হেরিটেজ ভিলেজে পুরোন দিনের আবরদের জীবন কেমন ছিলো সেটা খুবই সুন্দর করে ওরা সংরক্ষন করেছেন।
আগে বেড়াতে গেলে ব্লগের জন্য ছবি তুলতাম কিন্তু এবার আমি আর ডানা আমাদের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও বানানোর জন্য ছোট ছোট ভিডিও করেছি তাই ছবি তোলা হয়েছে খুবই কম।
আমাদের দেশের মতন বড় বাড়ীতে ভেতরে বড় উঠান। চারিপাশে উচু দেয়াল। একপাশে রান্না ঘর, টয়লেট। কাচারী ঘর।
থাকার ঘরের ভেতরে, সিন্দুক, শুকনা খাবার রাখা।
রান্না ঘরে পুরোন দিনের রান্নার জন্য বাসন, পাতিল, শস্য ভাঙ্গার জন্য যাতি।
ডানা ট্রাই করে দেখছে
চলুন ডানা আর আমার সাথে হেরিটেজ ভিলেজে ঘুরতে নিয়ে যাই।
হেরিটেজ ভিলেজে দেখা হলেছিলো ৩ বাংলাদেশীর সাথে । তারা এখানে কাজ করছে। বাংলায় কথা বলতে দেখে কাছে গিয়ে বললাম " দেশি কেমন আছেন আপনারা'' তাদের ৩জনের মুখে অনেক বড় হাসি, খুবই খুশি বাংলাদেশি পরিবারের দেখা পেয়ে। কথা হলো বাড়ী কোথায়, কতদিন এখানে আছে, কতদিন আমিরাতে আছে। কথার ফাকে আমাদের গাওয়া চা পরিবেশন করলো, আরেক জন তাদের রুম থেকে লাল চা নিয়ে আসলো শারমিনের জন্য। আরেক জন ভাই শারমিনকে তাদের লাগানো লাউয়ের মাচা থেকে ১টা লাউ কেটে এনে দিলো। শারমিন অনুরোধ করলো ভাই অল্প লাউ শাকও দিন। গাছ থেকে তাজা লাউশাক পেয়ে শারমিন বললো হাত্তা আশা তার সার্থক। আমি কস্ট কইরা নিয়া আসলাম সেটা না তার লাউ শাকে আত্তা ঠান্ডা ।
হেরিটেজ ভিলেজে শুক্রবার বেশি জমজমাট হয়, লাইভ গান, অনুস্ঠান থাকে সবার জন্য। সূর্যডোবা দেখতে আমরা হাত্তা লেকের উদ্দেশে রওনা হলাম।
হাত্তা লেক আমিরাতের অন্যতম একটা সুন্দর স্থান। এখানে বিভিন্ন একটিভিটির ব্যবস্থা আছে তাই সারা বছরই এখানে লোকজনের আনাগোনা থাকে। ছটির দিনে অনেকেই দুবাই,আবুধাবি থেকে ভ্রমনে যায়।
কিন্তু কস্টের কথা হইলো আমরা যখন লেকের কাছে পৌছালাম তখন দেখি রাস্তা বন্ধএবং তারা বলো যে লেক উন্নয়ন কাজের জন্য বন্ধ এবং জানুয়ারী ২ তারিখে জনগনের জন্য খুলেদেবে।
তবে ঐখান থেকে ফেরার পথে দেখলাম ঘোড়ায় চড়ার আয়োজন। ৩ চক্কর ১৫ দিরহাম ৩০ মি: বাইরে ৫০ দিরহাম। ডানা ঘোড়ায় চড়ার বায়না করলো। কিন্তু সন্ধা হচ্ছে বলে আমরা পাশের গ্রীন লেকে যাবো বলে রওয়ানা হলোম। আর আমরা ঠিক করলাম আগামী কাল আসবো এখানে।
গ্রিন লেকের দিকে যেতে পথ ভুল করলাম রাস্তা আর ম্যাপের চক্করে পইড়া। গোল চক্করে ২/৩ বার ঘুরে আসল পথ খুজে পাইলাম। লেকের ভিউং এরিয়াতে উঠার রাস্তা খুবই খাড়া। আমি আমার পুরানো গাড়ী নিয়া রিক্স নিলাম না। নিচে পার্ক করে হেটে উপরে উঠা শুরু করলাম।
উপরে উঠে আবারও কিছুটা হতাশ। লেকে পানি নাই, র্নিমান কাছ চলছে। কিন্তু পাহাড়ের উপরে সময় কাটাতে ভালোই লাগলো। তবে শেষে একটা দূঘটনা দেখলাম চোখের সামনে। আমি যেই ভয়ে গাড়ি নিয়ে উপরে উঠিনাই সেই ঘটনাই ঘটলো আরেক জনের সাথে। উপরে উঠার জন্য অপেক্ষা করার সময়ে সবচেয়ে পেছনে যে ঢালে দাড়িয়ে ছিলো তার ব্রেকে আর ধরতে রাখতে না পারাতে পেছনে একদম নিচে চলে যায়। গাড়ী কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও যাত্রিদের কোন ক্ষতি হয়নি। আমি দৌড়ে নিচে গিয়ে তাদের গাড়ী থেকে বের হতে সাহাজ্য করেছিলাম। ভদ্রমহিলা যিনি গাড়ী চালাচ্ছিলেন তিনি ভয়ে কাপছিলেন এবং তিনি গাড়ী থেকে বের হবার মতন শক্তি পাচ্ছিলেন না। ৫/৭ মিনিট পরে আস্তে আস্তে তিনি সাভাবিক হন এবং বের হয়ে আসেন।
ঐখানের দূঘটনা দেখে আমরা হোটেলের দিকে রওয়ানা দেই। পথে কয়েকটা স্থানে স্থানীয় দোকান, সপিংমলে ঘুরে সময় কাটিয়ে ছিলাম। পরে ডানা ডিপাটমেন্টাল স্টোর দেখতে পেলাম।
রাতে কম খরচে চিকেন চারকোল বিরিয়ানি আর চিকেন কর্ণ সুপ খেলাম হোটেলের কাছের একটা ক্যাফেটেরিয়াতে। হোটেলে ফেরে নিচের এরাবিক মিস্টির দোকানে কুনাফা দেখে না চেখে আর পারলাম না।
শেমাইয়ের মতন কুনাফা, নিচে চিজ এবং পরে উপরে চিনির সিরা ঢেলে পরিবেশন করা হয়।
তারপরে খেয়ে দেয়ে ঘুম
আগামী পর্বে মৌমাছির গাড়েন, ঘোড়ায় চলা আর হাইকিংকে যাবার কাহিনি। অনেক বেশি লম্বা হয়ে গেছে এই পর্ব।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২৭