somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: আক্রোশ - ০৫

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



৪র্থ পর্ব - Click This Link

বাংলাদেশের বিখ্যাত একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান তোফায়েল ইসলাম তপু বসে আছে মোহনপুরের পৌর মেয়র পল্লব আহমেদের কেবিনে।
আজ থেকে আটাশ বছর আগে এই মোহনপুরেই  নির্মমভাবে খুন হয়েছিলেন পল্লবের বাবা। পল্লব তখন মায়ের গর্ভে। পল্লবের দাদি তখন পূত্রশোক ভুলে নিজের একমাত্র সন্তানের শেষ চিহ্নকে রক্ষা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ছেলেবউকে সাথে নিয়ে মোহনপুর ছেড়ে পালিয়ে এসেছিলেন তিনি। পল্লবের মায়েরও তখন ঐ গর্ভবতী অবস্থায় কিছুই করার ছিল না। কিন্তু পল্লবের মা কিছুতেই ভুলতে পারেন নি সে ঘটনা।  ভোলার কথাও না। এমন বিভীষিকাময় ঘটনা যার জীবনে ঘটে সেই কেবল জানে কী যে যাতনা তাতে। স্বামীর হত্যাকারীদের কোন শাস্তি তিনি সেদিন দিতে পারেন নি, এমন কি স্বামী হত্যার বিচার চাইবার ক্ষমতাও সেদিন তার ছিল না, এতটাই অসহায় সেদিন তিনি ছিলেন।

তাই ছোটবেলা থেকেই  ছেলেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে তুলতে থাকেন। তিনি যা পারেন নি, ছেলে তা করে দেখাবে। খুনীদের সে খুঁজে বের করবেই। স্বামীর খুনের সুবিচার একদিন হবেই। সেই থেকে যত দিন যেতে থাকে পল্লবের জীবনে বাবার খুনীকে খুঁজে বের করাটাই একমাত্র লক্ষ্য ও ব্রত হয়ে উঠতে থাকে।

       ---যাক বাঁচলাম। তুই যে সত্যি সত্যি এই কেইসটার তদন্ত করতে এখানে চলে আসবি ভাবতে পারিনি।
---তোর ডাকে সাড়া না দিয়ে কি পারি? বাচপান কি জিগরি দোস্ত বলে কথা।
----আজকাল আর বাচপান কি দোস্তি কে মনে রাখে বল।
----রাখে রাখে। দোস্ত যদি এমন ক্ষমতাবান লোক হয় তাহলে সেই দোস্তি সবাই মনে রাখে। এমন কি দোস্তি নাও যদি থাকে তাও একটা কাহিনী রচনা করে দোস্তি বানিয়ে নিবে।
----হা হা হা। তা যা বলেছিস। কিন্তু আমি ক্ষমতাবান না হলেও তুই যে আমার ডাকে সাড়া দিতি এই বিশ্বাস আমার আছে।

তপু হেসে বলল,
----তা তো আসতামই। ছোটবেলা থেকেই তোকে যে লিডার মানতাম। এবার তাহলে কাজের কথায় আসি।
----তোকে তো সবই খুলে বলেছি। এবার তুই ভেবে দেখ কোথা থেকে শুরু করবি। আর শোন, আমি আমার বাবার খুনীকে খুঁজে বের করার জন্য এই মোহনপুরে এসেছিলাম ঠিকই। কিন্তু এখন আমার উদ্দেশ্যটা আরো বড় হয়ে গেছে। এখন শুধু বাবার খুনীকে খুঁজে বের করা আমার উদ্দেশ্য না, এই মোহনপুরকে একটি আদর্শ শহর হিসেবে গড়ে তোলাও আমার উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্য অনেকটাই আমি সফল করেছি। বাকিটাও সফল হয়ে যাবে যদি মোহনপুরকে আমি সম্পূর্ণ দূর্নীতিমুক্ত করতে পারি তবেই। আর সেটা সম্ভব হবে মোহনপুরের বিখ্যাত ঐ তিন দূর্নীতিবাজের হাঁড়ি হাটে যদি ভাঙতে পারি তবেই।
----কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না এত আগের কেইস কী করে সমাধান করবো। আদৌ সমাধান করতে পারবো কিনা। কোন ক্লু কি এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে?
----তুই  একজন গোয়েন্দা হয়ে এমন কথা বলছিস? তুই কি জানিস না খুনী যতই চালাক হোক না কেন একটা না একটা ক্লু সে পেছনে রেখেই যায়?
----জানি। কিন্তু তুই বুঝতে পারছিস না ব্যাপারটা ঘটেছিল আজ থেকে আটাশ বছর আগে। সে যদি কোন ক্লু ফেলে গিয়েও থাকে তবে এতদিন পর তার হদিস খুঁজে বের করা প্রায় অসম্ভব।
----এসব বলে কোন লাভ নেই। যেভাবেই হোক এই কেইস তুই সলভ করবি। আর আমার বিশ্বাস তুই পারবি। তুই তো জানিসই আমার এই মোহনপুরে আসার আসল উদ্দেশ্য এটাই। ঐসব ক্ষমতা টমতার লোভে আমি এখানে আসিনি। কিন্তু আমার উদ্দেশ্যটা সফল করার জন্য প্রয়োজন ছিল এই ক্ষমতার সিঁড়ি। এই সিঁড়িটাকে জুতসই করতে করতেই কেটে গেলো এত বছর। এখন আমি যে কোন মূল্যেই হোক আমার বাবার খুনীকে খুঁজে বের করতে চাই।
----এ সবই আমি জানি। সব জেনেই এখানে এসেছি। আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করবো দোস্ত।  দেখা যাক কী হয়।

-----
ইণ্টারকমটা বেজে উঠতেই ফারুক হোসেন ফোনটা রিসিভ করলেন।
----স্যার আপনার সাথে একজন দেখা করতে চান।
----কী নাম? কাজ কী?
----নাম তোফায়েল ইসলাম । উনি নিজেকে একটি বিখ্যাত  গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।
ফারুক হোসেন কিছুটা চিন্তিতভাবে বললেন,
----ঠিক আছে পাঠিয়ে দাও।
তাহের মাহমুদ ফারুক হোসেনের কেবিনেই ছিলেন। ফারুক হোসেনের কপালে চিন্তার রেখা দেখে জিজ্ঞেস করলেন,
----কী ব্যাপার? কে এসেছে?
----একজন গোয়েন্দা অফিসার।
----গোয়েন্দা অফিসার! এখানে কেন?
বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন তাহের মাহমুদ।
চলবে

©নিভৃতা

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:২৩
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×