somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নষ্ট সমাজ ব্যবস্থা ৩ঃ ৫ বছর পর ভিকটিম জীবিত আটক, খুন না হলেও স্বীকারোক্তি আদায় করেছিল ডিবি

৩১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবু সাঈদকে অপহরণ মামলায় ২০১৪ সালে এক নারীসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় তারা। জবানবন্দিতে চারজন বলে, শিশুটিকে বরিশালগামী লঞ্চ থেকে নদীতে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ ৫ বছর পর সেই অপহৃত শিশু আবু সাঈদকে (বর্তমানে কিশোর) জীবিত আটক করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে তার বাবা-মাকেও। তাহলে ‘কথিত ওই চার আসামি’ কীভাবে খুনের স্বীকারোক্তি দিলেন। ওই আসামিদের দাবি, পুলিশ চোখ বেঁধে তাদের পিটিয়েছে। এরপর মাটিতে ফেলে শরীরের ওপর উঠে পাড়াত। এভাবে ৮-১০ দিন চলার পর বাধ্য হয়ে পুলিশ যা শিখিয়ে দিয়েছে তাই বলেছি।

সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ৭ জুলাই মোহাম্মদ আজম তার পঞ্চম শ্রেণিপড়ুয়া ছেলে আবু সাঈদকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা করেন। এরপর অভিযোগ করেন, শিশু সাঈদকে অপহরণের দাবি করে গাইবান্ধার একটি প্রতারক চক্র তার কাছ থেকে মুক্তিপণ বাবদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপরও আবু সাঈদের সন্ধান মিলছিল না।

এদিকে আবু সাঈদকে উদ্ধারে কোনো কিনারা করতে পারছিল না পুলিশ। পরে মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তে নেমে গোয়েন্দা পুলিশ বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের বাসিন্দা আফজাল, সাইফুল, সোনিয়াসহ ৪ জনকে আটক করে। তাদের ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়। আদালতে তারা জানান, বরিশালগামী একটি লঞ্চ থেকে নদীতে ফেলে শিশু আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৫ বছর। বৃহস্পতিবার হঠাৎই নাটকীয় মোড় ঘুরল শিশু আবু সাঈদ অপহরণ ও হত্যা নাটকের।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পল্লবী জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার এসএম শামীম যুগান্তরকে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে আফজাল নামে একজন আমার কাছে কান্নাকাটি করতে করতে আসে। সে জানায়, একটি অপহরণ ও হত্যা মামলায় ৫ বছর ধরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সে ও তার পরিবার। যাকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় মামলা চলছে সে জীবিত আছে। বর্তমানে তার বাবা-মার সঙ্গে বিহঙ্গ পরিবহনের এমডি নাসির উদ্দিন খোকনের বাসায় এসেছে। এরই মধ্যে নাসির উদ্দিন খোকনও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ কথা জানার পর আমি তাকে পল্লবী থানায় জিডি করতে বলি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ কথিত অপহরণের পর ‘খুনের শিকার’ আবু সাঈদ, তার বাবা মোহাম্মদ আজম ও মাকে আটক করে। তাদের হাজারীবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পল্লবী থানার এসআই আবদুস শহীদ যুগান্তরকে বলেন, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পল্লবীর নাসির উদ্দিন খোকনের বাসা থেকে আবু সাঈদ, তার বাবা মোহাম্মদ আজম ও মাকে আমরা থানায় নিয়ে আসি।

বিহঙ্গ পরিবহনের এমডি নাসির উদ্দিন খোকন যুগান্তরকে বলেন, ২০১৪ সালের একটি অপহরণ ও হত্যা মামলায় আমার এলাকার ছেলে আফজাল, তার বোন সোনিয়া, ফুফাতো ভাই সাইফুল ও আরেক আত্মীয় শাহীন রাজিকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় বরিশালগামী অভিযান-৫ লঞ্চ থেকে নদীতে ফেলে শিশু আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়েছে।

আমি খবর নিয়ে জানতে পারি ওইদিন অভিযান-৫ লঞ্চটি ছেড়েই যায়নি। এতে আমার সন্দেহ হয়, বিষয়টি সাজানো। এ মামলায় সম্প্রতি সাক্ষী খলিলের মাধ্যমে বিষয়টি আপস-মীমাংসার প্রস্তাব দিচ্ছিল বাদীপক্ষ। এতে আমরা রাজি হই। আমার বাসা থেকে এসে ৫ লাখ টাকা নেয় খলিল ও আজম। আজম মানিকগঞ্জে বাড়ি কিনে বসবাস করছে। এরই মধ্যে জানতে পারি আজমের ছেলে আবু সাঈদ তাদের কাছেই আছে। আজম একটি পান দোকান করার জন্য আমার কাছে আরও এক লাখ টাকা চায়। টাকা দিলে সে মামলা মীমাংসা করবে বলে জানায়। আমি তাকে টাকা দিতে রাজি হই। আসার আগে বলি ছেলেকে আমার বাসায় নিয়ে এসো। ছেলেটাকে আমি দেখব। এরপর বৃহস্পতিবার বিকালে আজম, তার স্ত্রী ও ছেলে আবু সাঈদকে আমার বাসায় নিয়ে আসে। পরে আমি থানায় খবর দিয়ে তাদের পুলিশে দিই।

তিনি বলেন, কথিত অপহৃত আবু সাঈদ আমাদের কাছে, এমনকি পুলিশকেও জানিয়েছে, পড়াশোনার চাপ নিতে না পারায় সে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। বাসে উঠে প্রথমে গাবতলী ও পরে নবীনগর যায়। সেখান থেকে যায় শ্রীপুরে। সেখানে গাড়ির হেলপারী করত সে। গাড়িতেই থাকত সে। বাবা-মার কথা মনে পড়ায় একদিন সে বাসায় চলে আসে।

এ ঘটনায় কথিত সাঈদ হত্যা মামলার আসামিদের দাবি, একই পরিবারের ৩ জনসহ ৪ জনকে ডিবি কার্যালয়ে সাত দিন আটকে রেখে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করেছে। ভুক্তভোগী আফজাল বলেন, আমার বোন, বাবাকে গ্রাম থেকে ডিবি মনির তুলে এনে একটি মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। ৮-১০ দিন অত্যাচারের পর আমি তাদের কথা শুনতে বাধ্য হয়েছি। ভুক্তভোগী সোনিয়া বলেন, দুই ঘণ্টা পরপরই আমাদের মারত।
ভুক্তভোগী সাইফুল বলেন, চোখ বেঁধে পিটিয়েছে তবুও আমি স্বীকার করিনি। পরে আমাকে মাটিতে ফেলে পাড়িয়েছে। এরপর ব্যথায় আমাকে যা শিখিয়েছে তাই বলেছি। যে সময় মনে হয় আমাদের মারত।


এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এমন ঘটনা লজ্জাজনক। আদালতে আমি এ ব্যাপারে চলতি সপ্তাহেই জানাব, ভিকটিমকে পাওয়া গেছে। এছাড়া যারা নির্দোষ তাদের এভাবে অত্যাচারেরও বিচার চাইব। হাজারীবাগ থানার ওসি ইকরাম আলী বলেন, আবু সাঈদসহ আটক তিনজনকে পল্লবী থানা থেকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
--------------------------------------------------------
উপরে খবর আজকেই যুগান্তর পত্রিকাতে প্রকাশিত হয়েছে।
লিঙ্ক হলো এখানেঃ Click This Link

মাঝে মাঝেই ব্লগে অনেক’কেই বর্তমান সরকার এবং আওয়ামী লীগ’কে নিয়ে অতি উচ্চাশার বানী বলতে শুনা যায়।
এই পোস্ট এদের জন্যই দেয়া হয়েছে। দেশে এখন কি ধরনের তুঘলকি কান্ড নিয়মিতি ঘটছে সেটা বুঝার জন্য।

আর কতদিন বেহায়া আর নির্লজ্জের মতো একই কলের রেকর্ড চোখে ঠুলি পড়ে, কানে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিনের পর দিন বাজিয়ে যাবেন?

মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে মানুষ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। বিবেকবোধ আর মনুষ্যত্ববোধ দিয়েছে।
সেগুলিও কি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে?

নিজেকে অন্ততঃ মানুষ হিসেবে প্রমাণ করুন!

নিজে নিজেই নিজেকে আর কত নীচে টেনে নামাবেন?

ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:১৯
২২টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×