আমি যখন অনেক ছোট, আমার হাত-পা এর সামান্য একটু ছড়ে গেলেও দেখতাম, আব্বু কেমন যেন হয়ে যেতেন। মনে হতো আমার চাইতে তিনিই বেশী ব্যথা পেয়েছেন। আমার ছোট ভাইরা যখন এলো, তখনো অবাক বিস্ময়ে একি দৃশ্য বারবার সামনে দেখেছি। অথচ, এখন আমার বাবা যখন সফল সরকারী অফিসার হিসেবে অবসর জীবন শুরু করলেন। কেন তার ব্যাপারে তিনি এতো উদাসীন।
আমার বাবার শরীরে ছোট্য একটা অপারেশন করতে লাগবে। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি কষ্ট পাচ্ছেন প্রস্টেট গ্লান্ডের জটিলতায়। ডাক্তার তার সকল জ্ঞান প্রয়োগ শেষ করে সাজেস্ট করেছেন এই অপারেশনের। আমরা দুই ভাই এক কথায় বলে দিলাম ডাক্তার সাহেবকে আপনি যা ভালো মনে করেন। আব্বুও তখন সায় দিলেন আমাদের সাথে যে, এই কষ্টের চাইতে অপারেট করে ফেলাই ভালো।
যে বাবাকে আমি দেখেছি আমাদের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অসুখে দেশের সেরা ডাক্তার এর কাছে যেতে। তিনি নিজের বেলায় কেন খুজতে যান সস্তার জায়গা, সাধারন হাস্পাতাল। এটাকি ধরে নেব রিটায়ারড মানুষের মানসিকতা?
শেষ পরযন্ত অবশ্য সবার প্রেশারে তিনি রাজী হলেন ডাক্তার এর নিরবাচিত হাসপাতালেই অপারেট করাতে। আজকে আব্বুকে এডমিট করার কথা ছিল, কিন্তু সকালে নাস্তার টেবিলে বলে বসলেন, আজকে আর এডমিট হবো না, আরো দুই দিন দেখি। আমি আর কি করবো ছুটি নেয়া ছিল, ফোনে ক্যান্সেল করে চলে এলাম অফিসে। আমার কলিগরা সবাই অবাক। আমি কি আর বলবো?
আব্বু কি আসলে ভয় পাচ্ছেন, নাকি অন্য কোনো কথা তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বাবারা কি এমন ভাবেই চিন্তা করেন, যে আমার দরকার আসলে কিছু না, বাচ্চারা যেন ভালো থাকে। আমি নিজেই ইনশাআল্লাহ কয়দিন পরেই হয়তো বাবা ডাক শুনবো, আমিও কি তখন এভাবেই ভাববো? আব্বুর জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে, তাই লিখে ফেললাম। উনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, এই প্রারথনায়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




