somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কর্নাটকায় ৪৫ দিন...

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কর্নাটকায় ৪৫ দিন…..
০১/০৩/২০১৫
হায়দারাবাদে আসার পরে পরিকল্পনা করেছিলাম, প্রতিদিন ন্যূনতম একপাতা ডায়েরী লিখব। ৩৬৫ দিনে ন্যূনতম ৩৬৫ পাতা ডায়েরী লেখা হবে… ।
৩০ বছর পরে, যখন বৃদ্ধ বয়স, অফুরন্ত সময়, যখন কিছুই করার নেই। তখন এক মেঘলা দিনে এই ডায়েরী খুলে বসব, আর স্মৃতি রোমন্থন করব….। পরিচিত বন্ধুবান্ধব, আত্নীয়-পরিজন ছাড়া নতুন পরিবেশে কেমন কেটেছিল একটা বছর…
পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। ব্যাপার না…। বেস কিছু পাতাতো লেখা হয়েছে।এই বা কম কিসে…?
ফেসবুক ও ব্লগের কল্যানে সে ডায়েরীর পাতাগুলো আমি ছড়িয়ে দিয়েছি বিশ্বময়….যে সময়ের সাক্ষী ছিলাম আমি, আমার হয়ে আমার সে অভিঙ্গতা না হয় জানুক দু’একজন…। দু’একজন বন্ধু-বান্ধব সে লেখা ডায়েরী পড়েছেও। কেউ-কেউ দু’এক ছত্র মন্তব্যও করেছে…
যা হোক, দীর্ঘ বিরতি শেষে আবার হায়দারাবাদের ডায়েরী লিখতে বসেছি…। তবে অন্য শিরনামে। ৪৫ দিন আমাকে হায়দারাবাদের বাইরে থাকতে হবে।
আমার এক পরিচিত জন আমাকে জানিয়েছে তার নাকি হায়দারাবাদের ডায়েরী পরতে ভাল লাগছে।আজকের ডায়েরীর পাতা তার উদ্দেশ্য উৎসর্গকৃত….
দেখতে-দেখতে শীতকাল শেষ হয়ে গেল…। বাংলাদেশ থেকে কষ্ট করে বয়ে আনা নকসীকাথার প্রয়োজনও ফুড়িয়ে গেল।রাতের বেলা ফ্যান ছেড়ে ঘুমাতে হয়।
দিনের বেলা প্রচন্ড রোদ উঠে। বাতাসে আদ্রতা কম থাকার কারনে সে রোদের তাপ বেস প্রখর। মনে হয় সূর্যের তীর্যক রশ্সি শরীরের ভেতরে ঢুকে যাবে…।
এসি রুমে বসে সকাল সন্ধা ক্লাস করি বলে আবহাওয়ার এতো বিপুল পরিবর্তন টের পাই নাই।আজকেই প্রথম টের পেলাম। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের কোয়ার্টার থেকে হেটে আমাদের ক্লাসে যেতে প্রায় মিনিট সাতেকের মতো লাগে। এই সাত মিনিটেই রোদ্রের প্রখরতা টের পেয়ে গেলাম। যেমনটি পেয়েছিলাম মহারাষ্ট্রের নাগপুরে যেয়ে…
হায়দারাবাদের একটা স্থানীয় পত্রিকায় ছবি দেখলাম, রোদের কারনে দুপুর সময়ে রাস্তা প্রায়ই লোকশূন্য পড়ছে।স্থানীয় লোকের ভাষ্য মতে আবহাওয়া খুব বেশি মাত্রায় পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। গতবছর এইসময়ে হায়দারাবাদের তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রির নিচে…
যা হোক, সেকেন্ড ট্রায়ামস্টারের পরীক্ষা শেষ করলাম। গত এক সপ্তাহ ভয়াবহ ব্যস্ততায় কেটেছে। প্রতিদিন দুটি করে পরীক্ষা। এছাড়া বিভিন্ন এসাইনমেন্টের চাপতো ছিলই। সব শেষ করে আজ ফ্রি হয়েছি…।
আগামীকাল ৪৫ দিনের জন্য যেতে হবে অন্য স্টেটে। আমাদের ৫০ জনকে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে বিভিন্ন প্রদেশে পাঠাচ্ছে। কেই যাচ্ছে রাজস্থান, কেউ সিমলা, কেউ দিল্লি, কেউ আসাম…. আমি যাচ্ছি কর্নাটকা প্রদেশের চিত্রাদূর্গা জেলায়।সেখানে মাইরাডা নামকিএকটি এনজিওর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করে একটি এনটার্নসিপ পেপার জমা দিতে হবে।হায়দারাবাদে ফিরে গিয়ে এনটারনসিপ পেপারের ওপর প্রেজেনটেসনও দিতে হবে। পাশাপাশি দুটো কেস স্ট্যাডিও জমা দিতে হবে। তাই এই ৪৫ দিন শুধু ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ কম। অনেক কাজও করতে হবে।
আমার সাথে আছে আসামের ছেলে দিপান্তর। দেখতে হিন্দি সিনেমার নায়কের মতো।তারপর ফটোগ্রাফিতে বেস হাত আছে। আমাদের ব্যাচের বেশির ভাগ মেয়েই দিপান্তর বলতে পাগল…
কর্নাটকা হায়দারাবাদের পাশের স্টেট। অনলাইনে দিপান্তর টিকিট কেটে রেখেছিল। একটা ক্যাব নিয়ে বিকাল ৫:৩০টার দিকে চলে এলাম আরামগর নামক জায়গায়। ৬:৩০ দিকে বাসে চড়ে বসলাম। বাস চলছে….
সন্ধা হয়ে গিয়েছে। আকাশে অর্ধেক চাঁদ। সেই অর্ধেক চাঁদের আলোতে দেখা যায়… রাস্তার দুইধারে পাথরের পাহাড়… পাহাড়ের ঢাল নেমে গেছে… সেই নিচু জমিতে নারিকেল ও সুপারির বাগান। হালকা চাঁদের আলোতে সেই নারিকেল ও সুপারি গাছের মাথা নাড়ানো চোখে পড়ে…
বাসে তেলেগু সিনেমা চলছে। ধুম-ধারাক্কা ফাইটিং অ্যাকসন সিনেমা। আমার সিটের ওপরে সাউন্ডবক্স। বিরক্ত লাগছে। কিন্তু কিছু করার নেই।সিট ফেলে ঘুমনোর চেষ্টা করলাম। ঘুম আসছে না….। মাঝে আধা ঘন্টার বিরতি দিল। ক্ষুদা লেগেছিল। অর্ধসেদ্ধ মুরগির মাংস দিয়ে দুটি রুটি খেলাম। বিল হলো ২২০ রুপি। আবার বাসে এসে উঠলাম।
বাস চলছে…. হঠাৎ বাইরে তাকিয়ে দেখি অঝরে বৃষ্টি হচ্ছে….ঝুম বৃষ্টি…. বছরের প্রথম বৃষ্টি…. বৃষ্টি পড়া দেখতে খুব ভালো লাগছিল…. আর দেশের কথা, দশের কথা খুব মনে পড়ছিল……
জানালা দিয়ে চেয়ে দেখি দূরে নতুন দিনের আয়োজনে ব্যস্ত সূর্যমামা….
(চলবে...)


২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×