এই উপমহাদেশে বৈদেশিক নীতি বা কূটনীতির পরিকল্পনা, প্রক্রিয়া বা চর্চা কেমন হবে তার জন্য পাকিস্তান-ভারত'র কূটনীতি ও যুদ্ধগুলো এই অঞ্চলের প্রতিটি দেশের জন্য অবশ্য পাঠ্য এক বড় অধ্যায়।
সরল সারাংশ হচ্ছে ভারত তার সামরীক শক্তি যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ব্যবহার করেছে শতভাগ কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। আর পাকিস্তান তার সামরীক শক্তির শতভাগ প্রয়োগ করেছে কূটনৈতিক দেউলীয়াপনা নিয়ে।
ফলাফল আমরা সবাই এখন দেখছি। বিশ্বে শক্তিশালী দেশ হিসাবে ভারত ও পাকিস্তানের কার কি অবস্থান তার আর বিষদ ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
পাকিস্তান তার পূ.পাকিস্তানকে হারাল, কাশ্মীর কার্যত ভারতের ক্রীড়নক, এখন ক্রমান্বয়ে বেলুচিস্থান ও ফ্রন্টিয়ারে গোলযোগ ভালভাবেই দানা বাঁধছে।
তো আমাদেরও শীক্ষা নিতে হবে। ভারতের সাথে আমাদের আচরন, পদক্ষেপ কিরকম হবে বা হওয়া প্রয়োজন। আমার ছোট্ট মাথায় যা ধরছে তা হল ভারত খুব পরিকল্পনা মাফিক নানা উস্কানিমমূলক আচরন করছে এবং আরো করবে। যেমনঃ
- সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা যা আন্তর্জাতিক আইনের চোখে বৈধ, কিন্তু সহজেই এড়িয়ে যেতে পারত এবং কোন বন্ধুপ্রতিম দেশ এ আচরন করে না।
- গো-হত্যা নিষিদ্ধকরন, অথচ ভারতই বহীর্বিশ্বে বড় গরুর মাংস সরবরাহকারী দেশ।
- রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র-স্থাপনা প্রক্রীয়া।
- ভারতে মুসলমানদের কুরবানী নিষিদ্ধকরন।
এরকম নানাভাবে ভারত বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের মানসিকতা ও ধর্মীয় অনুভুতিতে খোঁচাচ্ছে। বাংলাদেশের ডিপ্লোম্যাটিক-টলারেন্স-লেভেলটা'কে শূণ্যে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
ভারত সর্বোতভাবেই চাইছে বাংলাদেশ পাকিস্তানের মত উত্তেজিত হয়ে কূটনৈতিক ফাঁদে পা দিক। বাংলাদেশকে ভৌগলিকভাবে ভারত পারতপক্ষে দখল করবে না; সেটা বরং তাদের জন্য প্রচুর ঝামেলাপূর্ণ। কিন্তু ২০ কোটি ভোক্তার এই বাজারটার দখল তাদের খুবই দরকার, খুবই!
তাই ভারত নানা প্রকার উস্কানীমূলক পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে এবং নিবে যাতে আমাদের "জিহাদী" রক্ত টগবগ করে ফুটে। আর সেই টগবগানী থেকে আমরা মূর্খের মত এমন কোন কাজ করি যার ফলে ভারত বিশ্বকে উছিলা হিসাবে দেখাতে পারে কেন তারা আমাদের আভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে।
ওখানে কুরবানী দেয়া বন্ধ-ঘোষনায় আমাদের কিছু "জিহাদী" ভাই প্রচার শুরু করেছেন - আমরা এখানে পূজা বন্ধ করে দেই।
ভাইরে, দেশের এই ৯/১০% সনাতন ধর্মীর পূজা বন্ধতে ভারত সরকারে না আছে কোন মাথা-ব্যাথা, না কোন দরদ। কিন্তু বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য এক মোক্ষোম ও বড় কারন।
এখন করতে হবে কি?
প্রথমেই মাথাকে রাখতে হবে ঠান্ডা, আর অন্য শক্তিশালী দেশগুলোর সাথে তৈরী করতে হবে আরো গাড় সম্পর্ক।
বিশ্বের সামরীক ও অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর সাথে আমাদের কূটনৈতিক-বন্ধুত্ব করতে হবে আরো গভীর ও স্বার্থ-সংস্লিষ্ট।
প্রতিবেশী, শক্তিশালী, বুদ্ধিমান রাষ্ট্রের সাথে চলতে হলে কূটনৈতিক এবং একমাত্র কূটনৈতিক শক্তিতেই শক্তিশালী হইতে হইবে। মাথা গরম কোন কিছু করলে, পাকিস্তানই আমাদের সামনে বড় উদাহরণ।
লেখাটা কাপুরোষিত সন্দেহ নেই, কিন্তু কূটিল, শক্তিশালী প্রতিবেশীর বীপরিতে ২০ কোটি জনগণকে চলতে হলে আমাদেরকেও হতে হবে চরম কৌশুলী।
[f/zazabormon]
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




