somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

র্যাবকে নিস্ক্রিয় রাখার দাবীঃ আতংকিত জনগণ

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০০৬ সকাল ৭:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

র্যাবকে নিস্ক্রিয় রাখার দাবীঃ আতংকিত জনগণ
- নিজাম উদ্দিন মাহমুদ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিকট এলিট ফোর্স র্যাবকে নির্বাচন পর্যন্ত নিস্ক্রিয় রাখার দাবী জানিয়েছে একটি দল। 1996সালে মতায় এসে যেভাবে সন্ত্রাস শিল্পের বিকাশ সাধন করেছিল তা মনে পড়লে আজও গা শিউরে ওঠে শান্তিকামী মানুষের। সন্ত্রাসের রাজত্ব থেকে জাতিকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলে বিএনপি জোট 2001সালে মতায় এসেছিল। মতায় এসে উত্তরসুরীদের রেখে যাওয়া সন্ত্রাস দমনের জন্য প্রথমেই শুরু হয় অপারেশন কিন হার্ট। যৌথবাহিনীর এই অভিযানে দেশের আইন শৃংখলা মোটামুটি স্বাভাবিক হয়। যৌথবাহীনী ব্যারাকে ফিরে যাওয়ার পরও সন্ত্রাস দমনের সফলতা ধরে রাখার জন্য সরকার গঠন করে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। র্যাব গঠনের পর তাদের সাহসিকতা, টিম স্পীড, প্রযুক্তির ব্যবহার, দলমত নির্বিশেষে কাজ করার ফলে আইন শৃঙ্খলার এক চমৎকার উন্নতি হয়। র্যাবের সাথে লাইন অব ফায়ারে শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন সন্ত্রাসী নিহত হলে বাকীদের কেউ কেউ দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। কেউ আত্ম গোপন করে। আর একটা অংশ সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছেড়ে ভাল হওয়ার চিন্তা করে। বিশেষ করে ইসলামের লেবাস পরে ইসলামকে হেয় ও সন্ত্রাসী বানাতে ইসলাম বিদ্বেষীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য বোমা হামলাকারীদের শীর্ষ নেতা শায়খ আব্দুর রহমান এবং বাংলা ভাইকে গ্রেফতার করে র্যাব এদেশের মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান করে নেয়। এসময় দেশের মানুষ কিছুটা শান্তি স্বস্তি ও নিরাপত্তা বোধ করে। সন্ত্রাসীরা র্যাবের হাতে ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ায় জনগন র্যাবকে স্বাগত জানালেও সন্ত্রাসীদের গডফাদার ও রাজনৈতিক আশ্রয়দাতারা র্যাবের কার্যক্রমকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে নিজেরাই বিতর্কিত হয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা নিহত হওয়ার পর কিছু বুদ্ধিজীবী মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে, গণতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে এবং বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ছে বলে চিৎকার দিয়েছেন। কিন্তু লগি বৈঠা দিয়ে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা করে লাশের উপর নাচানাচি করার পর সারা পৃথিবী থেকে নিন্দা ও ঘৃনা ছড়িয়ে পড়লেও সেই বুদ্ধিজীবীরা টু শব্দটিও করেনি। আসলে কেউ মারা গেলে তার আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্খীরাই তার জন্য কান্নাকাটি করবে এটাই স্বাভাবিক। একটি ঘটনা সবার জানা আছে যে, একবার দুজন মহিলা একটি শিশুর মা বলে দাবী করলো। কিন্তু এক শিশুরতো দুই মা হয়না। তখন বিচারক বললেন ঠিক আছে শিশুটিকে কেটে দুভাগ করে দু জনকে দেওয়া হবে। তোমরা রাজি কিনা। যিনি মা নন সেই মহিলা বললো আমি রাজি। কিন্তু যে মহিলা প্রকৃত মা তিনি আপন সন্তানকে হারানোর ভয়ে কেঁধে বললেন শিশুটিকে কাটার দরকার নেই তারচে বরং ঐ মহিলাকে দিয়ে দিন। অর্থাৎ সন্তান কাটা পড়লে প্রকৃত মায়ের হৃদয়েই কষ্ট লাগে। সুতরাং সন্ত্রাসীরা নিহত হলে যারা সন্ত্রাসীদের প্রকৃত আশ্রয়দাতা এবং গডফাদার তাদেরই কষ্ট লাগে। এজন্য সন্ত্রাসের জনকরাই র্যাবকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করে। সন্ত্রাসীরা একের পর এক হত্যাকান্ড করার পর তারা প্রতিবাদ করেনা, দুঃখ প্রকাশ করেনা কিন্তু সন্ত্রাসীরা নিহত হলে তারা মানবতা মানবতা বলে চিৎকার করে। র্যাবের ভুমিকায় এদেশের মানুষ সন্তুষ্ট। র্যাবের জন্য মানুষ মন খুলে দোয়া করে।


প্রিয় পাঠক আপনারা অনেকেই খুলনার একটি মহিলার লেখা চিঠি পত্রিকায় পড়েছেন। তিনি খুলনার মৃনাল বাহিনীর চরম নির্যাতনের কয়েকটি বর্বর ঘটনা উল্লেখ করে আবেগঘন বর্ণনা দিয়ে বলেছেন সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য মা দুর্গা র্যাব হিসাবে আবির্ভুত হয়েছেন। র্যাব সেই সন্ত্রাসীদের কে দমন করে সন্ত্রাসের জনপদে একটি স্বস্তি নিয়ে এসেছে।
আসন্ন নির্বাচনে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে র্যাব ইতিপূর্বে কঠোর ঘোষনা দিয়েছিল। কারন সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য দেশে ফিরবে এবং আত্মগোপনকারীরা তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে নির্বাচনে আতংক সৃষ্টির পায়তারা করছে। নির্বাচনের প্রাক্কালে সন্ত্রাসীরা দেশে আসবে এই আশংকায় দেশের মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত। কিন্তু র্যাব ঘোষনা দিয়েছে যে নির্বাচনের সময় কোন সন্ত্রাসীকে যেখানেই পাওয়া যাবে সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হবে। র্যাবের এই দৃঢ় ঘোষনায় দেশবাসী যখন কিছুটা স্বস্তি পেল। কিন্তু একটি দলের প থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিকট দাবী জানানো হয়েছে যে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত র্যাবের কার্যক্রমকে নিস্ক্রিয় রাখা হয়! মুলত সন্ত্রাসীদের কে নির্বাচনে ব্যবহার করার জন্যই দলটি এই দাবী জানিয়েছে। দলটি শুধু নিজেদের স্বার্থটাই দেখছে জনগনের নিরাপত্তার কথা তারা চিন্তাও করছেনা। এই দাবী শুনার পর থেকে সাধারণ মানুষ এখন খুবই আতংকে আছে। কারণ জয়নাল হাজারী, শামীম ওসমান, তাহের গংরা সহ বড় বড় সন্ত্রাসীরা যদি এলাকায় চলে আসে? আওয়ামী লীগের এই দাবী যদি মেনে নেওয়া হয় তাহলে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে সন্ত্রাস করবে এবং নির্বাচনের সময় অরাজকতা সৃষ্টি করে নির্বাচনের ফলাফলকে বানচাল করবে। পুনরায় শুরু হবে হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ। বর্তমান রাজনৈতিক নৈরাজ্যের কারনে এমনিতেই দেশের মানুষ আতংক, ভয়-ভীতি আর নিরাপত্তাহীনতায় প্রতিটি সময় অতিবাহিত করছে। আবার নতুন করে কোন সমস্যা হোক তা জনগন চায় না। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিকট আবেদন প্লিজ র্যাবকে নিস্ক্রিয় রাখবেন না। বরং আইন শৃংখলার উন্নতির স্বার্থে র্যাবকে আরও ব্যাপক মতা দিয়ে নির্বাচনের সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক।





লেখকঃ মানবাধিকার কমর্ী
হবুধসথপঁ@ুধযড়ড়.পড়স
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০০৬ সকাল ৮:১০
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ডায়েরী- ১৭১

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৬



মানুষ দুনিয়াতে ন্যাংটা আসে।
ধীরে ধীরে বড় হয়। যোগ্যতা দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জন করে। তারপর ইনকাম শুরু করে। সমাজের বহু মানুষ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টাকা ইনকাম করে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যারা সাহাবা নন তাঁরা রাসূলের (সা.) অনুসরনের জন্য সাহাবার (রা.) অনুসরন না করে আমিরের অনুসরন করলে সঠিক পথে থাকবেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:১৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা (ইতায়াত) আনুগত্য কর আল্লাহর, আর (ইতায়াত) আনুগত্য কর রাসুলের, আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

হকারের পেটে লাথি দাও, নিরাপদে হাঁটার স্বাধীনতা ফেরাও

লিখেছেন মিশু মিলন, ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪১




ঢাকার ফুটপাত আমি থেকে কোনো কিছু কিনি না। এটা আমার এক ধরনের প্রতিবাদ। কারণ, এই হকাররা আমার স্বস্তিতে ও নিরাপদে হাঁটার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। আমি হাঁটতে পছন্দ... ...বাকিটুকু পড়ুন

হত্যাকাণ্ড বন্ধে কেন ম্যাজিক জানা জরুরি ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৪৪


জাতি হিসাবে আমরা বড়োই অভাগা। ইতিহাসের মঞ্চে রাজা বদল হয়, কিন্তু চিত্রনাট্য বদল হয় না। এক রাজা যায়, আরেক রাজা আসে; কিন্তু পর্দার পেছনের কলকাঠি নাড়া সেই একই হাত।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লন্ডনের ত্রয়োদশ বইমেলা এবং সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ শেষ পর্ব

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ২:৪৯



সেপ্টেম্বর চৌদ্দ তারিখ লন্ডনে অনুষ্ঠিত হবে বই মেলা ও সংস্কৃতি উৎসব। অনুষ্ঠিত হবে লন্ডনের ব্রিক লেন অবস্থিত রিপ্লেইনে অবস্থিত ব্র্যান্ডি সেন্টারে।
অনুষ্ঠানের প্রথম দিন শুরু হবে বেলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×