-সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবী (রহিঃ)
★তাই বর্তমানে আমাদের সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায় যে, আমরা পুরাই অশ্লীলতার মধ্যে ডুবে রয়েছি,যার পরিণাম ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই নয়।আর এই অশ্লীলতা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ কেননা অশ্লীলতা মানব চরিত্র ধ্বংসের অন্যতম হাতিয়ার। তাই এর নিকটবর্তী হতে কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘প্রকাশ্য বা গোপন কোনো অশ্লীলতার নিকটবর্তী হবে না’ (আন‘আম ৬/১৫১)।
অশ্লীলতার চূড়ান্ত পরিণতি হচ্ছে যেনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া। যা ইসলামে হারাম। এর কাছে যেতেও আল্লাহ নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। নিশ্চয়ই এটা অশ্লীল কাজ ও নিকৃষ্ট পথ’ (বনী ইসরাঈল ১৭/৩২)।
(১) অশ্লীলতার পরিচয় : অশ্লীলতা হচ্ছে ওই কাজ, যা পাপ ও অবাধ্যতাকে বৃদ্ধি করে। আর কথা ও কাজের মধ্যে প্রত্যেক মন্দ স্বভাবকে অশ্লীলতা বলে। অর্থাত অশ্লীলতা হচ্ছে ব্যভিচার এবং যেসব নিকৃষ্ট জিনিস যা পাপ বৃদ্ধি করে। আর আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ প্রত্যেক বস্তু।
অশ্লীলতা প্রসারের মাধ্যম সমূহ : বিভিন্ন মাধ্যমে অশ্লীলতা প্রসার লাভ করে। তন্মধ্যে কয়েকটি মাধ্যম নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
নেশাদার দ্রব্য পান : ধূমপান, মদ ও যাবতীয় নেশাদার দ্রব্য ইসলামে সম্পূর্ণরূপে হারাম। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, পূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ শয়তানের নাপাক কর্ম বৈ কিছুই নয়, অতএব এগুলো থেকে বিরত হও, তাতে তোমরা কল্যাণ প্রাপ্ত হবে।
শয়তান তো কেবল চায় মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে পরস্পর শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও সালাত হতে তোমাদেরকে বাধা প্রদান করতে। অতএব তোমরা নিবৃত্ত হবে কী? (মায়েদাহ ৫/৯০-৯১)।
নেশাগ্রস্থরা এসব সেবনের জন্য সদা মরিয়া হয়ে থাকে। যখন তা সংগ্রহ করতে না পারে তখন বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এজন্য রাসূল (সা.) বলেন, ‘তুমি মদ পান কর না। কেননা মদ সব
অনিষ্টের মূল’।
(২) ইন্টারনেট : ইন্টারনেটের কল্যাণে ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি মাধ্যমে পর্ণো ভিডিও ও কুরুচিপূর্ণ ছবি অতিদ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বর্তমানে তরুণ-যুবকরা অতিমাত্রায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। এসবের কারণে যুবক-তরুণদের চরিত্র নষ্ট হচ্ছে, অনেক দ্বীনি ভাইয়ের ঈমান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, জড়িয়ে পড়ছে অবৈধ সম্পর্কে, অনেকে আবার অবৈধ বিবাহে জড়াচ্ছে।
(৩) পর্ণোগ্রাফী : বিশ্বের মোট ওয়েবসাইটের ১২ শতাংশ (৪.২ বিলিয়ন) হলো পর্ণোসাইট। ৬৫.৫ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী পর্ণো দেখে। ৪০০ মিলিয়ন ওয়েবসাইটের উপর করা জরিপ থেকে জানা যায়, প্রতি আটটি ক্লিকের একটি যৌন সাইট। এই খাতের আয়ও কম নয়। ২০১৫ সালে শুধু এই খাত থেকে আয় হয়েছে প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে শীর্ষে আমেরিকা (৪০ মিলিয়ন) যাদের প্রতি তিনজনের একজন মহিলা, ২য় ব্রাজিল, ৩য় পাকিস্তান ও ৪র্থ চীন। বাংলাদেশেও পর্ণোর ব্যবসা কম নয়।
জুলাই’১৩-তে প্রকাশিত বাসসের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঢাকার বিভিন্ন সাইবার ক্যাফেতে প্রতি মাসে ৩ কোটি টাকা মূল্যের পর্ণো ডাউনলোড করা হয়। এ সকল পর্ণোর ভিজিটরদের মধ্যে ৭৭ শতাংশই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়ে! বর্তমানে নিঃসন্দেহে এই পরিমাণ অনেক বেশি। অতএব সাবধান!
(৪) গান বজনা : গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র অশ্লীলতার অন্যতম উৎস। কোনো কোনো গানে এমন কুরুচিপূর্ণ উত্তেজক কথা থাকে যাতে যুবক-যুবতীরা অবৈধ কর্মের প্রতি ধাবিত হয়। অনেকেই সময় কাটানো বা বিনোদনের জন্য টিভি সিনেমায় নাচ-গান, মুভি ইত্যাদি দেখে থাকে, যা পরিবারে ও
নিজেদের মধ্যে অশ্লীলতা ছড়াতে ভূমিকা রাখছে"।
আর যদি রাসূল (সাঃ) আমাদের জন্য দোয়া না করে যেতেন, তাহলে আমাদের এমন শাস্তি পাকড়াও করত যা সকল নবী-রাসূলের উম্মত দের শাস্তি কেও হার মানিয়ে ফেলত।
তাই আল্লাহর কাছে এই জন্য প্রশংসা জ্ঞাপন করছি যে, তিনি আমাদেরকে এত পাপ কর্ম করার পরও ধ্বংস করেননি।
তুহফাতুল আহওয়াযী, ৬/৯৩, ৮/৩৮৩। তুহফাতুল আহওয়াযী, ৬/৯৩। ইবনু মাজাহ হা/৩৩৭১; ছহীহহা হা/২৭৯৪; মিশকাত হা/৫৮০।
কপিপোষ্ট
ছবি ও পোষ্ট (ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
মূল লেখার লিংক
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৯:৪৬