somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পেরুর নাজকা মালভূমিতে অঙ্কিত ভূরেখাচিত্র বা জিওগ্লিফ

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নাজকার রেখাসমূহ হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার পেরুর নাজকা মরুভূমিতে অঙ্কিত কিছু বিপুলকায় ভূরেখাচিত্র বা জিওগ্লিফ। এই বিশালাকৃতির রেখা বা নকশাগুলো ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কো দ্বারা বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। পেরুর রাজধানী লিমা থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত প্রায় ৮০ কিলোমিটার লম্বা এবং ৫০০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত শুষ্ক নাজকা মালভূমি অঞ্চলে মাটির উপর টানা বিশাল বিশাল সরলরেখা এবং তার সমন্বয়ে অঙ্কিত এইসব জ্যামিতিক চিত্র ও নানা পশুপাখির ছবি, বিশেষজ্ঞদের অনুমান মোটামুটি ৪৫০ থেকে ৫০০ সালের মধ্যে অঙ্কিত। এগুলি সৃষ্টির কৃতিত্ব সাধারণত পেরুর প্রাচীন নাজকা সংস্কৃতির মানুষদের দেয়া হয়ে থাকলেও, বর্তমান গবেষণা ইঙ্গিত করে। এর মধ্যে যেগুলি বেশি পুরনো সেগুলি নাজকাদের থেকেও বেশি প্রাচীন। সেই হিসেবে অন্তত সেগুলির স্রষ্টা আরও পূর্বতন পারাকাস সংস্কৃতির মানুষ।


নাজকা মালভূমি জুড়ে অঙ্কিত এসব ভূচিত্রগুলো এতো বিশাল যে, আকাশ থেকে না দেখলে সেগুলোর অবয়ব বোঝা যায় না। মরুদ্যানের মাঝ বরাবর চলেছে একটি লম্বা সরলরেখা, যার দুপাশ বেয়ে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর গেছে কিছু সমান্তরাল রেখা। সেখানে রয়েছে বিপুলায়তন ত্রিভূজ, চতুর্ভুজ, আয়তক্ষেত্র, সামন্তরিক এরকম অনেক জ্যামিতিক নকশা। তাছাড়াও আছে প্রায় একশো দেড়শো ফুট প্রশস্ত স্থানজুড়ে আঁকা নানারকম জন্তু-জানোয়ার, পাখি, পোকামাকড় ইত্যাদি। জ্যামিতিক নকশাগুলোর যেখানে রেখা টানা হয়েছে, সেগুলো একচুল এদিক ওদিক না হয়ে চলে গেছে মাইলের পর মাইল অবধি। প্রতিটা রেখায় নকশায় যেন অতি সূক্ষ্ম হিসাব রক্ষা করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রাণীর নকশার মধ্যে রয়েছে মাকড়সা, পাখি, নয় আঙ্গুলবিশিষ্ট বানর, মাছ এবং সরীসৃপজাতীয় প্রাণীদের বিরাট বিরাট প্রতিকৃতি। এমনকি রয়েছে অনেক সামুদ্রিক মাছের যেমন, তিমি প্রতিকৃতি। ড্রেসডেনের জার্মান গবেষিকা মারিয়া রাইখা এরকম ৫০টি চিত্র ও ১০০০টিরও বেশি রেখা আবিষ্কার করেছেন, যাদের কোনও কোনওটি এমনকী ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত লম্বা।

হামিংবার্ড
পেরুর ইনকা সভ্যতারও আগে সেখানকার নাজকা মালভূমিতে গড়ে উঠেছিল একটি কৃষিভিত্তিক সভ্যতা নাজকা সংস্কৃতি সময়কাল মোটামুটি ১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ৮০০ খ্রিস্টাব্দ। কিন্তু ভৌগোলিকভাবে মালভূমিটি অতিরিক্ত শুকনো। এই শুষ্কতাকে মার্কিন মহাকাশ গবেষকরা মঙ্গল গ্রহের ক্ষয়ের সমতুল্য বলে উল্লেখ করে থাকেন। আর এই অতিরিক্ত শুষ্কতার জন্যই এই নকশাগুলো এতো দীর্ঘদিন যাবত প্রায় অক্ষত অবস্থায় টিকে আছে।

The Heron

হাত

মাকড়সা
আবিষ্কারের প্রারম্ভলগ্ন থেকেই এসব ভূচিত্র নিয়ে গবেষক মহলে তৈরি হয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মতবিরোধ। এদের মধ্যে কেউ কেউ দাবি করেছেন যে, এগুলো আদিম মহাকাশচারীদের তৈরি করা নিদর্শন যেখানে তারা অবতরণের জন্য তৈরি করেছিল একটি রানওয়ে। যদিও কোনো প্রথম সারির বাস্তবিক গবেষকই এমন ভূয়োদর্শন যুক্তিতে ঠিক অটল থাকতে পারেননি। অনেক বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন যে এই বিপুলায়তন প্রাণীর এবং জ্যামিতিক নকশাগুলো মূলত বৃষ্টিকামনা এবং পূর্বসূরিদের আত্মার সাথে যোগাযোগের বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে করা হয়েছিল। তাদের ব্যাখ্যা হলো উর্ধ্বস্থিত ঈশ্বরকে দেখানোর জন্যই নাজকার আদিম অধিবাসীরা এমনটা করেছিলেন। এমনকি ২০০৪ সালের দিকেও ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে অনুরূপ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালনের রেওয়াজ দেখা যায়।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০৬
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×