somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুভ জন্মদিন কবি সুকুমার রায়

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি খুব ভালো কবিতা বানাতে পারি। খুব সহজ। বাংলা গদ্য বই এর একটা পাতা র‍্যান্ডমলি ছিড়ে নিয়ে তা মাঝ বরাবর ফেড়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার ডান হাতে একটা কবিতা বাম হাতে একটা কবিতা। ব্যাস একটার টাইটেল দিয়ে দিন 'মাহিনের গরুগুলি', আর একটার টাইটেল হবে 'মাহিনের মুরগীগুলি'। আমরা সবাই জানি গদ্য লেখা হয় চওড়া ডিমাই সাইজের পেজে আর কবিতা লেখা হয় চিপা ফর্দের মত।

এতদিন জানতাম দেশে নাকি কাক এবং কবির সংখ্যা প্রায় সমান কিন্তু আসলে এদের সংখ্যা এখন ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসের চেয়েও বেশি। ছন্দের কবিদের চেয়েও ভাবের কবি, উদাস কবি, আউলা কবি, বাউলা কবি, আবেগী কবি, ইয়াবা কবি, গাঞ্জা কবি, আর সবচেয়ে বেশি দেখা যায় প্রেমিক কবি, বিশ্বপ্রেমিক কবি।

এই সময়ের বেশির ভাগ কবিদের সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ইনাদের প্রায়ই সব সময় ফরটি ফাইভ ডিগ্রী এংগেলে ঘাড় বাঁকা করে উদাস হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়। ইনারা ফটো তোলার পোজ দিলেও আকাশের দিকে তাকিয়ে পোজ দেয়। একবার যদি উদাস হয়ে ইনাদের ঘাড় বাকা হয়ে আকাশের দিকে উঠেছে তো খবরই আছে। তখন আকাশ থেকে অনবরত ঠাডার মত করে এদের মাথায় কবিতা নিক্ষিপ্ত হয়। তখন কারুর বাপের সাধ্য নেই যে তার ঘাড় সোজা করে। একমাত্র তার ধ্যান ভেংগে ঘাড় জিরো ডিগ্রীতে আনতে পারে কোনো সুললিত নারী কন্ঠের আহবান যে কিনা কবির আউলা ঝাউলা গাঞ্জামি দেখে প্রেমে পড়ে গেছে। বাই দা ওয়ে এদের হৃদয় কিন্তু বিশাল। এক নারী দিয়ে এদের কবিতা ফুরোয় না। তামাম দুনিয়ার তাবত নারীকুলের জন্য ইনাদের হৃদয়ে জায়গা থাকে। একজনের চুল, চোখ, নাক, কান, গলা সহ ফুল বডি নিয়া কবিতা লেখা শেষ হয়ে গেলে আবার ঘাড় উদাস হয়ে যথারীতি ফরটি ফাইভ ডিগ্রী এংেলে উপরে উঠে যায় যতক্ষন না নতুন কোনো নারীকন্ঠ তার ধ্যান ভাংগায়। এভাবে চলতেই থাকে

এই সব কাউয়া কবিদের কেউ কেউ আছেন ফেসবুক স্ট্যাটাসে পাঁচ মিনিট পর পর হেচকি উঠার মত করে কবিতা লেখেন। কারোর ক্ষমতা নেই এই সব কবিতার সুর বা মর্ম উদ্ধার করার। সেখানে থাকে শুধুই গাঞ্জা খাওয়া আবেগ। আসলে হইছে কি এরা নতুন প্রেমে পড়ছে। ভালো মন্দ খেলে যেমন ঘন্টা দুয়েক পরে পেটে মোচড় দিয়ে ওঠে এবং টয়লেটে গিয়ে বর্জ্য নিষ্কাশন করে আসতে হয় তেমনই প্রেমিক যুগল যখন বিকেল বেলায় পার্কের চিপায় বসে প্রেমের সুধা পান করেন, প্রেমের কমলা আপেল(?!) খান তারপর সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে এদের পেটও মোচড় দিয়ে ওঠে
এবং তা প্রেমের পাতলা হাগু হয়ে কিছুক্ষন পর পর ফেসবুক স্ট্যাটাসে কবিতা হয়ে নির্গত হয়।

এখনকার মডার্ন কবিদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তাদের কবিতা হতে হবে দুর্বোধ্য দাত ভাংগা। কবিতার ছন্দ বাইর করতে গিয়ে পাঠকের কষা হাগুও বের হয়ে যায় মাগার ছন্দ মেলে না। ছন্দ বাইর করতে পারলে পড় না পারলে মুড়ি খাউ গিয়া। আমার লেখা পড়ে পন্ডিতেরা মাথার টিকিখানা দুলিয়ে বলবেন আছে আছে আধুনিক কবিতায় ছন্দ আছে কিন্তু তা খুজে নিতে জানতে হয়।
মানে অনলি কবি সমাজ ইজ রিয়েল বাকি সব মুর্খ।

আমি বলি গানের লিরিক্স লেখা হয়। তাতে সুরকার সুর দেওয়ার আগে that doesn't make any sence.
কবিতা হতে হবে এমন যার ছন্দ আম পাঠকের হৃদয়ে আছে। দয়া করে কবিতার লিরিক্স লিখে এর বোঝা পাঠকের মাথায় চাপিয়ে দেবেন না।

আমি বলি কি ফরটি ফাইভ ডিগ্রি এংগেলে আকাশের দিকে না তাকিয়ে বরং ঘাড় নিচু করে হাটুর সমান আন্ডা বাচ্চা শিশুদের দেকে একটু তাকান। তাহলেই কবিতায় সঠিক ছন্দ আসবে।
আমি এখন আপনাদের ঠিক এই রকম কয়েক লাইন কবিতা শোনাব.......

"ভয় পেও না ভয় পেও না, তোমায় আমি মারব না
সত্যি বলি কুস্তি করে তোমার সাথে পারব না
মনটা আমার বড্ড নরম হাড়ে আমার রাগটি নেই
তোমায় আমি চিবিয়ে খাব এমন আমার সাধ্যি নেই
মাথায় আমার শিং দেখে ভাই ভয় পেয়েছ কতই না
জানো না মোর মাথায় ব্যারাম?কাউকে আমি গুতোই না
এসো এসো গর্তে এসো বাস করে যাও চারটি দিন
আদর করে শিকেয় তুলে রখব তোমায় রাত্রি দিন
হাতে আমার মুগুর আছে তাই কি হেথায় থাকবে না
মুগুর আমার হাল্কা এমন মারলে তোমায় লাগবে না
অভয় দিচ্ছি শুনছ না যে? ধরব নাকি ঠ্যাং দুটা?
বসলে তোমার মুন্ডু চেপে বুঝবে তখন কান্ড টা
আমি আছি গিন্নি আছি আছেন আমার নয় ছেলে
সবাই মিলে কামড়ে দেব মিথ্যে অমন ভয় পেলে"

এই রকম কবিতা যদি ফেসবুক ওয়ালে কেউ লেখে তা দেখে আধুনিক ফেসবুকিও কবিগন হয়ত কমেন্ট করবেন 'বালের কবিতা'

কবিতাটি আমার প্রিয় কবি সুকুমার রায়ের লেখা যিনি এরকম অসংখ্য কবিতা দিয়ে আমাদের শৈশবকে করে তুলেছিলেন স্বপ্নময়। আবোল তাবোলের মত নন্সেন্স রাইম এবং সেই সাথে প্রাসংগিক ছবি সমৃদ্ধ কবিতাগুলো এক কথায় ছিল অসাধারন।

আজ ৩০ অক্টোবর কবি সুকুমার রায়ের জন্মদিন।
happy birthday

যুগ যুগ ধরে কবি সুকুমার এবং তার কবিতা অমর থাকুক শিশু থেকে শুরু করে যুবক বৃদ্ধ সবার হৃদয়ে
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:০৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×