somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অফিস পলিটিক্স থেকে সাবধান !

০২ রা মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভিলেজ পলিটিক্সের সঙ্গে কম-বেশি সবাই পরিচিত। পাশাপাশি বুঝতে পারি এর খারাপ ও ভয়াবহ পরিণাম। এটি এখন আর নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ নেই। ছড়িয়ে পড়ছে এর কালো থাবা। ভিলেজ পেরিয়ে কর্পোরেট জগতের অফিসগুলোতে ঢুকে পড়ে এটি নাম ধারণ করেছে অফিস পলিটিক্স। একে অন্যকে ঘায়েল করতে এটি ব্যবহার হচ্ছে। কিভাবে অফিস পলিটিক্সের কালো ছোবলের হাত থেকে রক্ষা পাবেন তা নিয়ে রইল কিছু পরামর্শ।

চাকরিজীবীদের জন্য 'সেকেন্ড হোম' হলো অফিস। প্রত্যেক পরিবারে ভালোবাসার পাশাপাশি অশান্তি, মনোমালিন্য এবং ঝগড়া-বিবাদও বিরাজ করে। সৌহার্দ্যের সঙ্গে সমান্তরালে চলতে থাকে সাংসারিক সমস্যাগুলো। ঠিক তেমনি অফিসের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ঘটে। এই ধরুন জামানের কথা। জামান প্রাইভেট ফার্মের প্রশাসন বিভাগে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত। অফিস শেষে বাড়তি কাজ করার পরও বসের সন্তুষ্টি আদায় করতে পারে না সে। ইনক্রিমেন্টের সময় দেখা গেল তার আড্ডাবাজ সহকর্মী সোহেল টাকার অংকে বেশ এগিয়ে। তাছাড়া অতিরিক্ত পরিশ্রম করলেও জামানের যথাযথ মূল্যায়ন করে না অফিস। অথচ সোহেলের মতো অন্যান্য সহকর্মীরা কম পরিশ্রম করেও মাস শেষে বেতন আদায়ে তার চেয়ে এগিয়ে। জামান নিজেই জানে না, সে অফিস পলিটিক্সের শিকার। তার মতো অনেকেই আছেন যারা সংসারের হাজারো ঝুটঝামেলা সামলে অফিস পলিটিক্স নিয়ে মাথা ঘামাতে গিয়ে হিমশিম খান। আবার অনেকেই আছেন যারা এটাকে রুটিন জবের একঘেঁয়েমি থেকে খানিকটা মুখবদল হিসেবে গণ্য করেন। তবে সর্বশ্রেষ্ঠ উপায় বোধ হয় মধ্যপন্থা অবলম্বন করা।

সারভাইভ্যাল স্ট্র্যাটেজি

অফিস পলিটিক্সের কবল থেকে বাঁচতে আড্ডা দেওয়া কি বন্ধ করে দিতে হবে? না, সেটা সম্ভব নয়। তবে আড্ডাকে মনোরঞ্জন থেকে বেশি কিছু ভাবা ঠিক নয়। এ ব্যাপারে কয়েকটি জরুরি কথা মনে রাখলে অফিসের সময়টুকু তো বটেই, পারিবারিক জীবনও চিন্তামুক্ত কাটবে। এগিয়ে যাবেন জীবনের সঙ্গে তাল মিলেয়ে।

গসিপ করার সময় মনে রাখুন কোনো সহকর্মীর নামে কুৎসা ছড়ালে, নিজেও কুৎসার শিকার হতে দেরি হয় না। সহকর্মী, ঊর্ধ্বতন বা অধস্তন কারও সম্বন্ধে কোনো বিরূপ মন্তব্য করার আগে অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করুন।

বন্ধু চিনে নিন সুকৌশলে। শুধু আগ্রহ ও ইচ্ছা যথেষ্ট নয়। যারা অন্যের সাফল্যকে সন্দেহের চোখে দেখেন, শো অফ করতে ভালোবাসেন বা অন্যের কৃতিত্ব নিজে নেন, তাদের এড়িয়ে চলুন। তবে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করুন সবার সঙ্গেই।

প্রত্যেক অফিসের একটা নিজস্ব ওয়ার্ক কালচার থাকে, যেটা আপনার মনমতো নাও হতে পারে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য নিয়মের মতো এই নির্দিষ্ট ওয়ার্ক কালচার মেনে চলাও আপনার দায়িত্ব। যদি এতে কোনো গলদ থাকে, যা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করছে, তাহলে কানাকানি না করে সরাসরি কর্তৃপক্ষকে জানান। কারও নামে অভিযোগ না করে, অসুবিধার ওপরই জোর দিন।

সহকর্মীদের ব্যক্তিগত জীবন, সম্পর্ক ও অফিস সংক্রান্ত আলোচনায় টেনে আনবেন না। এফিসিয়েন্সি এবং পারফরম্যান্স দিয়েই তাকে বিচার করুন।

অফিসে মতানৈক্য দেখা দেবেই, তবে ছোটখাটো গোলমাল কথাবার্তার মাধ্যমে সমাধান করে ফেলুন। প্রয়োজনে অন্য সহকর্মীর সাহায্য নিতে পারেন। তবে সামান্য মনোমালিন্য যেন পরে কুৎসিত রূপ না পায়, সে দিকে লক্ষ্য রাখবেন।

মিটিংয়ের জরুরি ফাইল নখদর্পণে রাখুন। প্রয়োজনে কোনো সেফটি লকারে রেখে যান। প্রতিপক্ষ চাইবে আপনার ক্ষতি করতে। হয়তো জরুরি ফাইলটি গায়েব করে ফেলতে পারে। এতে কর্তৃপক্ষের কাছে আপনাকে জবাবদিহি করতে হতে পারে।

প্রতিটি কর্পোরেট হাউসে বিভিন্ন গ্রুপিং থাকে। সবাই চেষ্টা করবে নিজ নিজ গ্রুপকে কাছে টানতে। এসব এড়িয়ে চলাই ভালো। সবচেয়ে ভালো নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাওয়া। কাজের জন্য এসেছেন। কোনো গ্রুপিং বা অফিস পলিটিক্স করতে আসেননি। মনে রাখবেন আপনি যদি কারও বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন তাহলে আপনাকেও একদিন এর শিকার হতে হবে। িকাজ করার সময় বস ডাকলে অবশ্যই পাশের সহকর্মীকে আপনার টেবিলের দিকে নজর রাখতে বলবেন। কারণ আপনার অনুপস্থিতিতে প্রতিপক্ষ চাইবে কাজের ব্যাঘাত ঘটাতে। হতে পারে তারা কোনো ফাইল মিসিং করতে পারে আপনার কম্পিউটার থেকে।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কখনো তোষামোদ করবেন না। অনেক সময় এ কারণে সহকর্মীরা আপনাকে ঈর্ষা করতে পারেন। তা থেকেই তারা আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে পারে।

পরচর্চা বা পরনিন্দা থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ এসব শত্রু বাড়াবে। দিন যত যাবে তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতাও বেড়ে যাবে। জড়িয়ে যেতে পারেন বিভিন্ন মানসিক চাপে ও অফিসিয়াল ব্যস্ততায়। এসব ঝামেলা তখন বাড়বে যখন আপনার প্রতিপক্ষ সৃষ্টি হবে। তাই পরচর্চা করে প্রতিপক্ষ বাড়াবেন না।

অফিস ত্যাগ করার সময় অবশ্যই কম্পিউটার অফ করতে ভুলবেন না। কারণ পরক্ষণেই আপনার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ চলে যেতে পারে। দেখাতে পারে আপনার অবহেলা। এসব ছোটখাটো বিষয় থেকেই সৃষ্টি হতে পারে আপনার বিরুদ্ধে অফিস পলিটিক্স নামক কালো ছোবল।


সূত্রঃ বাংলা নিউজ
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০



মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×