somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাষ্টমারের সাথে সুসম্পর্ক গড়ার একটা উপায়! - আমার অভিজ্ঞতা

২৯ শে মে, ২০২২ দুপুর ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য কাষ্টমার দরকার। আর কাষ্টমারের সাথে সুসম্পর্ক থাকা মানেই ব্যবসায়ে উন্নয়নের সম্ভাবনা।



২০১৩ সালে আমি হঠাৎই একটা প্রতিষ্ঠান থেকে অফার পাই, সেটা মূলত মার্কেটিং এবং কাষ্টমার সাপোর্ট-রিলেশন টিমের ম্যানেজার হিসাবে। এই সেক্টরে আমার ধারণা প্রায় শুন্য।

কম্পানির মালিক আমার পরিচিত, আমরা বিভিন্ন জায়গায় সেমিনার করে বেড়াই এক সাথে। সেখান থেকেই মূলত পরিচয়। আমি বিভিন্ন সেমিনারে কিছু গোটকা ট্যাবলেট দিতাম (যেটা না দিলে পাবলিক ধরে রাখা যায় না আরকি); আর উনি মনে করে বসলেন যে আমি মার্কেটিং এবং কাষ্টমার রিলেশনে খুব ভালো কিছু করতে পারবো। আগেই বলে রাখি, বিবিএ-এমবিএ করেছি ফাইন্যান্স মেজরে। মার্কেটিংটা মাইনর ছিলোও না। তবে আমি মার্কেটিং জিনিষটা খুব পছন্দ করি। চরম ডায়নামিক একটা বিষয়।

যাই হোক, প্রতিষ্ঠানের মূল কাজ হচ্ছে পুশ সেল। বিভিন্ন কম্পানির প্রোডাক্ট তারা মূলত ফোন করে পুশ সেল এর চেষ্টা করে। কাষ্টমার সাপোর্ট টিম এর সাথে একটা মিটিং করলাম। সবাই চরম বিরক্ত! লোকে খালি গালি দেয়। এখানে খুব বেশী কিছু করার ছিলো না। তবে তাদের বেশ কয়েকজনের কথা বলা অবজারভ করলাম।

প্রতিষ্ঠান ছোট হলেও এর মধ্যে সম্ভাবনা বড় হিসাবেই দেখতে পেলাম। দরকার চরম মাত্রায় ফাইন টিউনিং। অনেক পদক্ষেপই নিয়েছিলাম। তার মধ্যে মাত্র একটার কথা বলছি।

কাষ্টমারকে ফোন দিলে অনেক সময়ই কাষ্টমার জানায় যে সে কোন না কোন ঝামেলায় আছে। কখনও বাচ্চা অসুস্থ, কখনও সে নিজে অসুস্থ। কখনও বা মন-মেজাজ খারাপ। কখনও বা হবু বাচ্চার মা ডেলিভারী রুমে আছে; কিছুক্ষণের মধ্যে বাচ্চা ডেলিভারী হবে।

আমরা এইগুলি নোট করা শুরু করলাম। এবং কাষ্টমারদের সাথে এগুলি নিয়ে ফলোআপ করা শুরু করলাম।

একবার মনে আছে একজন রাস্তার মধ্যে গাড়ি নষ্ট হয়ে মহা বিপদে পড়েছিলেন। ভাগ্যক্রমে ঐ এলাকারই একজন কল করেছিলো। সে দ্রুত তার পরিচিত এক মেকানিককে বললো ফোন করে দেখতে যে কোন সাহায্য করা যায় কি না। ঐ ভদ্রলোক পর ফোন করে প্রায় ৩০,০০০ টাকার প্রোডাক্ট কেনার ভারবাল এগ্রিমেন্ট করে ফেললেন।

কয়েকবারই পেয়েছি যে এই মাত্র বাচ্চা হয়েছে, বা হচ্ছে। বাচ্চা সহ বাচ্চার মা হসপিটালে। আমরা ছোট একটা গিফট পাঠিয়ে দিলাম হসপিটালে। ব্যাস, রিটার্নে ঐ বাচ্চার বাবা বেশ গাদি খানেক জিনিষ আমাদের থেকে কিনে নিলেন। এমনকি তিনি নানান সমস্যায় আমাদের ফোন দিয়ে সাজেশন চাইতেন।

মাত্র ৩মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের পুশ সেল বেড়ে গেলো অনেক। পুশ সেল এর পাশাপাশি কাষ্টমাররা আমাদের ফোন দিয়ে আরও বিভিন্ন প্রোডাক্টের তথ্য নিতেন। তাতে করে মাঝে মধ্যেই আমরা নতুন প্রোডাক্ট লাইন অথবা নতুন প্রোডাক্টের খবর পেতাম।
------------
গতকাল হঠাৎই আমার গাড়ি কোন কারণে স্টার্ট হচ্ছিলো না। এদিকে জরুরী একটা ডিউটির মধ্যে আছি, ওদিকে গাড়ি স্টার্ট নিচ্ছে না। একজন মেকানিককে ফোন করলাম রেকার পাঠানোর জন্য। ভদ্রলোক ফোন ধরেন নাই, পরে জেনেছি অসুস্থ ছিলেন। উনাকে না পেয়ে আর একজনকে বললাম। তিনি জানালেন তার পরিচিত রেকার নাই যেটাকে বিশ্বাস করে গাড়ি দিয়ে দিতে পারি। তৃতীয়জন রেকার পাঠিয়ে দিলেন।

ঘন্টা দুয়েক পরে প্রথম যাকে কল করেছিলাম তিনি ফোন দিলেন, তাকে জানালাম যে গাড়ির এই দশা হয়েছিলো, তবে একটা ব্যবস্থা হয়েছে।

গতকাল রাত্রের মধ্যেই গাড়ি ঠিক হয়েছে। তবে ঐ ভদ্রলোক আজকে আবার ফোন দিলেন। জানতে চাইলেন যে গাড়ি ঠিক হয়েছে কি না। ভালো লাগলো বিষয়টি। সাধারণত বাংলাদেশী কার মেকানিকদের কাছ থেকে এই সাপোর্ট পাওয়া অকল্পনীয়। এখন কেমন যেন খারাপ লাগছে যে উনার জন্য একটু অপেক্ষা না করে কেন অন্যখানে গাড়ি পাঠালাম।

Photo by Donny Jiang on Unsplash
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০২২ দুপুর ২:০৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×