এই গল্পের সমস্ত ঘটনা ও চরিত্র কাল্পনিক কিন্তু বাস্তবতা বিবর্জিত নয় । কাহিনী বা চরিত্রের সাথে কোনও ছাগু/জামাত-শিবির/ ধর্ম ব্যবসায়ীর মিল খুঁজিয়া পাইলে তাহার জন্য লেখক কোনও মতেই দায়ী নয় ।
চরিত্রঃ
১. দুষ্ট লোক
২. রহিম মিয়া – আপনার আর আমার মতই ইসলাম ধর্মপ্রাণ লোক এর প্রতিরূপ । কিন্তু ধর্ম সম্পর্কে বিদ্যা খুবই অল্প বা নাই বললেই চলে ।
৩. শুয়রজ মিয়া – জামাত-শিবির/ধর্ম ব্যবসায়ী । যেহেতু তুষার ভাই ছাগুর সংজ্ঞা দিয়েছেন তাই এক্ষেত্রে ছাগু প্রযোজ্য নয়
৪. করিম মিয়া - আপনার আর আমার মতই ইসলাম ধর্মপ্রাণ লোক এর প্রতিরূপ । কিন্তু ইসলাম নিয়ে তাহার বিদ্যা অপরিসীম । আর আপনার আমার মত চা-বিরি পান বা ইসলামী পিকচার ফেসবুকে লাইক দেয়ার চাইতে নিরিবিলিতে আল্লাহর ইবাদাতেই তিনি সকল সময় ব্যয় করেন ।
মূল গল্পঃ
একদা এক দুষ্ট লোক বাংলা চটি “ মাসী আর বৌদির সাথে চু*** ” কোনও উপযুক্ত কারণ ছাড়াই Google Translator এর অপব্যবহার করিয়া আরবি তে অনুবাদ করিয়া কাগজে প্রিন্ট করিলেন । তাহার পর আবার উপযুক্ত কারন ছাড়াই জানালা দিয়া রাস্তায় নিক্ষেপ করিলেন ।
ঐ সময়ই রাস্তা দিয়া হাঁটিয়া যাইতেছিলেন রহিম মিয়া । কাগজ খানা তাহার মাথায় পড়িলে তিনি কিঞ্চিৎ অবাক হইলেন । কিন্তু কাগজ খানা খুলিয়া আরবি লেখা দেখিয়া তাহার অবাক হইবার পরিমান আরও বাড়িয়া গেলো । তিনি ভয়ে ভয়ে একবার আকাশের দিকে আরেকবার কাগজের দিকে তাকাইতে লাগিলেন । যেহেতু তিনি আরবি জানেন না তাই এখন তাহার করনীয় নিয়া তিনি বেশ চিন্তিত হইলেন । হটাৎ মনে পড়িল শুয়রজ মিয়ার কথা । তার ওআয মাহফিল এর ডিভিডি আজ গ্রামে গঞ্জে বিস্তৃতি পাইয়াছে। বেশ বুজুর্গ বেক্তি বলেই ত তা হয়েছে, নয় কি ? তাই তিনি তাহার কাছে যাওয়াই মনস্থির করিলেন ।
কাগজখানা দেখিয়া শুয়রজ মিয়া মুসিবতে পড়িলেন । তিনি কি আর আরবি জানেন । কিন্তু এখন ত তা আর স্বীকার করা যায় না । বরাবরের মতই তাহার পাকিস্তানী কূটবুদ্ধি তাহাকে পথ বাতলাইয়া দিলো । তিনি বলিলেন – “ এই কাগজ আল্লাহ তায়ালা আমাদের পাঠিয়েছেন দেশের এই ফিতনা – ফ্যাসাদ এর কারনে । এখানে লেখা আছে তোমরা শাহবাগিদের জবাই করে হত্যা কর কারন তাহারা বাংলাদেশ থেকে ইসলাম বিলুপ্ত করিতে চায় । হিন্দু, বৌদ্ধ,বাম রামদের কথাও ভুলিও না । সবার শেষে উপজাতিদের দিকে নজর দিও । তোমাদের এই জিহাদ বদর, উহুদ থেকেও বড় জিহাদ আর মরিলে ডাইরেক্ট বেহেশত । আর জামাত ছাড়া আর কাহকে তোমরা দেশ পরিচালনায় বসিও না । ম্যা ম্যা... ” পরিশেষে তিনি মুসলিমদের মাঝে এই আদেশ ছড়িয়ে দেবার নির্দেশ দিলেন রহিম মিয়া কে ।
রহিম মিয়া ধীর পায়ে হাঁটিয়া পল্টন মোড়ে আসিলেন । আসিয়াই পাগলপ্রায় হইয়া ক্রোধে দুঃখে চিৎকার করিয়া কাঁদিতে লাগিলেন । তাহাকে দেখিয়া সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আগাইয়া আসিলেন । তাহারা কাহিনী শুনিয়া সবাই একে একে কাগজ খানার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত পড়িবার ভান করিবার নিমিত্তে চক্ষু বুলাইয়া তাহার মতই ক্রোধান্বিত হইয়া উঠিল । সবার মুখে এক গর্জন –
“আল্লাহু আকবার
সবাই ধর তলওয়ার
জবাই করা দরকার
শাহবাগী জানোয়ার”
এমন সময় নামাজ পড়িয়া মসজিদ হইতে বাহির হইলেন করিম মিয়া । তিনি গোলযোগ দেখিয়া কারন অনুসন্ধানে আগাইয়া গেলেন । কারন শুনিয়া তিনি কাগজ খানা চাহিয়া লইলেন । কোনও কথা না বলিয়া পুরা লেখাটা পড়িয়া তিনি কাগজখানা ছিঁড়িয়া ফালাইলেন । সাথে সাথে –
আমার দেশ পত্রিকার শিরোনাম – “কিয়ামতের বেশি দেরি নাই । শাহবাগি কাফিরদের সাথে একাত্ততা ঘোষণা করিয়া প্রকাশ্য দিবালোকে কুরআন শরিফ ছিঁড়িল এক মুসলিম বেশধারী কাফির।”
দিগন্ত টিভির লাইভ নিউজ – “জী সুরভী বিবি আমি শুনতে পাচ্ছি । আমরা এখন আছি পল্টন ময়দানে যেখানে শাহবাগের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুসারে কুরআন পুড়ানো হয়েছে । ...”
মারমুখী জনগণ কারণ জানিতে না চাহিয়াই করিম সাহেব কে তাহার অমার্জনীয় পাপের কারনে পিটাইয়া মারিয়া ফালাইল । খবর শুনিয়া শুয়রজ মিয়া বলিলেন – “ আমি তাহাকে মুরতাদ ঘোষণা করিতেছি । শুধু তাই নয় তাহার সাথে এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া সকলেও মুরতাদ । আল্লাহ পাক আমাকে আর জামাত কে নিজে এই ক্ষমতা দিয়েছেন যাকে তাকে মুরতাদ ঘোষণা করার । আর পিটাইয়া মারাতে আমি কিঞ্চিৎ বিরক্ত । জবাই করার যেখানে সুযোগ ছিল... ”
এইটা ইশপ এর গল্প না হলেও তিনি একটা মোরাল দিয়ে গেছেন কিভাবে যেন । তা হল -
পবিত্র কুরআন শরীফের বাংলা অনুবাদ
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১২