অত্যন্ত দুঃখ-বেদনা ভারাক্রান্ত মনে এবং তীব্র ক্ষোভ নিয়েই লিখতে হচ্ছে।
আল-হামদুলিল্লাহ আমি বাবা হতে যাচ্ছি। কিন্তু সুখবরটা আমি যতটা সহজে দিলাম বাস্তবতাটা কি আসলেই এতোটা মধুর?????
আমাদের এলাকা (যেখানে আমরা বসবাস করি)এবং শহরের (ঢাকা) রাস্তাঘাট অত্যন্ত নাজুক, ভাঙ্গা এবং ছোট বড় অনেক গর্তে ভরা। আমাদের চলাফেরায় অনেক কষ্ট হলেও এটা নাহয় মেনেই নিলাম। কিন্তু আমার অনাগত সন্তানের কি অপরাধ??? আমার বিয়ের পরে আমার স্ত্রীর তিনটি সন্তান মিসক্যারেজ হয়েছে শুধু ভাঙ্গাচুড়া রাস্তার জন্য। কারন তাকে প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়েই অফিসে যাতায়াত করতে হতো। অবশেষে ডাক্তারের পরামর্শে তাকে এতো ভালো একটা চাকরী ছেড়ে দিতে হয়েছে। যাইহোক, অবশেষে আল্লাহপাকের আশেষ মেহেরবানীতে আমরা যখন নতুন প্রজন্মের অপেক্ষায়, তখন তার সুষ্ঠু বেড়ে উঠা এবং পৃথিবীতে আগমন উপলক্ষে আমাদের নিয়মিতই ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। কিন্তু সেদিন ডাক্তারি চেকআপ করে বাড়ি আসার পথে এই রাস্তার জন্যই তার "প্লসেন্টা" অত্যন্ত নীচে নেমে যায়। অগত্যা নিরুপায় হয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।
আমি কর্তৃপক্ষকে বলতে চাই, আমার ১ মাস চাকুরী করার পরে বেতনের টাকা আমার হাতে আসার আগেই ইনকামট্যাক্স বাবদ একটা বিশাল টাকা কেটে নেয়া হয়। আমাদের নিজেদের বাড়ি হওয়ায় সিটি করপোরেশন ট্যাক্স ও দিতে হয়। তারউপর ময়লা পরিস্কারের জন্য অতিরিক্ত চাঁদা। এসব দিয়েও যদি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিয়ে এতো দুর্ভাবনায় থাকতে হয়, তবে এতো এতো ট্যাক্স আর চাঁদা নেয়া বন্ধ করে দিন।
স্ত্রী এবং মাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে রিলিজ হয়ে বাড়িতে আসার সময় কোন সিএনজি তো পাওয়াই যাচ্ছিল না। কেউ আসতে রাজি নয় দূরত্ব কিছুটা কম হওয়ায়। অবশেষে একটি সিএনজি পেলাম যার ভাড়া ১৭০ টাকা আর আমি বাসায় এসে দেখলাম সিএনজির মিটারে উঠেছে মাত্র ৩৩ টাকা। সিএনজি চালকদের এই অত্যাচার এবং অবিচারের বিচারও আমি কার কাছে দিব বলতে পারেন????
আরো একটি বিরাট সমস্যা হচ্ছে রাস্তায় গাড়ি এবং বাইকগুলোর হাইড্রলিক ভেঁপু। এলাকার রাস্তাটা খুব চওড়া নয়। কিন্তু বাইক চালকরা এতো দ্রুত আর এতো জোরে ভেঁপু বাজাতে বাজাতে যায় যে অত্যন্ত অসুস্থ বোধ করি। তারপর রাস্তায় গেলে তো বাস-ট্রাকগুলোর অনবরত ভেঁপু বাজতেই থাকে। সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার হচ্ছে হঠাৎ করে পিছন দিক থেকে এসে ভেঁপু বাজানোটা। আর রাস্তার ধুলাবালির কথা নাইবা বললাম। বাললেই বা কে শুনবে আমাদের এই দুঃখের কথা????