কয়েকমাস আগে অফিসের কাজে তাবুক গিয়েছিলাম। এয়ারপোর্টে নেমে আবিস্কার করলাম জ্যাকেট আনা হয়নি। তাবুকে যে এখন শীতের সময় বরফ পড়ে তা অনেকেই হয়ত জানেন। তাবুক এয়ারপোর্ট এলাকায় তখন তাপমাত্রা ৮ এর মত।
হাফ হাতা একটা টিশার্ট পরে এগিয়ে গেলাম রেন্ট-এ-কারের অফিসের দিকে। গাড়ি ভাড়া করে ওদের রিকোয়েষ্ট করলাম কাউকে দিয়ে গাড়িটা এরাইভাল গেট এর সামনে আনতে, আমি বাইরে গেলে ঠান্ডায় সমস্যা হতে পারে। কারণ এরাইভাল থেকে গাড়ির পার্কিং প্রায় ২০০-৩০০ মিটার দূরে, এবং প্রচন্ড বাতাস হচ্ছে।
গাড়ি চলে আসলো। কাজটা ছিলো শুক্রবারে। কিন্তু কিছু কারণে আমাকে শনিবার পর্যন্ত থাকতে হবে। দুপুর ২টায় হোটেল থেকে চেকআউট টাইম, আর ফিরতি ফ্লাইট রাত ১১:৫৯ এ!
হোটেলে বলে ৪টায় চেক আউট করলাম। চলে গেলাম তাবুক ইউনিভার্সিটিতে। এখানের ইউনিভার্সিটি গুলি শুক্র-শনিবারে চরম ফাঁকা থাকে। ভার্সিটির শেষ প্রান্তের দিকে গেলাম। ওখানে তখনও পাহাড় কাটা হচ্ছে, পার্কিং তৈরীর কাজ চলছে।
কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে কাউকে দেখা যাচ্ছে না। গাড়ি খুব ধীরে ধীরে চালাতে চালাতে মোবাইলে কি যেন দেখছি। হঠাৎ মনে হলো গাড়ির সামনে কিছু একটা পড়ছে মনে হয়। দ্রুত ব্রেক করলাম। দেখি গোটা বিশেক কুত্তা! সব এক সাথে গাড়ি ঘিরে ঘেউ ঘেউ করছে। আমি পা্ত্তা না দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, ওরা পিছু পিছু হাটছে আর ঘেউ ঘেউ করছে। গাড়ি ঘুরিয়ে সব গুলাকে একটা ধাওয়া দিলাম।
ধাওয়া মানে চরম ধাওয়া। যেটা যেদিক যায়, আমি গাড়ি সেদিক ঘুরাই। ২ মিনিটের মধ্যে এলাকা পুরা ধুলা ধুলা হয়ে গেলো। কুকুরও ক্লান্ত। লিডার টাইপের একটা কুত্তা একটা ছোট্ট টিলার উপরে উঠে কাইকুই করে কি যেন শব্দ করলো, বাকি কুত্তা ওদিকে চলে গেলো। আমি তার পরও একটা ধাক্কা দিতেই ওরা টিলার অপর পাশে চলে গেলো।
আর একটু দূরে যেতে না যেতেই আর এক দল কুত্তা। ওরা কিছু করার আগে ওদের হুদাই একটা ধাওয়া দিলাম। ওরাও পগার পার। এরপর আরও ঘুরে ঘুরে বেশ কয়েকটা কুত্তা তাড়ালাম!
বহু আগে কিছু পোলাপাইন "মন ভালো নাই, তাই কুত্তা তাড়াই...." একটা গান গেয়েছিলো। সেইটার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো।
আবার ঐ কাজেই এই শুক্রবারও তাবুক গিয়েছিলাম। কাজ শুক্রবার সকালেই শেষ। তাই গাড়ি নিয়ে আবার গেলাম ভার্সিটিতে। আবার কুত্তা খুঁজে ................ না, এবার তাড়াই নি। ওদের জন্য খাবার নিয়ে গিয়েছিলাম।
---------------------
কুত্তা তাড়ানোর কথা শুনে হয়ত কেউ হাসবেন, কেউ হয়ত রাগবেন। এর পিছনে সাইকোলজিকাল একটা বিষয় আছে। আমি ছট বেলা থেকে কুকুর বিড়াল পছন্দ করতাম। একটা ঘটনার পর কুকুরের উপরে ভয় চলে আসে। তারপর থেকে হঠাৎ যদি এমন কুত্তার সামনে পড়ি, তাহলে পরে ঘুমের ঘোরে সেই ভয়ের দৃশ্য গুলি সামনে চলে আসে। কিন্তু আমি যদি কুত্তা তাড়াই, তাহলে বিষয়টা্ আর তেমন হয় না।
------------------
একটা জিনিষ খেয়াল করেছেন কি, আমি বারবার কুত্তা এবং কুকুর লিখছি। কুত্তা বলতে আমি যেগুলি ঘেউ ঘেউ করে, সেগুলিকে বুঝিয়েছি। আর কুকুর হচ্ছে জেনারেল সেন্সে কুকুর।
আমি রাস্তায় গাড়ি চালালে খুব কম হর্ণ বাজাই। কাউকে রাগ দেখানোর জন্য বাজাই না বলা চলে। নিজে সতর্ক হয়ে চালাই, তাই অন্য ভুল কিছু করলেও মানিয়ে নেওয়া সহজ হয়।
ব্লগেও আমি কারও সাথে ক্যাচালে সরাসরি জড়াই না। তবে কেউ যখন যন্ত্রণা শুরু করে, তখন তাকে এমন ভাবে খোঁচা দেই, যে শুধু সেই বুঝবে! বাকিরা খালি বিনোদন নিবে
Photo by NEOM on Unsplash
লো লেভেলের আইকিউ ওয়ালা লোকেরা আবার পাছে মনে করে যে আমি ব্লগারদে কুকুরের সাথে তূলনা করেছি, তাই আগেই বলিঃ আমিও একজন ব্লগার।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০২৩ বিকাল ৫:৩০