মুঠি করা দুটো ছোট ছোট হাত দেখিয়ে বললেন ডাক্তার, এইযে দেখেন হাত। এটা পা, এটা মাথার অংশ, এই যে নড়ে উঠল। আমি পেছনে বসে দেখছিলাম আর ভাবছিলাম, যে দুনিয়া কত এগিয়ে গেলো, অনাগত শিশুকে মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থাতেই বাবা-মা দেখতে পায়। কিন্তু শিশুর প্রতি তাদের যে ভালোবাসা তাকি এক্টুকুও বদলেছে। এখনও কি বাবা-মা তার বাচ্চার কষ্টে চোখ ভেজায় না।
ওদিকে ডাক্তার বলেই চলেছেন, এই দেখেন বাবুটা মুখ লুকিয়ে রাখছে, মাথা ঘুরিয়ে বললেন, মনে হয় বাবার সাথে দুষ্টুমী করে খেলছে, কি বলেন ইঞ্জিনিয়ার সাহেব। একী, আপনার চোখে পানি কেন? হেসে বললাম সুখে হাসছি, আনন্দে ভাসছি, নাচা টা বাকী আছে, হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ, কিন্তু চোখ হয়তো কাঁদছে মায়ায়। আমার স্ত্রী (যথারীতি) ঠাস করে জিজ্ঞেস করলো, বলেন না, ছেলে না মেয়ে। আমি আর ডাক্তার একই সাথে প্রায় বলে উঠলাম "মেয়ে"। ডাক্তার অবাক হয়ে বললেন, আপনি জানলেন কিভাবে। রহস্য করে উত্তর দিলাম, আমি বাবা তো তাই, আসলে ওই যে কি বলে "উইশফুল থিঙ্কিং" না কি যেন।
আর মাত্র তিন চার সপ্তাহ, সকল অপেক্ষার অবসান হয়ে যাবে। আমার মেয়ে আসছে ঘরে, বাবা-মার জন্য বস্তা ভরে ভাগ্য নিয়ে *(এটা আমার বন্ধু, মনোয়ারের বধ্যমূল ধারনা)। কত কাজ আমার। ঘর রঙ করাতে হবে, পরদা বদল, পুতুল কেনা, বাবুর জন্য কাপড় কেনা, ভাবছি ঢাকা শহরের সব মেয়ে বাবুদের কাপড় আমি একাই কিনে শেষ করে ফেলব। আমার স্ত্রী বলে আমি নাকি পাগল হয়ে গেছি। বলেন তো, এ রকম না হলেই তো বরং পাগল বলা উচিত। আমাদের মহা দুত্যু (দুষ্টু) টা আসবে আর তার বাবা পাগল হবে না, তাই কি হয়। আমার স্ত্রী ডাকে "মহা দুত্যু", কারন সে তার মা কে চিন্তায় অস্থির করে ফেলে, মুভমেন্টের ভিন্নতায়। কিন্তু এটাতো নাম হতে পারেনা। কিন্তু আমার এত কাজের ভিড়ে নামটা রাখাটাও তো দরকার।
প্রিয় ব্লগারস (আজকে আমার বাংলীশ না হয় মাফ করেন), দুটো অনুরোধ। এক, দোয়া করবেন আমাদের হবু বাবুটার জন্য। দুই, একটা সুন্দর, আধুনিক, নান্দনিক, (আর বিশেষন খুঁজে পাচ্ছিনা) নাম রেখে দিন। আমি এবং আমার স্ত্রী ক্বতজ্ঞ থাকবো।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




