দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবারই প্রথম রাশিয়া গিয়েছেন মোদি। যাওয়ার আগে বলেছেন, "বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছি, ভেবেই আমি উচ্ছ্বসিত"। তিনি আরও বলেন, "ভারত ও রাশিয়ার বন্ধুত্ব জলে-স্থলে-আকাশে"। কিন্তু, গিয়েই অনভিপ্রেত এক কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছেন, হচ্ছেন দেশে-বিদেশে সমালোচিত। এমন কী কাণ্ড ঘটালেন মোদি?
ফোর্বসের মতে বর্তমানে বিশ্বের ৯ নং ক্ষমতাধর ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ায় পৌঁছালে বিমানবন্দরে তাঁকে লাল গালিচা সম্মাননা জানানো হয়। সেখানেই ঘটেছে অনাকাঙ্ক্ষিত এই কাণ্ড। ভারতের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময় হেঁটেছেন মোদি, রাশিয়ার একজন সামরিক কর্মকর্তা পিছ থেকে এসে তাঁকে হাত ধরে টেনে থামিয়েছেন। অথচ, রীতি অনুযায়ী নিজের দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময় সোজা হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে সম্মান জানানোটাই কর্তব্য। এমন একটি ভিডিও ইউটিউব তোলপাড় করে দিয়েছে। আনন্দবাজার বেশ গুরুত্বের সাথে খবর করেছে। এমনভাবে করেছে যেন মোদিরই দোষ এবং তিনি ইচ্ছা করেই কাজটা করেছেন। কিন্তু, আসলেই কি তাই? আনন্দবাজারের ফেসবুক পেইজে এই খবরের লিংকে একজনের মন্তব্য চোখে পড়লো। সেই মন্তব্যে ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত পেয়ে ইউটিউবে আরও ভিডিও খুঁজলাম এই ঘটনার। কারণ, এই ভিডিওটি শুরু হয়েছে মোদির হাঁটা এবং জাতীয় সংগীত একসাথে চলছে এমন সময় থেকে। আমি সংগীত পরিবেশন শুরুর আগের ভিডিওটি দেখতে চাইছিলাম।
অবশেষে একটা ভিডিওতে আগেরটুকু পাওয়া গেলো। সেখানে দেখা গেলো, রাশিয়ার মোদিকে স্বাগত জানাতে আসা উচ্চ পর্যায়ের কেউ (সম্ভবত মন্ত্রী), তরবারি হাতে সৈন্যটা সরে যাবার পর হাত এগিয়ে মোদিকে সামনে এগিয়ে যেতে ইঙ্গিত করেন। যেহেতু রাশিয়য় ইংরেজির প্রচলন নেই এবং মোদিও খুব সম্ভবত রাশান বোঝেন না, তাই তিনি এই ইঙ্গিতকে মেনেই সামনে এগিয়ে হাঁটা শুরু করলেন। অমনি শুরু হয়ে গেলো ভারতের জাতীয় সংগীত বাজানো। একটু পর সেই ভদ্রলোক থেমে গেলেও মোদি থামেননি। ইচ্ছে করে তিনি এটা করেছেন বলে মনে হয়না, কারণ এটা তাঁর নিজের এবং নিজের দেশের সম্মানের প্রশ্ন। তাছাড়া তাঁর বয়স হয়েছে, আশেপাশে ভারতীয় কোন সফরসঙ্গীকে দেখা যায়নি। তখন একজন সামরিক কর্মকর্তা মোদিকে পিছ থেকে হাত ধরে টেনে থামিয়ে পিছে নিয়ে আসেন এবং তাঁদের দুজন তখন একসাথে পাশাপাশি দাঁড়ান। এই দাঁড়ানোর পরেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন শুরু হওয়ার রীতি। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার চাকরি চলে যেতে পারে বলেই ধারণা। তবে এই ঘটনায় মোদিকে দোষ দিয়ে অনেকেই তাঁর পদত্যাগ দাবি করছেন, যা বাড়াবাড়ি। প্রথম ভিডিওটি ইচ্ছা করে কিছুটা কেটে প্রচার করা হয়েছে বিতর্কের জন্ম দিতে, বোঝাই যাচ্ছে। এখন কংগ্রেস এটাকে ইস্যু বানিয়ে আন্দোলনে নামে কিনা বা পার্লামেন্ট গরম করে তোলে কিনা- এটাই এখন দেখার বিষয়!
(খবর লিংক ১: Click This Link
ভিডিও লিংক ২: https://m.youtube.com/watch?v=LukPWXtjwyo)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩০