বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে টস জিতেও ফিল্ডিং নিয়েছিলেন টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান। সেই ম্যাচে পরাজিত হয় টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তাই ছিলেন ভীষন চাপে।
গতকাল আইরিশদের বিরুদ্ধে টাইগারদের টপ অর্ডার ভাল করলেও মিডল ও লোয়ার অর্ডার তেমন ভাল করেনি। তাহলে কি টাইগাররা দায়িত্বহীন ব্যাটিং করছেন_এমন প্রশ্ন অনেক ক্রিকেট ভক্তের। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন তাহলে এর পেছনে কি অন্য কিছু আছে? সাকিব-তামিমরা কি কোনো অশুভ চক্রের শিকার হয়েছেন? কোনো প্রলোভনে পড়েছেন? হয়তো সে কারণেই স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারছেন না তারা। ক্রিকেটামোদীদের নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যে গতকাল শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শকদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে দুই টাইগার গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। তারা কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে কথা বলছেন, কি করছেন, সব কিছুর ওপরই নজর রাখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সহসভাপতিদের একজন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিশ্বকাপে জুয়াড়িদের তৎপরতার ব্যাপারে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) আমাদের জানিয়েছে। ইতোমধ্যে ২৫ জুয়াড়িকে শনাক্ত করে তাদের ছবি ও নামের তালিকা আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিশ্বকাপ চলাকালে জুয়াড়িদের বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, জুয়াড়িদের ব্যাপারে নির্দেশনা এলেও কোনো ক্রিকেটারের বিষয় আমরা জানি না। বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের সঙ্গে জুয়াড়িদের যোগাযোগ আছে বলে শুনিনি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির আরেক কর্মকর্তা বলেন, জুয়াড়িদের সঙ্গে ক্রিকেটারদের জড়িত থাকার বিষয়টি যদি সত্যি হয় তাহলে কারও নাম প্রকাশ করা যাবে না। কারণ পুরো ব্যাপারটি অত্যন্ত গোপনে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এদিকে উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের দুই তারকা বোলারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের একজন পেসার ও এক স্পিনার নাকি জুয়াড়িদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন_এমন অভিযোগ তুলেছে সে দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলো। এ কারণে টাইগারদের কেউ কেউ জুয়াড়ি বা বাজিকরদের খপ্পরে পড়েছেন বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। কারণ কিছুদিন আগে পাকিস্তানের তিন তারকা ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ উঠে। তখন কয়েকজন টাইগার মুখ খুলেছিলেন। তামিম, সাকিব ও রাজ্জাকরা বলেছিলেন, তাদেরও নাকি বাজিকররা বিভিন্ন সময় টাকার বিনিময়ে পাতানো ম্যাচ খেলার জন্য প্রলোভন দেখায়।
ক্রিকেটকে কলুষিত করতে দীর্ঘদিন ধরেই তৎপর জুয়াড়িরা। তারা বিভিন্ন সময় ক্রিকেটারদের হাত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বাজির মাধ্যমে। এই বিশ্বকাপেও তারা তৎপর। অসমর্থিত বিভিন্ন সূত্র বলছে, জুয়াড়িরা ইতোমধ্যে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দেশগুলোর কোনো কোনো ক্রিকেটারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কারও কারও সঙ্গে নাকি তাদের যোগাযোগও হয়েছে।
আইসিসি জুয়াড়িদের ব্যাপারে বরাবরই সজাগ। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি ইতোমধ্যে ২৫ জন জুয়াড়িকে শনাক্ত করে ছবিসহ তাদের নামের তালিকা বিশ্বকাপের তিন আয়োজক বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার কাছে পাঠিয়েছে। জানা গেছে, বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার অনেক আগেই অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে কানাডা, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড ও কেনিয়া বাদে বাকি ক্রিকেটারদের একটি তালিকাও তৈরি করেছে তারা।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররা রয়েছেন এ তালিকায়। যাদের ওপর জুয়াড়িদের দৃষ্টি রয়েছে এ রকম ক্রিকেটাররাই এখানে জায়গা পেয়েছেন। তালিকাভুক্ত ক্রিকেটারদের ওপর নজর রাখার জন্য তিন আয়োজককেই নির্দেশ দিয়েছে আইসিসি।
সূত্রঃ হলিউড বাংলা নিউজ

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




