বাংলাদেশ আল্লাহ্র রহমতে ছাওয়া একটা শান্ত-শীতল সবুজ দেশ। ৩৬০ আউলিয়া এবং অসংখ্য অলি-আল্লাহ্র তসবীহ-তাহলীতে এদেশ আল্লাহ্র রহমতের পুণ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। চারশ বছর আগেও এদেশের অধিকাংশ মানুষ ছিল হয় হিন্দু, না হয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। যেটাই হোক কেন, ধর্মীয় কুসংস্কারে আগাগোড়া ঢাকা ছিল এদেশের সমাজজীবন। জাত-পাতের ব্যবধান, সতীদাহ ইত্যাদি অবমাননাকর কর্মকাণ্ড মানুষের প্রাত্যহিক জীবনকে একেবারে বিষিয়ে তুলেছিল। এই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে মুক্ত করতেই এদেশে আগমন ঘটে বিখ্যাত সব অলি-আউলিয়া ও পীর মুর্শিদের। তারা অত্যাচারী রাজা-রাজরাদের হাত থেকে অসহায় জনসাধারণকে মুক্ত করে তাদেরকে নিয়ে আসেন ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে। সেই থেকে আল্লাহ্র অশেষ রহমতের শামিয়ানার নিচে এদেশের মানুষ সুখে শান্তিতেই বসবাস করে আসছিল। খুব সহসা এদেশের মানুষের শান্তি নষ্ট করে কেউ পার পায়নি। অত্যাচারী ব্রিটিশ আর অসভ্য পাকিস্তানিদেরকে এদেশের মাটি থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল খুব অপমানজনকভাবেই।
কিন্তু শয়তান মানুষের সুখ সহ্য করতে পারেনা। যে এলাকার মানুষ একটু সুখ-শান্তির দেখা পেয়ে আল্লাহ্র শোকর-গোজারিতে মনোনিবেশ করতে উদ্যত হয়, ওমনি তাঁর ঘাড়ে একটা অশান্তির বোঝা চাপাতে উদ্যত হয়। বাংলাদেশে এই বোঝার নাম আওয়ামী লীগ। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ সংগঠন এবং পরিচালনায় এদের বিন্দুমাত্র কোন ভূমিকা নেই (পড়ুন মুক্তিযুদ্ধের উপ-অধিনায়ক এ কে খোন্দকারের ভেতরে বাইরে ১৯৭১) কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের তথাকথিত চেতনার একক ডীলারশীপ নিয়ে এক অন্যায় ব্যবসা শুরু করে দেয়। এই ব্যবসা করার শুরুতেই তারা প্রতিপক্ষ সমস্ত রাজনৈতিক দলকে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত ক্রেডিট একা নিজেরা নিয়ে নেয়। সমস্ত মিডিয়া এবং দেশের প্রধান বুদ্ধিজীবীদের হাত করে গোয়েবলসিয় পদ্ধতিতে এই থিওরী প্রচার করতে শুরু করে। এই প্রচার ভঙ্গি এতটাই আক্রমণাত্মক, যে তাদের মতামতের বিরোধিতা করা সহসা কারো পক্ষে সম্ভব হয়না তা যত বড় শক্তিই হোক না কেন!
এই একটিমাত্র শক্তি, যাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলা হয়, তাঁর ঘাড়ে পা দিয়ে এই দলটি এখন রাষ্ট্রক্ষমতায়। আরও পরিষ্কার করে বললে বলা চলে তারা এখন রাষ্ট্রের মালিকানা সত্ত্ব ভোগ করছে। রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে শতভাগ ব্যবহার করছে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক এবং মানবিক অধিকার হরণে। সে বিষয়ে আর বিস্তারিত বললাম না। বিশ্বের সকল রাষ্ট্রসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো সরকারের এই আচরণের অব্যাহতভাবে নিন্দা জানিয়ে আসছে, কিন্তু সরকার তা কানে তোলার কোনরকম প্রয়োজন অনুভব করছেনা। কেন? কারণ তাঁর পেছনে আছে দৈবশক্তি। কি সেই দৈবশক্তি? এর উত্তর হচ্ছে একটাই - ভারত ও তার সরকার।
বিশ্বে মাত্র দুটি দেশ আছে, যাদের সাথে তাদের কোন প্রতিবেশী দেশের ভালো সম্পর্ক নাই - এদের একটা হল ইসরাইল আর একটা হল ভারত। ভারতে যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, দিবানিশি তাদের চিন্তা একটাই - কিভাবে প্রতিবেশী দেশের শান্তি নষ্ট করা যায়। এজনে তারা তাদের পছন্দের দল হিসেবে এমন কোন রাজনৈতিক দলকে বেছে নেয়, যারা সেই দেশের মানুষের শান্তি নষ্ট করতে সবচেয়ে দক্ষ। বাংলাদেশে এরকম দল একটাই আছে - আওয়ামী লীগ।