তাহলে শেষ পর্যন্ত পৃথিবী তার বর্তমান মেয়াদ শেষ করলো! সর্বশেষ সিরিয়া সংকটের মাধ্যমেই কি তাহলে ৩য় মহাযুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে?
সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে কিন্তু সেই আশঙ্কাই প্রবল হয়ে উঠছে। বিশ্বের পরাশক্তিগুলো মুখোমুখি অবস্থানে চলে এসেছে। এর আগে ইরাক কিংবা আফগানিস্থান নিয়ে বিশ্বের যে সকল পরাশক্তি আমেরিকার সমর্থনে ছিলো না তারা চুপ ছিল বিশ্ব যুদ্ধের আশঙ্কায়।
আমেরিকা সব জানার পরেও ঐ ধৈর্যশীল আচরণকে সম্মান জানায় নি। আবারও তারা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য খেয়াল-খুশী মত আরেকটা মুসলিম দেশ কব্জা করার নেশায় উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। কিন্তু দান দান তিন দানে এসে এবার কিন্তু তারা শক্ত চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন হলো।
রাশিয়া ঘোষনা দিয়েছে সিরিয়ায় আক্রমন হলে সৌদি আরব হবে তাদের সামরিক হামলার তাৎক্ষনিক টার্গেট আর সিরিয়ার ঘোষণা হলো আক্রান্ত হলে তারা আমেরিকার মোকাবেলা করার আগে প্রথমেই জ্বালিয়ে দেবে ইজরাইল কে। ইরান জানিয়েছে সিরিয়ায় হামলা হলে প্রতিবেশী দেশগুলো বসে থাকবে না এবং ইরান সিরিয়াকে পূর্ণাঙ্গ সামরিক সহায়ত দেবে (হায় রে আমেরিকা! আহমাদিনেজাতের ক্ষমতা শেষ হয়ে যাওয়ার পর নির্বাচনে উদারপন্থী (!) সরকার ক্ষমতায় এসেছিল বলে আনন্দে হাততালি দিয়েছিল)।
জানা গেছে সিরিয়ার কাছে বর্তমানে প্রচলিত ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ফাঁকি দেয়ার মত ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য ‘ইস্কান্দার’ ক্ষেপনাস্ত্রের বড় মজুদ রয়েছে। এই ক্ষেপনাস্ত্রগুলো সিরিয়াতে স্থানীয়ভাবে কাস্টমাইজ করা যার পাল্লার আওতায় ইজরাইলের প্রতি ইঞ্চি এলাকা অর্ন্তভূক্ত।
বিশ্বযুদ্ধ বাধার প্রধান নিয়ামক হলো দুই বা ততধিক দেশের দ্বন্দ্বের কারণে যদি অন্যান্য দেশগুলো সামরিকভাবে আক্রান্ত হয় তাহলে ঐ দেশেগুলো এবং তাদের সামরিক মিত্ররাও সরাসরি সর্বাত্নক যুদ্ধ শুরু করে। এভাবে দেশে দেশে, জাতিতে জাতিতে যুদ্ধ বিস্তার লাভ করে যেমন খড়ে গাদার নীচে আগুন লাগলে তা খুব অল্প সময়ে পুরো গাদাটায় ছড়িয়ে পড়ে।
এখন দেখার বিষয় হচ্ছে আমেরিকা, রাশিয়া, ইরান, ইজরাইরের মত দেশগুলো শেষ মুহূর্তে এসে কিভাবে এবং কতটা ঠান্ডা মাথায় নিজেদের সংযত করে নেয়। তার উপর নির্ভর করছে বিশ্ব কি এই যাত্রায় টিকে যাবে না কি আমরা অন্তিম সময়ে উপস্থিত। উল্লেখ্য যে, বিশ্ব এখন পারমানবিক অস্ত্র সজ্জিত আর শোনা যায় পারমানবিক অস্ত্রের যে পরিমান অস্ত্রের মজুত এখন এই পৃথিবীতে আছে তা দিয়ে গোটা বিশ্বকে সাড়ে চারশত বার ধূলোয় পরিণত করা যাবে।
এমতাবস্থায়, মুসলমানদের এই পরিস্থিতিতে হয়ে উঠতে হবে খুবই সচেতন। কারণ সহীহ হাদিস শরীফে বর্ণিত মহানবী (সাঃ) কেয়ামতের পূর্ব লক্ষন ও দজ্জালের আবির্ভাবের প্রকট লক্ষণ হিসেবে সিরিয়ার যুদ্ধের কথা বর্ণনা করে গেছেন। ভূ-রাজনৈতিক এই ডামাডোলে একটা পক্ষ থাকবে এমন যারা হেরে গেলেও বা মরে গেলেও দিন শেষে তারাই হবে চুড়ান্ত বিজয়ী।