somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভোট দিয়ে কি লাভ হবে বলো?

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভোট দিতে ফরিদপুর কেন যাবো? আমার ভোটের মূল্য আছে কতটা? কী এমন পালটিয়ে ফেলতে পারবো আমি ভোট দিয়ে? গত ১০ বছর আমার ও আমার মায়ের ওপর যে অত্যাচার হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে, তার সমাধান কে করবে? মন্ত্রী মহোদয়ের আশপাশেই তারা বসে থাকেন! তাঁর সাথে কথাও বলতে দেয় না।

আমার বাবা কবি বাবু ফরিদী একজন মুক্তিযোদ্ধা, কবি, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও অ্যাডভোকেট। তাঁর মতো আমিও সারা জীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছি। ব্লগে লিখেছি, ফেসবুকে লিখেছি। হুমকি পেয়েছি, তবুও দমে যাইনি। কুখ্যাত রাজাকারের ফাঁসির পর তাকে ফরিদপুর নিয়ে দাফন করতে গাড়িতে নেওয়া হলো, আমি প্রতিবাদ করে লিখলাম, 'অমুকের ঠিকানা আমার ফরিদপুরের মাটি হবে না'। লাভ কি হলো? দেশের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ডিগ্রি নিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে চাকরিতে এসেই বা কি লাভ হলো? কোথাও একফোটা শান্তি পাই না।

আমার বসতভিটা অংশবিশেষ বেদখল হয়ে আছে। মাকে প্রায় পাগল বানিয়ে ফেলা হয়েছে অত্যাচার করে করে। আমাকেও পাগল বানানোর জোগাড়, হয়ে আছি অনেকটা একঘরে। আমাকে ট্রেনিঙ্গয়ে পাঠিয়ে অত্যাচার করা হলো। তারপর কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই বদলি করা হয়েছে বাড়ির পাশের বড় কলেজ থেকে পাশের জেলার অপেক্ষাকৃত ছোট কলেজে। অন্য অনেকে টানা ১০-১৫-২১ বছর ধরে একই কলেজে পোস্টিং নিয়ে বসে আছে বেআইনিভাবে, ক্লাস বাদ দিয়ে পড়াচ্ছে ব্যাচ, করছে ব্যবসা, অথচ আমি শুধু বেতনের কয়টা টাকায় চলা মানুষ, একটা বছরও থাকতে পারলাম না। আমার দোষ আমি প্রাইভেট পড়াইনি, আমি নকল করতে দেইনি, আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি, আমি সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তা পেয়েছি। এরপর আমার বেতন আটকে দেওয়া হলো কারণ ছাড়াই। সেটা পেলাম প্রতিবাদ চালু রেখে, শুভাকাঙ্খিদের কাজে লাগিয়ে। এরপর আমার ওপর হলো হত্যাচেষ্টায় হামলা। সেটা নিয়ে আমার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হলো, তদন্তে আসামীদের দোষ পাওয়া যাওয়ায় তাদের ওপর সমন জারি করলো আদালত, এরপর শুরু হলো নতুন করে হুমকি ধামকি। পথেঘাটে বাধা দেয়, চাকরিতে যেতে বাসা থেকে বের হই, আসে বাধা!

মায়ের শরীরটা খারাপ। তাকে দেখার কেউ নাই। উন্নত চিকিতসার জন্য তাকে ভারতে নেওয়া দরকার, পারছি না। একটা চোখে অপারেশন করিয়েছি , আরেকটা করাবো বলে একার এতো ব্যস্ততার মাঝেও বহিঃবাংলাদেশ ছুটি আর মায়ের মেডিক্যাল ভিসার সব কাগজ একা হাতে রেডি করে নিয়ে গেলাম। আসার পথে বাস অ্যাক্সিডেন্ট করেও অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। এসেই ফুড পয়েজনিং হলো। বিছানায় পড়ে রইলাম। এতোকিছুর পরেও, এমনকি নির্বাচন অফিসের প্রত্যয়নপত্র জোগাড় করার মতো প্রায় অসঅম্ভব কাজ সম্ভব করেও কলেজের অবকাশকালীন ছুটিতে বহিঃবাংলাদেশ ছুটি পেলাম ন! মেডিক্যাল ভিসা একা একা করে হাতে পেলেও আমার নিজেদের লোকেরা, আমার মাউশি আমাকে ছুটি দিলো না! কেন পাচ্ছি না অর্ডার, জানতে মাউশিতে গেলে পরিচালক ফরিদপুরের প্রবীর ভট্টাচার্য স্যার উলটো জানালেন, আমাকে নাকি আরও দূরে বদলিই শুধু না চাকরি থেকে বরখাস্ত করার পরিকল্পনা তাদের! আমার দোষটা জানা গেলো না। তবে আজকাল নির্দোষ লোককে দোষী বানানো খুব একটা কঠিন কাজ না। ক্ষমতায় থাকলে নাকি সব সম্ভব! অপেক্ষায় আছি, নতুন কী করেন তিনি ও তাঁর মরহুম সাবেক ডিজি স্যার আমার, ফরিদপুরের কিছু ক্ষমতাবান লোক ও শিক্ষকদের সাথে নিয়ে, সেটা দেখার।

সুতরাং, ভোট দিয়ে কি হবে? যেই জিতুক, এরাই ক্ষমতায় থাকবে আর আমার মতো বাপমরা যোগ্য ছেলেকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাবে। কিছুই পরিবর্তন আসবে না। মাননীয়ার কান পর্যন্ত এসব কথা যাবে না। যুদ্ধাপরাধীদেরকে ভোট দিতে পারবো না। 'না' ভোট দেওয়ার সুযোগটাও নাই। তাই, এবার আমি ভোট দেওয়া থেকেই বিরত থাকবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নগণ্য এক মানুষ আমি, আজ বাদে কাল মেরেই তো ফেলবে, কি দরকার শুধু শুধু ভোট দিয়ে আরেক দফা লাঞ্ছিত হওয়া?

মা আজ কয়েক দফা ফোন দিয়েছে আর আমি কেটে দিয়েছি। এতে তাঁর দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে। বাড়ুক। বলুক, 'তাড়াতাড়ি বাড়ি আয়, আমার একা থাকতে কষ্ট হয়', আমি ফিরবো না। বাড়ি ফিরে কি হবে? যেখানে এক ফোটা শান্তি নেই, মাকে এই বৃদ্ধ বয়সে একটু সুখ দিতে পারি না, কুত্তার বাচ্চাগুলাকে মারতে পারি না রাস্তায় ফেলে, কারণ আমি সরকারি চাকরি করি, সেখানে গিয়ে ভোট দিয়েই বা কী লাভ?
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×