
দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি ডোনাল্ডকে সর্বকালের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার হিসাবে গণ্য করা হয়। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশের পেসারদের উত্থান!
এখন যে বিশ্বের অনেক ক্রিকেট পরাশক্তি আমাদের নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে তার পেছনে এই মানুষটি, কারণ চিরকালের স্পিন নির্ভর এটাককে তিনি বদলে দিয়েছেন, আমাদের পাইপলাইনে যে পেসাররা আছেন বা বর্তমানে বাংলাদেশ দলে যারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এরা সবাই তাঁর হাতেই গড়া। আপনাদের মনে আছে নিশ্চয় ওটিস গিবসনের পর বাংলাদেশের বোলিং ইউনিটের দায়িত্ব পান অ্যালান ডোনাল্ড। এবং তারপর থেকেই পেসারদের নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ শুরু করেন তিনি এবং মাত্র কয়েকবছরের ব্যবধানে আমরা এখন একটি শক্তিশালী বোলিং ইউনিট! বাংলাদেশের শক্তির জায়গা ছিল স্পিন নির্ভর, সেখান থেকে তিনি বাংলাদেশকে ভিন্ন একটি উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
‘সাদা বিদ্যুৎ’ খ্যাত ডোনাল্ড ৩৩০টি টেস্ট উইকেট ও ২৭২টি ওয়ানডে উইকেট শিকার করেছেন। বাংলাদেশে দায়িত্ব নেবার আগে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলংকা ফাস্ট বোলিং স্পেশালিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন।
অ্যালান ডোনাল্ড এর নানা কার্যক্রম আমরা খেলা চলাকালীন দেখি। ফুটবলের কোচ বা সহকারী যারা থাকেন তারা সারাক্ষণ চিল্লাচ্ছে, নির্দেশনা দিচ্ছে এইগুলো দেখে আমরা অভ্যস্ত, কিন্তু ক্রিকেটে কোচ বা সহকারী বা বোলিং কোচের এমন দৌড়ঝাঁপ আমরা আগে দেখিনি কিন্তু বাংলাদেশের খেলা চলাকালীন অ্যালান ডোনাল্ডকে আমরা দেখি নানা মেজাজে।
তিনি গভীর মনোযোগ দিয়ে শিষ্যদের বোলিং দেখেন, দরকারে তৎক্ষণাৎ মাঠেই নানা দিক নির্দেশনা দিতে দেখা যায় তাঁকে। একজন ভালো বোলিং করলে তাঁর চোখে মুখে ফুটে উঠে তৃপ্তির ছায়া আবার কেউ যখন লাইন লেংথ উল্টাপাল্টা করে ফেলেন বা খেলার মেজাজের সংগে না গিয়ে ভুল করেন তখন তিনি সাথে সাথেই তাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা বা পরামর্শ প্রদান করেন, এইগুলো মাঠে দৃশ্যমান, আমরা টিভি পর্দাতেই দেখি। দল ও খেলোয়াড়দের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ বোঝার জন্য ছোট ছোট এই দৃশ্যগুলি চোখে আরাম দেয়। হাসান মাহমুদ, ইবাদত, শরিফুল, তাসকিন, মোস্তাফিজ এরা সবাই যেন তাঁর একান্ত অনুগত, এই শিষ্যদের প্রতি তাঁর রয়েছে গভীর আস্থা ও অনুরাগ।
কিছুদিন আগে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজে, বা ভারতের বিরুদ্ধে খেললে বা গতকাল আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ- খেয়াল করে দেখুন প্রতিটি ম্যাচে তাকে দেখা যায় সাইড-লাইনে বসে খেলা দেখছেন, মাঠের এ মাথা থেকে হেঁটে হেঁটে আরেকমাথায় গিয়ে প্লেয়ারদের সাথে কথা বলছেন। বোলিং ব্যাটিং ফিল্ডিং কোনোকিছুতে বাংলাদেশ খারাপ করলে তাঁর চেহারা বিমর্ষ হয়ে উঠে, আবার যখন কেউ ভালো কিছু করে তাঁর চেহারা সাথে সাথেই স্মিত হাসিতে ভরে উঠে।
কাজকে ভালোবেসে উনি যেভাবে আমাদের দেশের বোলিং নিয়ে নিবেদিতভাবে কাজ করছেন এর তুলনা হয় না। একজন কিংবদন্তি ও সর্বকালের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলারকে আমরা বোলিং কোচ হিসেবে পেয়েছি এটা আমাদের জন্য ভাগ্যের। তাঁর হাত ধরেই আমরা শিখছি প্রতিপক্ষকে পর্যদুস্ত করার রণকৌশল- এ আনন্দের।
তাঁকে স্যালুট জানাই।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:২৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




