somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাহাড়ে সেনা বিতর্ক!

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পর্যটন স্পট সাজেক ডেভেলপ করেছে সেনাবাহিনী।


পাহাড় কিম্বা সমতলের মানুষ --- আমরা সবাই বাংলাদেশী। এটাই আমাদের আত্ম পরিচয়। ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতিগতভাবে আমাদের মধ্যে ভিন্নতা আছে, বৈচিত্র আছে ; এটাই আমাদের দেশের সৌন্দর্য। এ বিশ্বাস কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সবারই আছে যে, আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিজয় অর্জন করেছি--- সমতার সমাজ-রাষ্ট্র নির্মাণ করতে। সে লক্ষ্যেই সব শ্রেণীপেশার মানুষ যুথবদ্ধ।

তবুও সময় অসময়ে জাতিগত বিষয়কে সামনে রেখে সন্দেহ! এটা নিয়ে বিস্তর আলাপের জায়গা থাকতে পারে। কিন্তু দেশের এক দশমাংশ আয়াতনের পাহাড়ি জনপদে সেনা উপস্থিতি নিয়ে পাহাড়ি নেতাদের মধ্যে উষ্মা আছে। এ উষ্মার কারণ কেউ খোলাসা করেন না। সেখানে অপােরেশন উত্তরণ চলছে বলে, যে প্রসঙ্গ সন্তু লামরা উদ্ধৃত করে থাকেন, সেটি কী কার্যকর? আমার দেখা মতে কার্যকর নয়। তবুও পাহাড়ে সেনা উপস্থিতি নিয়ে বাঁকা প্রশ্ন দুঃখজনক।

বলে রাখি, আমি ব্যক্তিভাবে সব ধরণের নিপীড়নের বিপক্ষে। সেটি যে কোনো বাহিনীরই। কিন্তু দেশের সামরিক নীতি, নিরাপত্তা আয়োজনকে প্রশ্ন করতে পারি না। কিছু বিষয় তো এমন যেটা সরলীকরণ করা যায় না।

স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব প্রতিরক্ষা বাহিনীর। সে জন্য কোথায় ঘাঁটি গাঁড়তে হবে, সেটি নির্ধারণ করার দায়িত্বটা রাজনৈতিকের চেয়ে সামরক নীতির অংশ বলেই মানি। সে হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থাকবে কিনা--- সে সিদ্ধান্তটা আসলে সামরিক কৌশল ঠিক করা লোকদের উপরই ছেড়ে দেওয়া উচিৎ।

কিন্তু যারা প্রতিনিয়মত পাহাড়ে সেনা নিয়ে উসখুশ করেন, তারা আসলে কী বোঝাতে চান--- সেটি পরিষ্কার নয়।

দুর্গম পাহাড়ি জনপদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার যে কোনো ধরণের বাহিনীর সহায়তা নিতে পারে এবং সেটিই যৌক্তিক। কিন্তু পাহাড়ে সেনা উপস্থতি কেন থাকবে না! এর কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা কি?


সেনা সদস্যরা পাহাড়ে কী করেন--- তাদের না থাকার কারণ কি হতে পারে? এ সব প্রশ্ন সেখানকার সাধারণ পাহাড়িদের নেই বললেই চলে। তবে এটা নিয়ে বেশি সোচ্চার বেদিশেী ফান্ড প্রাপ্তরা। বিশেষত বেসরকারি সংস্থা ও নামকাওয়াস্তে গবেষক--- যাদের বেশির ভাগই একটা ইস্যু ধরে রেখে আলোচনায় থাকতে চান।

এক কল্পনা চাকমা অপহরণ অভিযোগ বাদে উল্লেখ করার মত গুরুতর অভিযোগও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নেই! বরং সম্প্রীতি রক্ষা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন আর অপরাধ দমনে তারা সেখানে বহু বছর ধরেই কাজ করছেন; এটা সবারই জানান। অপহরিত বহুমানুষকে উদ্ধারে সেনাবাহিনী সফল হয়েছে।

পাহাড়ি নেতাদের কারো কারো অভিযোগ--- সেনা বাহিনী পাহাড়ে বাঙালিদের সহায়তা করে! এ অভিযোগ যারা করেন, তাদের নিয়ে বাঙালিদের মনবেতর জীবন যাপন পরিদর্শন করলে-- এ অভিযোগ টিকবেনা ; আমি নিশ্চত করেই এটা বলছি। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি।

পাহাড়ি জনপদ আর সমতলের মধ্যে তফাৎটা কারো অজানা নয়। মায়নমারের সাথে আমাদের কয়েক দফা সীমান্ত সঙ্ঘাত হয়ে গেছে। দিন দিন সে ঝুঁকি বাড়ছে। সেভেন সিস্টারের সাথে আমারে সীমান্ত আছে। খাগড়াছড়িতে অর্ধশতাধিক কিলোমিটার সীমান্ত অরক্ষিত।এ রকম প্রেক্ষাপটে পাহাড়ে সেনা উপস্থিতি না থাকা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য প্রচণ্ড হুমকি।

তারপরেও চুক্তি মেনে ১৯৯৭ সালের পর থেকে নিয়মতই অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এটি রাষ্ট্র বেশ ঝুঁকি নিয়েই করছে; এতেও পাহাড়ি মানুষ নিয়ে ব্যবসা করা লোকরা অসন্তুষ্ট! এ অসন্তুষ্টি হয়তো তাদের ব্যক্তিগত সুবিধা হচ্ছে; সেটি দেশর নিরাপত্তাকে হুমকি রেখে---

পাহাড়ি ও বাঙালি দু'টো জাতি সত্ত্বা আলাদা হলেও জাতীয়তা অভিন্ন। রাজনৈতিকভাবেই দু'টো জাতি সত্ত্বার সঙ্কট নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রেখে, আস্থার সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, সেনা বিরোধীতা আর বাঙালি-পাহাড়ি বিরোধ জিইয়ে রেখে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়!


খবরের কাগজে ১১ ফেব্রুয়ারি জানলাম---পার্বত্য চুক্তির অংশ হিসাবে ইতোমধ্যে ২৩২টি অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প থেকে ১১৯টি ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১০ ফেব্রুয়ারি সংসদকে জানিয়েছেন, শান্তি চুক্তির আলোকে মোতায়েনরত সেনাবাহিনীর সব অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ছয়টি গ্যারিসন--- দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, রুমা ও আলীকদমে প্রত্যাবর্তনের বিধান রয়েছে।

তিনি জানিয়েছেন, গ্যারিসনের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নও চলমান। রুমা গ্যারিসনের ৯৯৭ একর ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। গ্যারিসনসমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন করে সময়োচিতভাবে অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের মাধ্যমে মোতায়েনরত সেনাবাহিনীকে নির্দিষ্ট গ্যারিসনসমূহে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৯
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×