ইহুদি, খৃষ্টান, মুসলমান, বৌদ্ধ, নাস্তিক, নির্ধার্মীক সবার মৃতদেহের একই পরিণতি – প্রকৃতিতে বিলীন হয়ে যাওয়া সে দাহ হোক, কবর হোক অথবা সলিল সমাধি। যারা কবরে যাবে সে মুসলমান হোক আর মুসলমানের ঘরে জন্ম নেয়া নাস্তিক/নির্ধার্মীক হোক পরিণতি একটাই – মাটির তলায় পোকায় খাবে, পঁচবে, গলবে, মিশে যাবে মাটিতে।
মিশরের ফারাদেরও কবর হতো। যে ফারাওদের বিরুদ্ধে জিতে মুসা নবী ইহুদি ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেই ইহুদি ধর্মও তো কবর দেয় তার সমাজের মানুষের। কবর দেয়া প্রথার মালিক কে? কার কপিরাইট? ফারাওদের?
ইহুদি ধর্ম খৃষ্টান ধর্মের আগে এসেছে। খৃষ্টানরা যে কবর দেয় তাতে কী ইহুদিদের ওজর আপত্তির কোন সুযোগ আছে? ইহুদিরা কী এই দাবী করতে পারে যে তাদের ধর্মের সাথে দ্বিমত পোষণকারীদের কবর হতে দেয়া যাবেনা?
লাশের গোসল ইহুদি ধর্মেও হয়। খৃষ্টান ধর্মেরও পরে আসা ইসলামিস্টদের লাশের গোসল কী তাতে ঠেকে আছে? ইহুদিরা যদি এই দাবী করে যে যারা তাদেরকে অভিশপ্ত বলে মনে করে তাদের লাশের গোসল-দাফন দেয়া যাবেনা, সেটা কী মেনে নিতে হবে? যারা নিজেরা সারা জীবন ইহুদিদের অভিশপ্ত বলেছে, তারা কেন নিজেদের ডকট্রিনের লোকদের লাশ ইহুদিদের মত গোসল দিয়ে দাফন করে?
"ধর্মীয় রীতিতে দাফন" বলতে যেসব কাজগুলোকে বোঝায় সেগুলোর মালিক কি কোন একক ধর্ম নাকি ডকট্রিনগুলো সমাজ থেকে প্রয়োজন মত সেগুলোকে আত্মীকরণ করেছে?
ইসলামী রীতিতে লাশ কবর দেয়ার স্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় খাটিয়ার চার প্রান্ত চার জন কাঁধে করে নিয়ে চলে। হিন্দু ধর্মেও তা-ই হয় শ্মশানঘাটে নেয়ার সময়। হিন্দু ধর্মও ইসলামের আগে এসেছে। তাহলে কি খাটিয়ায় করে লাশ কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার প্রথার মালিক হিন্দু ধর্ম?
আর বাকী থাকলো জানাজার নামাজ। যে চলে গিয়েছে সে গিয়েছে। যারা বেচে আছে এটা তাদের প্রয়োজন যে তারা তাদের আল্লাহর কাছে কিছু চাইবে কী চাইবে না। মৃতের শুভাকাঙ্খীরা যদি জানাযার নামায পড়তে চায় পড়ুক। যদি গীর্জায় ঘন্টা বাজাতে চায় বাজাক। যদি কালীর সামনে ষষ্ঠাঙ্গে প্রণাম করতে চায় করুক। যে চলে গিয়েছে, তার আর কিছুতেই কিছু যায় আসেনা। যারা বেচে আছে নামায, পূজা, ঘন্টা বাজানোর প্রয়োজন তাদের।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




