আজকে সকালে ফেসবুক ঘাঁটতে গিয়া পড়লাম, ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) পালন করা নাকি ফরয! হাসব না কাদবো বুঝতে পারছিলাম না, তাই তাদের দেওয়া লিংকে গেলাম। গিয়া দেখি এলাহী কারবার। আল্লাহ তায়ালা সকল উম্মতকে নাকি ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) পালন করতে বলেছেন এবং যারা পালন করবেনা, তাদেরকে কঠিন শাস্তির হুমকী দিয়েছেন।
আস্তে, খাড়াইয়া যাইয়েন না, আগে পুরাটা পড়েন। এই লিংকে বিস্তারিত আছে, ঈদে মিলাদুন্নবী কেন উম্মতের উপর ফরজ।
কিন্তু সমস্যা হইল, এই লিংকে সূরা মায়েদার যে আয়াতের অর্থ দেওয়া আছে, তা যে তাদের মনগড়া অর্থ, তা ভাষার দিকে লক্ষ্য করলেই বুঝা যাবে। আরও সুন্দরভাবে বুঝতে ইসলামী ফাউন্ডেশন অনুবাদ করা সহজ বাংলা কুরআন বইয়ে সূরা মায়েদার ১১৪-১১৫ নং আয়াত পড়েন, তাইলেই বুঝবেন। আরও শিওর হবার জন্য দেখতে পারেন মাআরেফুল কুরআন, তাফসীর ইবনে কাসীর বা বিচারপতি হাবীবুর রহমান অনুদিত সরল বাংলা কুরআন। কোনটির সাথেই রাজারবাগীদের দেওয়া ঐ আয়াতের অনুবাদ মেলেনা। ঠিক একই কথা সূরা ইউনুসের ৫৮ নং আয়াতের ক্ষেত্রেও খাটে।
আসলে বাংলা ভাষাভাষীদেরকে কোরআনের একটা আয়াত আর নীচে মনগড়া একটা অনুবাদ দিয়ে সহজেই ফাঁসানো যায়। কিছুদিন আগে এক নাস্তিক ব্লগার কুরআন বিশারদ সেজে সূরা নিসার একটা আয়াতের মনগড়া অর্থ করে মুতা বিবাহ জায়েজ করার দুঃসাহস দেখিয়েছিল। কিন্তু আম-ব্লগারদের সম্মিলিত জুতাপেটার মুখে সে আর কোনদিন ব্লগমুখো হয়নি।
এইসব ভন্ড, প্রতারক পীর ও মাজার ব্যবসায়ীদের হাত থেকে বাঁচতে হলে তাই ঘরে ঘরে ব্যাপকভাবে কোরআন-হাদীস চর্চার কোন বিকল্প নেই। আমার বাবা-মা আমাকে কোরআন শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন বলেই আমি এইসব ভন্ডদেরকে চিহ্নিত করতে পেরেছি। এবার আপনার পালা।