somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামান্য কিছু তাবু, বেলুন বা ফোম পেতে দেওয়া গেলো না কেন?

২৮ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফায়ার সার্ভিসের ২২টির উপরে ইউনিট একসাথে কাজ করেও, নৌ-সেনা-বিমানবাহিনী একসাথে কাজ করেও, বনানীর মতো দেশের অভিজাত একটি এলাকায় প্রশস্ত রাস্তা আর উন্নত সুযোগ সুবিধা থাকা স্বত্বেও একটি বহুতল ভবনের আগুন নেভাতে আমাদের ৭+ঘন্টা লেগে যায়! এখনও পর্যন্ত মৃত ২৫ জন।

আর আমরা আছি কান্নারত মেয়েটাকে পিঠে নিয়ে যাওয়া ফায়ার সার্ভিস কর্মীর চোখে জল দেখে তাঁকে বাহবা দেওয়া নিয়ে, আর আছি উৎস্যুক জনতার ভিড় দেখে তাদেরকে গালি দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত! (সাভারের রানা প্লাজা ধ্বসে কিন্তু এই মানুষগুলোই এগিয়ে এসে অনেকের জীবন বাঁচিয়েছিলো। এদেরকে কেন সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায় না?)

অথচ কেউ বলি না, এমন অভিজাত জায়গাতেও কেন ভবনের পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা নেই?

হেলিকপ্টারে করে পানি এনে ঢালতে যে খরচ হয় আর যতটুকু কাজ হয়, তা দিয়ে অগ্নি নির্বাপনের কয়টা লাল সিলিন্ডার কেনা যায়?

কেন প্রতিটি ভবনের বাইরের দিকে জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি থাকে না?

একটা ক্রেন দিয়ে একসাথে কয়জন মানুষকে নিচে নামানো যায়? একটা হেলিকপ্টার থেকে দড়ি ফেলে কয়জনকে একসাথে উদ্ধার করা যায়? সেই সময়ে যদি হেলানো অবস্থায় কয়েকটা বড় তাবু উপরে থেকে ফেলে তাতে করে আটকে পড়াদের নিচে নামানো যায় দ্রুত, অথবা যদি নিচে গোটা রাস্তাজুড়ে ফোমের কার্পেট পেতে দেওয়া যায়, যাতে লাফিয়ে পড়লে কেউ আহত হবে না, এমন ব্যবস্থা কি অবাস্তব?

আর একজন আহত মানুষকে বহন করতে দেখলাম ৮-১০ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী ছুটছেন! স্ট্রেচারে করে বহন করতে তো ৪ জনের বেশি লাগার কথা না। এই সময়ে উপস্থিত দর্শনার্থীদের সঠিকভাবে কাজে লাগানো গেলে ভেতরে আটকে পড়াদেরকে কি আরও দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব হতো না?

আমার লিস্টে একজন অস্ট্রেলিয়া নিবাসী বাংলাদেশী লিখেছেন, তার রান্নাঘরেও অগ্নিনির্বাপন সিলিন্ডার আছে এবং সেটার গায়ে মেয়াদ লেখা আছে। মেয়াদ শেষে নিজ গরজে এসে পালটে দিয়ে যায়। যদি কেউ ভুল করেও রান্নাঘরে সিগারেট খাওয়ার জন্যও আগুন ধরায়, তাহলেও সেই যন্ত্রের মাধ্যমে আগুন ধরার খবর চলে যায় ফায়ার সার্ভিসের কাছে, ছুটে আসে দমকল বাহিনী!

এসব বাস্তবায়ন করা কি খুব কঠিন? মোটেও না। প্রতিটি ভবনে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক করা হোক। ধোঁয়া হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উপর থেকে পানি পড়তে থাকবে, এমন ব্যবস্থা রাখতে না পারলেও যেন মেয়াদসহ সিলিন্ডার থাকে। ট্রেনিং দেওয়া হোক ভবনের বাসিন্দাদেরকে, কীভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হয় বা কীভাবে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হয় শেখানো হোক। পাশাপাশি সব নাগরিকের জন্য ফায়ার ফাইটারদের ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করা হোক। তাহলে এই বিপুল উৎস্যুক জনতাকে উদ্ধারকর্মে দ্রুত ও কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়ে হতাহতের পরিমাণ কমিয়ে আনা যাবে।

আর দুদিন পরপর এভাবে আগুন কেন লাগছে সেটাও ক্ষতিয়ে দেখা জরুরি। কেউ কি ইচ্ছা করে সরকারকে চাপে ফেলতে আগুন লাগাচ্ছে? নাকি বিদ্যুতের কেবলগুলো নিম্নমানের? সর্বোপরি, এত ঘনঘন আগুন লাগাটা স্বাভাবিক কিছু বলে মনে হচ্ছে না। সুতরাং সতর্কতা আবশ্যক।


মহান করুণাময় আমাদের সবাইকে নিরাপদে রাখুন।

লেখাঃ দেব দুলাল গুহ।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×