নিশ্চয়ই আমি কোরআন বরকতময় রাতে অবতীর্ণ করেছি। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এ রাতে আমারই আদেশে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থির করা হয়। আমিই আপনার পাগলকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ ফেরেশতা পাঠিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বাজ্ঞ।
-সূরা দোখান, আয়াতঃ ৩-৬
পবিত্র কোরআনের ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ বলতে ‘শবেবরাত’কে বোঝানো হয়েছে বলে মনে করেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাহাবায়ে কেরাম। তাদের উল্লেখযোগ্য হলেন- প্রখ্যাত মুফাসসির হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা·), হজরত আবু হুরায়রা (রা·), হজরত ইকরামা (রা·) প্রমুখ। একইভাবে বহুসংখ্যক তাবেয়ীও এরকম অভিমত পোষণ করেছেন। আবার অনেক সাহাবি ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ বলতে ‘শবেকদর’ বুঝিয়েছেন।
‘লাইলাতুল মুবারাকা’ বলতে উপরোল্লিখিত সাহাবায়ে কেরাম যেমন শবেবরাত বুঝিয়েছেন, একইভাবে তারা এই মহিমাময় রজনী চৌদ্দ শাবান বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা·) বলেছেন, ‘হা-মীম অর্থাৎ আল্লাহতায়ালা নির্ধারণ করে দিয়েছেন- কেয়ামত পর্যন্ত যা ঘটবে। সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ অর্থাৎ আল কোরআন, ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ হচ্ছে- শাবানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত, আর তা-ই লাইলাতুল বরাত।’
হজরত ইকরামা (রা·) বলেছেন, ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ বলতে শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ রাতকে বোঝানো হয়েছে।’
শবেবরাত যেহেতু চাঁদের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাই চান্দ্র মাসের হিসাবের ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। বছরের একটি মাত্র রাতকে শবেবরাত হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। সে রাত সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি ভিন্ন ভিন্ন দিনে ভিন্ন ভিন্ন দেশে শবেবরাত পালন করে কাঙ্ক্ষিত নেয়ামত ও ফজিলত লাভ করা যাবে না। কেননা, চাঁদ দেখা ও চান্দ্র মাসের হিসাবের ক্ষেত্রে দেশের ভৌগোলিক সীমারেখা কার্যকর নয়। কোন একজন মুসলমান চাঁদ দেখলে এবং সাক্ষ্য দিলে তবে সে সাক্ষ্য অনুযায়ী অন্যান্য মুসলমানের ওপর চান্দ্র মাসের হিসাব মোতাবেক শবেবরাত, রোজা, শবেকদর, ঈদ, আশুরা, ঈদে মিলাদুন্নবী ইত্যাদি পালন করা ওয়াজিব।
মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সংগঠন ওআইসি’র অঙ্গ সংস্থা ‘ইসলামী ফিকাহ একাডেমি’ ১৯৮৬ সালের ১১-১৬ অক্টোবর মোতাবেক ৮-১৩ সফর ১৪০৭ হিজরি আম্মানে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে ৬নং প্রস্তাবে ঘোষণা করে, ‘কোন দেশে নতুন চাঁদ দেখা গেলে অন্য দেশের মুসলমানদেরও তা-ই মেনে চলা দরকার। চন্দ্র উদয়ের স্থানের পার্থক্য বিবেচনার প্রয়োজন নেই। কেননা, হাদিসে বর্ণিত চাঁদ দেখামাত্র রোজা রাখার (অর্থাৎ রমজান শুরু করার) ও শাওয়ালের চাঁদ দেখে ঈদ করার আদেশ সর্বজনীন ও সবার জন্য প্রযোজ্য।’
অতএব শবেবরাতের অমূল্য সময় যাতে বৃথা নষ্ট না হয় সেদিকে সবার যত্নবান হওয়া উচিত। একই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে যেন, সারা রাতের নফল ইবাদত করতে গিয়ে কারও ফজরের নামাজ বাদ না যায়। যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে শবেবরাত পালন করাই হবে সৌভাগ্যের বিষয়।
http://articles.ourislam.org/articles/406/1/aaaaaa-aaaaa-aaa-aa-aaa/Page1.html
**************************

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






