somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলিম জাতিকে মৌলবাদী ও সন্ত্রাসী বলা হয় কেন !

২৩ শে মার্চ, ২০১১ রাত ৮:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সমসাময়িক আলোচনা কিংবা ধর্মসংক্রান্ত আলোচনায় সারসরি হোক কিংবা অন্যভাবে, মুসলিমদের প্রতি এই অভিযোগ উত্থিত হয়। ইসলাম ও মুসলিম সম্পর্কে সব ধরনের প্রচারনা মাধ্যমগুলোতে এই দৃষ্টিভঙ্গী গভীরভাবে বদ্ধমূল যদিও তা সত্য নয়। যার ফলশ্র“তিতে এই মিথ্যা প্রচারনা মুসলিম জাতির বিরুদ্ধে বিদ্বেষের জন্ম দেয়। উদাহরনস্বরূপ বলা যায়, আমেরিকার ওকলাহমায় যখন বোমা বিস্ফোরিত হয়, তখন আমেরিকার প্রচার মাধ্যমগুলো একতরফাভাবে মুসলিম বিদ্বেষী হয়ে একে মধ্যপ্রাচ্যের ষড়যন্ত্ররূপে আখ্যায়িত করে। পরবর্তীতে আমেরিকার সেনাবাহিনীর একজন সৈন্য এই ঘটনায় অপরাধী হিসেবে প্রমানিত হয়। মুসলিম জাতিকে এইসকল অপরাধে অভিযুক্ত করার আগে মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে সংজ্ঞায়িত করা দরকার।

মৌলবাদীতা: মৌলবাদী তাকেই বলা হয় যে নাকি একটি মৌলিক ধারণা বা বিশ্বাসকে সম্পূর্নভাবে অণুসরন করে। একজন ব্যক্তি যদি সুচিকিৎসক হতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই চিকিৎসাশাস্ত্রের জ্ঞানকে আক্ষরিকভাবে ও গভীরভাবে মেনে চলতে হবে। একজন ব্যাক্তি গনিতবিদ হতে চাইলে তাকে অবশ্যই মৌলিক গনিতশাস্ত্র বিশ্বাস করতে হবে ও তা মেনে চলতে হবে। অর্থাৎ তাকে অংকশাস্ত্রের ক্ষেত্রে একজন মৌলবাদী হতে হবে। ভাল বিজ্ঞানী হবার জন্য একজন ব্যক্তির উচিৎ বিজ্ঞানের মৌলিক সূত্র ও বিষয়গুলো জানা, অণুসরন করা এবং ব্যক্তিজীবনে তার প্রয়োগ করা

প্রত্যেক মৌলবাদীই এক নয়:
সকল মৌলবাদীকেই একই কাতারে শামিল করা উচিৎ নয়। এবং কেউ সকল মৌলবাদীকে একতরফাভাবে ভালো কিংবা খারাপ কোনটাই বলতে পারবে না। একজন মৌলবাদী কোন বিশ্বাস বা নীতিবোধ মেনে চলে তার উপর ভিত্তি করে তার শ্রেণীবিভাগ করা হয়। একজন মৌলবাদী চোর বা ডাকাত তার কাজের মাধ্যমে সমাজের ক্ষতিসাধন করে এবং স্বভাবতই তা অনভিপ্রেত। কিন্তু অপরদিকে একজন মৌলবাদী চিকিৎসক সমাজের কল্যানের জন্য আত্মনিয়োগ করেন। তাই তার মৌলবাদীতা কাঙ্খিত।

একজন মুসলিম মৌলবাদী হিসেবে আমি গর্বিত:
আমি একজন মৌলবাদী মুসলিম কারণ আল্লাহর করুনায় আমি ইসলামের মৌলিক বিধি-নিষেধ জানি ও বুঝি এবং তা মানার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করি। একজন প্রকৃত মুসলিম মৌলবাদী হবার কারনে কখনো লজ্জিত হয় না। আমি একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে গর্বিত, কারণ আমি জানি যে ইসলাম সমগ্র জগতের এবং মানবজাতির জন্য কল্যান বয়ে এনেছে। ইসলামের এমনি কোন বিধান নেই যা সামগ্রীকভাবে মানুষের ক্ষতি করে বা মানব কল্যানের বিপক্ষে যায়। অনেক লোক ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারনা পোষন করে এবং ইসলামের কিছু নিয়ম বা শিক্ষাকে পক্ষপাতদুষ্ট ও ভুল বলে মনে করে। ইসলাম সম্পর্কে অপর্যাপ্ত ও ভুল জ্ঞানের কারনেই এমনটি হয়ে থাকে। কেউ যদি উন্মুক্ত মন নিয়ে গভীরভাবে ইসলামের নীতিমালা নিয়ে গবেষনা করে তাহলে তার অস্বীকার কারা উপায় থাকবেনা যে ইসলাম ব্যক্তি জীবনের এবং সামগ্রীক জীবনের জন্য কল্যাণকর জীবনব্যনস্থা।

মৌলবাদীতার আভিধানিক সংজ্ঞা:
’ওয়েবস্টার’ অভিধান অনুসারে ’মৌলবাদীতা’ হচ্ছে একটি আন্দোলন যা আমেরিকার প্রটেস্ট্যান্ট কর্তৃক বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভিক লগ্নে শুরু হয়েছিল। এই আন্দোলন ছিল আধুনিকতার বিরুদ্ধে এবং উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বাস, নৈতিকতা ও ইতিহাস হিসেবে বাইবেল সত্য ও চিরন্তন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত রাখা। এই আন্দোলন বাইবেলকে স্রষ্টা থেকে আগত ধর্মগ্রন্থ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত রাখতে চেয়েছিল। অতএব মৌলবাদীতা আসলে একদল ব্যক্তির উপর আখ্যায়িত হয় যারা কিনা বাইবেলকে সকল ভুলের উর্ধ্বে স্রষ্টার নিজস্ব মুখনিঃসৃত বানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত রাখতে চেয়েছিল।

অক্সফোর্ড অভিধান অণুসারে মৌলবাদীতা বলতে প্রাচীন কোন ধর্ম বা কোন বিশ্বাসকে দৃঢ়তার সাথে ধারন করা বোঝায়- উল্লেখযোগ্যভাবে ইসলাম ধর্ম।
আজকে যখনই কোন ব্যাক্তি মৌলবাদী শব্দটি ব্যবহার করে তখনই তার মানসপটে একজন মুসলিম ব্যক্তির কথা মনে হয় যে কিনা সন্ত্রাসী।

প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির সন্ত্রাসী হওয়া উচিৎ: একজন সন্ত্রাসী হচ্ছে সেই ব্যক্তি যে কিনা ত্রাসের সৃষ্টি করে। যে মুহুর্তে একজন চোর পুলিশকে দেখে তখনই সে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়। একজন পুলিশ কর্মকর্তা একজন ডাকাতের চোখে সন্ত্রাসী। একই ভাবে প্রত্যেক অসামাজিক কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের (চোর, ডাকাত, ধর্ষক) কাছে একজন মুসলিমের সন্ত্রাসী হওয়া উচিৎ। যখনই এসকল দু®কৃতিকারী ব্যক্তি কোন মুসলিমকে দেখবে তখনই তার ভয় পাওয়া উচিৎ। এটি সত্য যে সন্ত্রাসী শব্দটি তাদের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয় যারা সাধারন মানুষের মধ্যে ত্রাসের সৃষ্টি করে। কিন্তু একজন প্রকৃত মুসলিমের উচিৎ অসামাজিক কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের নিকট সন্ত্রাসী হওয়া এবং সাধারন নিরীহ জনগনের কাছে এই রূপ প্রদর্শন করা উচিৎ নয়। আসলে একজন সত্যিকারের মুসলিম সমাজের নিরীহ মানুষের নিকট শান্তির উৎস হিসেবে অবস্থান করতে হবে।
একই ব্যক্তিকে একই কাজের জন্য বিভিন্ন নামে; অর্থাৎ সন্ত্রাসী ও দেশপ্রেমী হিসেবে আখ্যায়িত করা: বৃটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পূর্বে ভারতের কিছু মুক্তিযোদ্ধাদের বৃটিশ সরকার সন্ত্রাসী রূপে আখ্যায়িত করে; যদিও তারা কোন নৃশংস কাজে জড়িত ছিল না। একই কাজের জন্য এইসকল ব্যক্তিদের ভারতবাসীরা ভালবাসে এবং তাদেরকে দেশপ্রেমিক হিসেবে সম্মান করে। এভাবে একই কাজের জন্য একই ব্যক্তিকে দুই ধরনের পরিচয় বহন করতে হচ্ছে। একদল তাদেরকে সন্ত্রাসী বলছে এবং অপরদল তাদেরকে দেশপ্রেমিক বলছে। যারা বিশ্বাস করে যে বৃটিশদের অধিকার রয়েছে ভারত শাসন করার; তারা এইসকল লোককে সন্ত্রাসী ভাবে এবং যারা মনে করে ভারত শাসনের ক্ষেত্রে বৃটিশদের কোন অধিকার নেই তাদের দৃষ্টিতে এরা দেশপ্রেমিক। এর থেকে বোঝা যায় একজন ব্যক্তিকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করার আগে নিরপেক্ষভাবে তার বক্তব্য শোনা উচিৎ এবং তার কার্যাবলী সম্পর্কে নিরপেক্ষ অণুসন্ধান করা উচিৎ। তারপর তার ব্যাপারে যেই রায় হয় তা সঠিক বলে গন্য করা উচিৎ।

ইসলাম শব্দের অর্থ হচ্ছে শান্তি: ইসলাম শব্দটি সালাম থেকে এসেছে যার অর্থ হচ্ছে শান্তি। এই ধর্মের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে শান্তি এবং এর প্রকৃত অনুসারীরা বিশ্বব্যাপি শান্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। একই ভাবে প্রত্যেক মুসলিম হচ্ছে মৌলবাদী যারা তাদের শান্তির ধর্ম ইসলামের মৌলিক নীতিমালা আন্তরিকভাবে মেনে চলে। সে শুধুমাত্র সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অসমাজিক কাজে লিপ্ত ব্যাক্তিদের কাছে সন্ত্রাসীরূপে আবির্ভূত হয়।

ইসলাম কি তরবারীর মাধ্যমে প্রসার লাভ করেছিল? অনেকেই প্রশ্ন করে যে ইসলামকে শান্তির ধর্ম কিভাবে বলা যায় যখন তা তরবারীর মাধ্যমে প্রসার লাভ করেছিল? অমুসলিমদের অনেকেই এই অভিযোগ করেন যে, ক্ষমতার বলে ইসলাম প্রচার না করলে সারা বিশ্বে কোটি কোটি মুসলমান থাকা সম্ভব নয়। নিম্নোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারব যে তরবারীর শক্তি নয় বরং সত্য, বিজ্ঞান ও যৌক্তিক জ্ঞানের মাধ্যমেই ইসলাম দ্রুততার সাথে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল।

ইসলাম অর্থ হচ্ছে শান্তি:
ইসলাম ’সালামা’ শব্দ হতে উদ্ভূত যার অর্থ হচ্ছে শান্তি। এর আরেকটি অর্থ হচ্ছে আল্লাহর (সুবঃ) কাছে আত্মসমর্পন করা। তাই ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম যা মহান স্রষ্টা আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে আত্মসমর্পনের মাধ্যমে অর্জন করা যায়।

কিছুক্ষেত্রে শান্তি বজায় রাখার জন্য শক্তির প্রয়োগ প্রয়োজন: পৃথিবীর প্রত্যেক মানুষই বিশ্বে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার পক্ষে। বিশ্বে এমন অনেক মানুষ আছে যারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য শান্তি বিনষ্ট করে। তাই মাঝে মাঝে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য শক্তি প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। ঠিক একই কারনে কোন দেশে অসামাজিক কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের সেই কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য পুলিশ তাদের উপর শক্তি প্রয়োগ করে। ইসলাম শান্তির জন্য। সেই সাথে বিশ্বের যেখানেই নির্যাতন পরিলক্ষিত হয় ইসলাম তার অণুসরীদের সেক্ষেত্রে যুদ্ধ করতে বাধ্য করে। নির্যাতনের বিপক্ষে সংগ্রাম করার ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে শক্তি প্রয়োগের প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়। ইসলামে শুধুমাত্র শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখার জন্যই শক্তি প্রয়োগ করা হয়।

ঐতিহাসিক ডি ল্যাসি ও ল্যরির বক্তব্য: ’ইসলাম তলোয়ারের মাধ্যমে প্রসার লাভ করেছে’ এই বক্তব্যের সুন্দর বিরোধিতা করেছেন ঐতিহাসিক ডি ল্যাসি ও ল্যরি তার ’ইসলাম এন্ড ক্রস রোড’ বইয়ের ৮ম পৃষ্ঠায়। ইতিহাস এটি প্রমান করেছে যে মুসলিমরা যে তলোয়ারের মাধ্যমে শক্তি প্রয়োগ করে বিভিন্ন জাতির মধ্যে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছে তা একটি ভ্রান্ত চিন্তাধারা যা কিনা বিভিন্ন ঐতিহাসিক বার বার বলে থাকে।

মুসলিম জাতির ৮০০ বছর স্পেন শাসন: মুসলিমরা ৮০০ বছর ধরে স্পেন শাসন করেছে। পরবর্তীতে খৃষ্টান ক্রুসেডাররা স্পেনে আসে এবং মুসলিমদের উচ্ছেদ করে। তারপর স্পেনে এমন কোন মুসলিম ছিল না যারা প্রকাশ্যে আযান দিতে পারত।
১৪ মিলিয়ন আরব হচ্ছে ’কোপটিক’ খৃষ্টান: মুসলিমরা প্রায় ১৪০০ বছর ধরে আরব শাসন করেছে। পরে কিছু সময়ের জন্য বৃটিশ ও কিছু সময়ের জন্য ফরাসীরা শাসন করেছে। সামগ্রীকভাবে মুসলিমরা ১৪০০ বছর শাসন করেছে। তথাপি এখনও আরবে এমন ১৪ মিলিয়ন আরব রয়েছে যারা ’কোপটিক’ খৃষ্টান অর্থাৎ খ্রীষ্টান ধর্মের শুরু থেকেই তারা খৃষ্টান হিসেবে রয়েছে। যদি মুসলিমরা তরবারীর মাধ্যমেই ইসলাম প্রচার করত তাহলে আরবে একজন খৃষ্টানও থাকত না।

ভারতের ৮০ শতাংশের অধিকাংশ লোকই অমুসলিম: মুসলিম জাতি হাজার বছরের উপর ভারত শাসন করেছে। যদি তারা চাইত তাহলে ভারতের সকল অমুসলিমকে ইসলাম ধর্মে আনতে পারত। বর্তমানে ভারতের ৮০% জনগোষ্ঠী অমুসলিম। এইসকল অমুসলিম ভারতীয়রা এটাই প্রমান করে যে ইসলাম তরবারীর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় নি।

ইন্দোনেশিয়া ও মালয়শিয়া: বিশ্বের মুসলিম জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থান করছে। মালয়শিয়ার অধিকাংশ জনগন মুসলিম। আপনারা যে কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়শিয়ায় কোন মুসলিম সেনাবাহিনী গিয়েছিল?

আফ্রিকার পূর্ব উপকূল: একই ভাবে ইসলাম আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে বিস্তার লাভ করেছিল। আপনারা যে কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, ইসলাম যদি সত্যই তরবারীর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে কোন মুসলিম সেনাবহর গিয়েছিল?

টমাস কার্লাইল: বিখ্যাত ঐতিহাসিক টমাস কার্লাইল তার ’বীরও বীরের বন্দনা’ গ্রন্থে ইসলামের প্রসার সংক্রান্ত ভুল ধারণার ব্যাপারে বলেন, ”সত্যই তলোয়ার, কিন্তু কোথায় পাবে সেই তলোয়ার? প্রত্যেক নতুন চেতনাই কেবলমাত্র একজন মানুষের মননের ক্ষুদ্র পরিসরে বেড়ে উঠে - আর সেখানেই লালিত পালিত হয়। সারা পৃথিবীর সকল মানুষের বিপক্ষে সেই একজনই তখন রুখে দাঁড়ায়। একটি তরবারী নিয়ে তখন তার পক্ষে সারা পৃথিবীর বিরুদ্ধে লড়তে যাওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। তোমার নিশ্চয়ই তোমার নিজের তরবারী খুঁজে পেতে হবে! সারকথা, সেই চেতনা নিজেই তখন তাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”

ইসলাম গ্রহনের ক্ষেত্রে কোন জবরদস্তি নেই: কোন তরবারীর মাধ্যমে ইসলাম বিস্তার লাভ করেছে? যদি মুসলিমরা তরবারীর মাধ্যমেই তা করতে চাইত তাহলেও তারা সেটা করতে পারত না। কারণ কুরানে আছে:
”দ্বীন গ্রহনের ক্ষেত্রে কোন জবরদস্তি নেই। সত্য দ্বীন ভ্রান্ত আকীদা ও বিশ্বাস থেকে পৃথক হয়ে গেছে।” [বাকারা ২:২৫৬]

জ্ঞানের তরবারী: ইসলাম যেই তরবারীর মাধ্যমে মানুষের হৃদয়-মন জয় করেছে তা হচ্ছে জ্ঞান। কুরানে এই ব্যাপারে বলা হয়েছে:
”মানুষকে আল্লাহর দিকে আহ্বান কর জ্ঞান ও সুন্দর কথার মাধ্যমে এবং তাদের সাথে উত্তম ও বদন্যতার সাথে যৌক্তিক কথা বল।” [১৬:১২৫]

১৯৮৬ সালের ’আলমানাক’ রিডার্স ডাইজেস্ট এর একটি নিবন্ধে ১৯৩৪ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত - এই অর্ধশতাবদ্ধীতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রধান ধর্ম গুলোর প্রসারের উপর একটি পরিসংখ্যান দেয়া হয়। এই নিবন্ধটি ’দ্য প্লেইন ট্রুথ’ ম্যাগাজিনেও প্রকাশিত হয়। সবার উপরে ছিল ইসলাম, যার প্রসার হার ছিল ২৩৫% এবং খৃষ্টান ধর্ম, যার প্রসার হার ছিল মাত্র ৪৭%। কেউ কি বলতে পারবে যে এই শতকের কোন যুদ্ধ মানুষকে ইসলাম গ্রহনে উদ্বুদ্ধ করেছে?

ইসলাম আমেরিক এবং ইউরোপে সবচেয়ে দ্রুত প্রসার পাচ্ছে: আজ আমেরিকায় ও ইউরোপে সবচেয়ে দ্রুত প্রসার পাওয়া ধর্মের নাম ইসলাম। কোন তরবারী পশ্চিমাদের ইসলাম গ্রহনে বাধ্য করছে?

ডঃ জোসেফ এডাম পিয়ারসন বাস্তবিকই সত্য বলেছেন, ”যারা এই মনে করে ভয় পায় যে, কবে যেন আরবদের হাতে আনবিন বোমা চলে আসে!, তারা এইটুকু বোঝে না যে, ইসলামের বোমা ইতিমধ্যেই বিস্ফোরিত হয়ে গেছে। মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মের সাথে সাথেই তা বিস্ফোরিত হয়েছে।”



লেকচারঃ ডঃ জাকির নায়েক
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১১ রাত ৯:০২
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০



মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×