কুযুক্তির প্রগমনটা এরকম -
বেহেস্ত নামক গ্রহের কোরে আছে নদী >>> মূল লেখক ২৮ বার উল্লেখ করেছেন >>> অনুবাদকের মতে কোরে নদী থাকাটা একটা গুরুত্বপূর্ণ Amenity >>> দুনিয়ার পেটের ভেতর অনেক তাপমাত্রা >>> অনুবাদকের মতে দুনিয়ার পেটের ভেতরকার এই অসহনীয় তীব্র তাপের বিপরীতেই বেহেস্ত নামক গ্রহের পেটে বেহেস্তবাসীর জন্য Amenity হিসেবে আছে নদী >>> যেহেতু সেখানে Amenity হিসেবে নদী আছে সেহেতু দুনিয়ার পেটে যে নদী নেই বরং সেটা যে ৭২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম তা মূল লেখক জানতেন ৬০০ সালেই।
পাঠসূত্রঃ বেহেশত নামের গ্রহ , অদ্ভুত Amenity , কুরআন , Geology
১. পোস্ট থেকে আমরা এটা জানতে পারলাম যে বেহেস্তের তলায় নদী আছে। কতটা তলায় আছে? “সাইন্টিফিক অনুবাদ” থেকে জানা যায় পৃথিবীর যত গভীরে তাপমাত্রা ৭২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বেহেস্ত নামের গ্রহের তেমনই গভীরে ওয়াটার স্ট্রিম, থুক্কু নদী বয়ে যাচ্ছে।
২. কেন বয়ে যাচ্ছে? এটা বোঝাবার জন্য যে দুনিয়ার পেটে যে কড়া গরম, বেহেস্তের পেটের মধ্যে ঠিক তেমনই ঠান্ডা আরামদায়ক! ইন্ডিয়ান আম না কিনে দেশি আম কেনার জন্য যে অনুপ্রেরণা আমের দোকানদার দেয় ঠিক তেমনই অনুপ্রেরণা দেয়া হয়েছে দুনিয়াকে বাদ দিয়ে বেহেস্তকে বেছে নেবার জন্য, অনুবাদকের ভাষ্য মতে।
৩. “সাইন্টিফিক অনুবাদের” সবচেয়ে কড়া জজবার দেখা মেলে একথায় যে, যেহেতু বেহেস্তের তলায় নদী এবং দুনিয়ার কোরের তাপমাত্রা ৭২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং যেহেতু দুনিয়ার চাইতে বেহেস্ত ভাল সেটা বোঝাবার চেষ্টা করা হয়েছে সেহেতু মূল লেখক জানতেন যে দুনিয়ার পেটে তাপমাত্রা ৭২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তাও সেটা ৬০০ সালে! “সাইন্টিফিক্যালি প্রমাণিত”!
মূল লেখেকের কৃতিত্ব থাক আর না থাক, অনুবাদকের “সাইন্টিফিক অনুবাদ” কে আমার সালাম!
৪. “তলদেশে নদী” কে “সাইন্টিফিক অনুবাদ” এর কিবোর্ড ধাক্কিয়ে একেবারে ঠেলে নিয়ে গিয়েছে গ্রহের কোরে! এত জোরে ঠেলা দেয়ার কি দরকার ছিলো? বেহেস্তবাসীদের কী বেহেস্ত নামক গ্রহের পেটের মধ্যে থাকা লাগবে? “তাদের সারফেসে থাকতে দেয়া হবে না, থাকতে দেয়া হবে কোরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত নদীর পাশে” - মূল লেখক কি এরকম কিছু লিখেছেন বা ইংগিত দিয়েছেন? যদি না দিয়ে থাকেন তাহলে কেন অনুবাদক(?) বেহেস্ত নামক গ্রহের(?) কোরে নদী উৎপন্ন করেছেন, মূল লেখকের দোহাই দিয়ে? তলদেশ মানে কত তলায়? একেবারে কোরে!
৫. না, বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য নদীকে কোরে পাঠানো হয়নি। পাঠানো হয়েছে একারণে যে বেহেস্তের নদীকে যদি ঠেলে বেহেস্তের কোরে পাঠিয়ে দেয়া না যায় তাহলে পৃথিবীর কোরের সাথে তার তুলনা করে, কোরের নদীকে Amenity আখ্যা দেয়া যায়না। ফলে সেই Amenity (?) এর বিপরীতে দুনিয়ার পেটের তাপমাত্রা যে ৭২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস সে প্রসঙ্গ ধরে এগিয়ে গিয়ে বেহেস্ত বর্ণনাকারীর উপর এ জ্ঞান “সাইন্টিফিকালি” চাপিয়ে দেয়া যায়না যে, তিনি ৬০০ সালেই জানতেন দুনিয়ার পেট ৭২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম!
“কোর” ট্যাগের সাথে ম্যাচিং ছবি আর এক গাদা ইংরেজির ছড়াছড়ি কী কোন প্রভাব রাখতে পারে এমন অন্তঃসারশূণ্য ব্যাখ্যার প্রতিষ্ঠায়! একবারে “গাছের পাতা” ডায়লগটা দিয়ে দিলেই তো মিটে যায়। কেন খামখা এত সাইন্টিফিক অনুবাদের কষ্ট করা!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৬:৫৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




