হাসিনা বুবু- মাওলানা সাইদীর ফাঁসি দিবেন?ঠিক আছে দিয়ে ফেলুন-তবে জানবেন সাইদীর লক্ষ ভক্তের চোখের পানি আপনার জন্য ঘৃণা আর অভিশাপ হয়ে ঝড়বে সারা জীবনের জন্যঃ
বেশ কয়েকমাস ধরেই আমি মাওলানা সাইদীর ভক্তদের মনের অবস্থা জানার চেষ্টা করছিলাম। এটা যারা জামায়াত শিবির করে না সেই সব ভক্তদের মনের অবস্থা। শুনুন কয়েক ভক্তের কথা।
ভক্ত-১
আজ সকাল বেলা আমার মামা ফোন করেছেন। ঘুম ঝড়ানো কণ্ঠস্বর। ভাঙা ভাঙা। বুঝলাম ঠান্ডা লেগেছে। মামাকে বললাম,
মামা কি হয়েছে?
ঠান্ডা লেগেছে, বাবা। কিন্তু সেটা সমস্যা না। সমস্যা হল সকাল থেকে শুয়ে শুয়ে সাইদী সাহেবের ওয়াজ শুনছিলাম মোবাইলে। এখন আমার বুকের ভিতর খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। যদি ওনার কিছু হয়ে যায়!
আমি বললাম, মামা আপনি দোয়া করেন। আল্লাহ না চাইলে কেউ কাউকে কিছু করতে পারে না। ( এই মামা আজীবন জামায়ত শিবিরের বিপক্ষে কথা বলেছেন কারণ উনি এক পীরের মুরিদ)
সেটা ঠিক আছে কিন্তু তবু মনটা মানতে চায় না। বাংলার বুকে ইসলামের পক্ষে এইরকম কন্ঠ আবার কবে আসবে তার কি ঠিক আছে! যদি হাসিনা এরকম কিছু করেই বসে আল্লাহ যেন ওকে......... এরপর মামা শুরু করলেন অভিশাপ আর ঘৃণার উদগীরণ।
আমি মামাকে থামিয়ে বললাম, মামা আপনি নিশ্চিন্ত থাকেন বাংলার লক্ষ যুবক তৈরী আছে মাওলানা সাইদীর জন্য তাদের জীবন দিয়ে দিতে। হাসিনা বুবু এটা করলেও আপনাদের মত লক্ষ ভক্তের চোকের পানি আর ঘৃণা শেখ হাসিনার জন্য অভিশাপ হয়ে ঝড়বে যা ওকে কোনদিন শান্তিতে থাকতে দেবে না আর আখেরাতের বিচার তো আছেই।
ভক্ত-২
অফিসে আমার এক কলিগ আছে। তার কথা হল-
আমি কুরআন হাদীস কেন পড়া দরকার, কেন নামাজ পড়া দরকার, জানতাম না-বুঝতাম না। শুধু সাইদী সাহেবের মাহফিল শুনেই আজ আমি পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, কুরআন শিখেছি এক হুজুরের কাছে, এই দাড়ি রেখেছি। সাইদীর কথা শুনলেই আমার শরীরের পশম দাঁড়িয়ে যায়। এই দেখুন দেখুন। আমি সত্যি দেখলাম তাই ঘটেছে। আমার বাড়িতে সবাই আওয়ামীলীগকেই ভোট দেয়। হাসিনা যদি সাইদীকে ফাঁসি দেয় তাইলে আমি আমার বাড়ির সব ভোট নষ্ট করে দিব।
আমি বললাম, সাইদীকে এত ভালবাসেন তাইলে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপনি কোন কাজ করেন না কেন? এই যেমন অনেকে মিছিল মিটিং করছে।
আমিতো ওনাকে ওদের মত করে ভালবাসি না। আমি ওনাকে আমার মত ভালবাসি তাই আমি ওদের সাথে মিছিল করব কেন? আমি নিজে নিজে কাজ করি। রাস্তাঘাটে, চায়ের দোকানে সবার সাথে ওনার পক্ষে কথা বলি যাতে সবাই ওনার ফাঁসির রায় হলে শেখ হাসিনা কে ঘৃণা করে।
আমি তার আবেগ কে শ্রদ্ধা না করে পারলাম না।
ভক্ত-৩
এই ভক্তকে আমি নিজ চোখে দেখিনি। আমার এক বন্ধুর মুখে শোনা। আমার পিরোজপুরের সাইদীর এলাকায় থাকা এক বন্ধুর মুখে শোনা। আমার বন্ধুর পাশে বাড়ির ঘটনা। হিন্দু দম্পতি। তাদের বিয়ের সময় মাওলানা সাইদী নাকি উপস্থিত হয়েছিলেন আকস্মিক ভাবে। স্ত্রী মাওলানা সাইদীকে ডাকেন ঠাকুর বলে। আর স্বামী আওয়ামী ঘরনার রাজনীতিতে কিছুটা সক্রিয়। বাড়ীর সামনে দিয়ে মিছিল যাচ্ছে সাইদীর বিরুদ্ধে। স্বামী তখন খাবার খাচ্ছিলেন। মিছিলের শব্দ শুনেই তিনি খাওয়া বন্ধ করে দাঁড়িয়ে গেলেন। মিছিলে যাবেন। স্ত্রী তাকে বললেন, দেখ আমার ঠাকুরের বিরুদ্ধে তুমি যেওনা। তোমার ভালো হবে না। তুমি এখন যেতে পারবে না। স্বামীস্ত্রীতে লেগে গেল ধুন্ধুমার। শেষে একটু দেরী হওয়াতে স্বামী তাদের পুকুর পাড়ের ঝোপ ঝাড়ের মধ্যে দিয়েই দিলেন ছুট। ঝোপে ছিল ভেমরুল এর চাক। তার গারের ধাক্কায় সেটা গেল ভেঙ্গে। বেশ আর যায় কোথায়!! ভেমরুলের দল এক সাথে ওনাকে আক্রমন।
আমার বন্ধু নাকি ওনাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিল। ওনার স্ত্রী এখনো কান্নাকাটি করছেন এই বলে যে, ঠাকুরের অভিশাপেই এই ঘটনা ঘটেছে। ঠাকুরের কাছে গিয়ে ওনার স্বামী মাফ না চাইলে ওনার স্বামী ভাল হবে না।
আমি আবারও অবাক না হয়ে পারলাম না।
এইরকম হাজারো অন্ধ ভক্ত মাওলানা সাইদীর জন্য ঘরে ঘরে তাদের চোখের জল ফেলছেন। দোয়া করছেন। হাসিনা বুবু এরপর তুমি যদি আল্লাহর এই মাসুম বান্দাকে ভারতের কথায় এর বিচারের রায় দেওয়ার চেষ্টা কর তবে জানবে এই বাংলার লক্ষ কোটি হৃদয়ের ঘৃণা আর অভিশাপই তোমার ধ্বংস ডেকে আনবে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






