বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের এই অবক্ষয়ের জন্য বাংলাদেশের চলচ্চিত্র পরিচালক এবং চলচ্চিত্র অভিনেতারা দায়ী। বাংলা চলচ্চিত্রের পরিচালকেরা এবং স্ক্রিপ্ট রাইটারেরা প্রচুর নকল করে। বাংলাদেশের বেশীরভাগ চলচ্চিত্র হচ্ছে বিদেশী চলচ্চিত্রের কার্বন কপি। এইধরনের চলচ্চিত্রের স্বকীয়তা বলে কোন কিছু নাই। শুধু ভাষাগত ব্যাবধান ব্যাতীত আর কোন পার্থক্য নাই। একটা কাহিনী মার্কেটে দুইবার চলে না। এটা চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মাথায় রাখা উচিৎ। ওখানে ভিন্ন ভাষায় বলা হচ্ছে অথবা একই ভাষায় বলা হচ্ছে। কিন্তু, কাহিনী তো একটা। মানুষ সবসময় অংকুর খুজে। মানুষের চিন্তাধারা অংকুর কেন্দ্রীক। এরপরে আছে অশ্লীল দৃশ্য। আমাদের দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতারা মনে করে থাকেন ওয়েষ্টার্ন চলচ্চিত্রগুলোর বাংলা চলচ্চিত্রেও অশ্লীল সিন থাকলে এটা মার্কেটে হিট হবে। তারা এটা ভুলে যান যে, আমাদের দেশের মানুষের চারিত্রিক অবক্ষয় এতোটা হয়নি যে, তারা ফ্যামিলির সবাই মিলে বসে এইধরনের সিন দেখতে পারে না। বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে এটি যে, অশ্লীল সিন সংশ্লিষ্ট চলচ্চিত্রগুলো সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্রও পেয়ে যায় ধরুন, আমার ফ্যামিলির সবাই মিলে হলে গেলাম কোন একটা ছবি দেখতে। সেখানে আমার ভাই, বোন, মা, বাবা, স্ত্রী, মেয়ে এবং ছেলে আছে। আমরা সবাই মিলে ছবি দেখছি এমন সময়ে একটা অশ্লীল সিন এসে পড়লো। ভাবুন তো এরপর আমাদের অবস্থা কেমন হবে? এরপরে আছে অভিনেতাদের স্বেচ্ছাচারিতা। কিছুদিন আগে অভিযোগ উঠেছিলো যে, নির্মাতারা দেশীয় শিল্পিদের তুলনায় বিদেশী শিল্পিদের বেশী অর্থ দেয়। এর পেছনে একটা কারনও আছে। বিশেষ করে টাইম মেইন্টেনের একটা বিষয় আছে। বাংলাদেশী শিল্পিদের শিডিউল দেয়া হয় দুপুর ১ টায়। সে বিকাল চারটা বাজে এসে বললো কি, আমি তো জানি ৫ টার আগে কাজ শুরু হবে না। তবু আমি ৪ টা বাজে চলে এসেছি। কিন্তু, এই জায়গাতে বিদেশী শিল্পিগুলো শিডিউল মেনে চলছে। তারা সঠিক সময়ে এসে হাজির হচ্ছে। এখন যাকে আমি সময়মত পাচ্ছি, তার ডিমান্ড তো বেশী হবেই। আগে বাংলা চলচ্চিত্রের রেজুলেশন যথেষ্ট খারাপ ছিলো। যেটা এখন কিছুটা ভালো পর্যায়ে গেছে। কিন্তু, ভয়েজের অবস্থা দেখুন। কত বাজে অবস্থা। বর্তমানে যারা নতুন এক্টর বিশেষ করে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতাদের আমার কাছে গাঁজাড়ি মনে হয়। তাদের ভাব, কথার বচন, স্টাইল সব মিলিয়ে তাদের পারফেক্ট মাতাল মনে হয় আমার। তাদের অভিনয়ে পেশাদারিত্বের কোন চাপ নাই। মনে হয় যেন তারা পাড়া গায়ের কোন এক যাত্রা মঞ্চে অভিনয় করছে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সেক্টরের অবস্থা যখন এই, তখন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়ন কি করে সম্ভব।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০৬