে কেউ কাউকে কিছু করতে পারে না। ( এই মামা আজীবন জামায়ত শিবিরের বিপক্ষে কথা বলেছেন কারণ উনি এক পীরের মুরিদ)
সেটা ঠিক আছে কিন্তু তবু মনটা মানতে চায় না। বাংলার বুকে ইসলামের পক্ষে এইরকম কন্ঠ আবার কবে আসবে তার কি ঠিক আছে! যদি হাসিনা এরকম কিছু করেই বসে আল্লাহ যেন ওকে......... এরপর মামা শুরু করলেন অভিশাপ আর ঘৃণার উদগীরণ।
আমি মামাকে থামিয়ে বললাম, মামা আপনি নিশ্চিন্ত থাকেন বাংলার লক্ষ যুবক তৈরী আছে মাওলানা সাইদীর জন্য তাদের জীবন দিয়ে দিতে। হাসিনা বুবু এটা করলেও আপনাদের মত লক্ষ ভক্তের চোকের পানি আর ঘৃণা শেখ হাসিনার জন্য অভিশাপ হয়ে ঝড়বে যা ওকে কোনদিন শান্তিতে থাকতে দেবে না আর আখেরাতের বিচার তো আছেই।
ভক্ত-২
অফিসে আমার এক কলিগ আছে। তার কথা হল-
আমি কুরআন হাদীস কেন পড়া দরকার, কেন নামাজ পড়া দরকার, জানতাম না-বুঝতাম না। শুধু সাইদী সাহেবের মাহফিল শুনেই আজ আমি পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, কুরআন শিখেছি এক হুজুরের কাছে, এই দাড়ি রেখেছি। সাইদীর কথা শুনলেই আমার শরীরের পশম দাঁড়িয়ে যায়। এই দেখুন দেখুন। আমি সত্যি দেখলাম তাই ঘটেছে। আমার বাড়িতে সবাই আওয়ামীলীগকেই ভোট দেয়। হাসিনা যদি সাইদীকে ফাঁসি দেয় তাইলে আমি আমার বাড়ির সব ভোট নষ্ট করে দিব।
আমি বললাম, সাইদীকে এত ভালবাসেন তাইলে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপনি কোন কাজ করেন না কেন? এই যেমন অনেকে মিছিল মিটিং করছে।
আমিতো ওনাকে ওদের মত করে ভালবাসি না। আমি ওনাকে আমার মত ভালবাসি তাই আমি ওদের সাথে মিছিল করব কেন? আমি নিজে নিজে কাজ করি। রাস্তাঘাটে, চায়ের দোকানে সবার সাথে ওনার পক্ষে কথা বলি যাতে সবাই ওনার ফাঁসির রায় হলে শেখ হাসিনা কে ঘৃণা করে।
আমি তার আবেগ কে শ্রদ্ধা না করে পারলাম না।
ভক্ত-৩
এই ভক্তকে আমি নিজ চোখে দেখিনি। আমার এক বন্ধুর মুখে শোনা। আমার পিরোজপুরের সাইদীর এলাকায় থাকা এক বন্ধুর মুখে শোনা। আমার বন্ধুর পাশে বাড়ির ঘটনা। হিন্দু দম্পতি। তাদের বিয়ের সময় মাওলানা সাইদী নাকি উপস্থিত হয়েছিলেন আকস্মিক ভাবে। স্ত্রী মাওলানা সাইদীকে ডাকেন ঠাকুর বলে। আর স্বামী আওয়ামী ঘরনার রাজনীতিতে কিছুটা সক্রিয়। বাড়ীর সামনে দিয়ে মিছিল যাচ্ছে সাইদীর বিরুদ্ধে। স্বামী তখন খাবার খাচ্ছিলেন। মিছিলের শব্দ শুনেই তিনি খাওয়া বন্ধ করে দাঁড়িয়ে গেলেন। মিছিলে যাবেন। স্ত্রী তাকে বললেন, দেখ আমার ঠাকুরের বিরুদ্ধে তুমি যেওনা। তোমার ভালো হবে না। তুমি এখন যেতে পারবে না। স্বামীস্ত্রীতে লেগে গেল ধুন্ধুমার। শেষে একটু দেরী হওয়াতে স্বামী তাদের পুকুর পাড়ের ঝোপ ঝাড়ের মধ্যে দিয়েই দিলেন ছুট। ঝোপে ছিল ভেমরুল এর চাক। তার গারের ধাক্কায় সেটা গেল ভেঙ্গে। বেশ আর যায় কোথায়!! ভেমরুলের দল এক সাথে ওনাকে আক্রমন।
আমার বন্ধু নাকি ওনাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিল। ওনার স্ত্রী এখনো কান্নাকাটি করছেন এই বলে যে, ঠাকুরের অভিশাপেই এই ঘটনা ঘটেছে। ঠাকুরের কাছে গিয়ে ওনার স্বামী মাফ না চাইলে ওনার স্বামী ভাল হবে না।
আমি আবারও অবাক না হয়ে পারলাম না।
এইরকম হাজারো অন্ধ ভক্ত মাওলানা সাইদীর জন্য ঘরে ঘরে তাদের চোখের জল ফেলছেন। দোয়া করছেন। হাসিনা বুবু এরপর তুমি যদি আল্লাহর এই মাসুম বান্দাকে ভারতের কথায় এর বিচারের রায় দেওয়ার চেষ্টা কর তবে জানবে এই বাংলার লক্ষ কোটি হৃদয়ের ঘৃণা আর অভিশাপই তোমার ধ্বংস ডেকে আনবে।
১৫টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×