খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শহীদুর রহমান খান দায়িত্ব পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের ছেলে, মেয়ে, শ্যালক-শ্যালিকার ছেলে ও ভাতিজাকে নিয়োগ দিয়েছেন।
নিজ স্ত্রীকেও অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছিলেন।
এইসব ঘটনা এদেশে কেন ঘটে?
আমাদের সমাজে প্রবাদের মতো একটা কথা চালু আছে, বংশের মধ্যে একটা জায়গামত যাইতে পারলে চৌদ্দগুষ্ঠীর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয় না।
এই রকম চালু কথাগুলো সমাজের সর্বস্তরের মানুষ বিশ্বাস করে। এবং বাস্তবায়ন করার চেষ্টা অব্যাহত রাখে। আর এ চেষ্টা অবশ্যই খারাপভাবে করে।
এর কারণগুলো কী?
আমাদের সমাজে বেশিরভাগ পরিবারগুলো আর্থিকভাবে এভারেজ লাইনে থাকলেও তারা নৈতিকভাবে বিলো এভারেজ।
একটা সমাজ যখন নৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে তখন সামাজিক বাস্তুসংস্থান ভেঙ্গে পড়ে।
গত এক বা দুই প্রজন্মের অনেক সিনিয়ররা নৈতিকতাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে তারা আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়ে।
তাদের উত্তরসূরীরা এর কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখে যে তার বাবা বা দাদার সৎ জীবন যাপন এই পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ।
অন্যদিকে যারা সমান্তরাল সময়ে বিভিন্ন কারসাজিমূলক পন্থা অবলম্বন করেছে সমাজ তাদেরকে বন্ধনায় গীত করেছে। সৎ জীবিকাকে সমাজ বা রাষ্ট্র কোনভাবেই উৎসাহিত করেনি।
এই নৈতিক মানুষগুলো অবহেলা এবং চরম বঞ্চনার স্বীকার হয়েছে।
অন্যদিকে অনৈতিকার জয়জয়কার।
এইসব অভিজ্ঞতার আলোকে প্রজন্ম আর কোনো ঝুঁকি নিতে চায়নি।
যে ঝুঁকি তার দাদা বা বাবা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে, সে ঝুঁকি সে কেন নিবে?
তাই নিজে ক্ষমতা বা পদ বা সুযোগ পেয়ে সর্বপ্রথম নিজের পরিবারের ভিত শক্ত করার কাজে নেমে পড়ে।
বরং এটাই যৌক্তিক! কারণ সে অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছে যারা এই সুযোগ পেয়েও কাজে লাগায়নি তারা জনমের ঠকা ঠকেছে।
তাছাড়া আরও একটা প্রকট কারণ বিদ্যমান। তা হলো, আমাদের সমাজে এই সব পদ বা ক্ষমতা বা সুযোগ স্বয়ংক্রিয় পন্থায় আসে না।
এখানে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গের ক্ষেত্রবিশেষে বিশাল অংকের বিনিয়োগও লাগে।
তাই বিনিয়োগ তুলে লাভের খাতা খুলতে হয় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।
একজন বিনিয়োগকারী লাভের প্রতিটি সম্ভাবনাকেই কাজে লাগাবে, এটাই স্বাভাবিক।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:২৭