somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফরিদপুরে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করে মহুয়া কি পেতে ও হতে চাইছেন?

০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


'মহুয়া ইসলাম' নামের এক যুব মহিলা লীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননা ও মহানবী (সা: -কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে উত্তাল ফরিদপুর। এই আগুনে ঘি ঢেলেছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। কিন্তু তসলিমা নাসরিন কি জানেন এই মহুয়া কে? তিনি পোস্ট দিয়ে ভাইরাল করে বিশ্বব্যাপী অনেকের চোখে কাকে হিরো বানিয়ে দিলেন আবার অনেকের চোখে ভিলেইন? তিনি এই সুবিধাবাদী নারীর সম্পর্কে কতটা জানেন?

মহুয়া ইসলাম যা লিখেছেন ফেসবুকে, তা অত্যন্ত আপত্তিকর। কে কাকে নেতা মানবে এটা কি তিনি নির্ধারণ করে দিবেন? মুসলিমরা যেমন তাদের প্রিয়নবী হযরত মোহাম্মদ (সা: -কে নেতা মানতে পারেন, আদর্শ মানতে পারেন, হিন্দুরাও তেমনি শ্রীরাম বা শ্রীকৃষ্ণ বা স্বামী বিবেকানন্দকে তাদের নেতা বা আদর্শ মানতে পারেন। এতে দোষের কিছু নেই। তিনি এ নিয়ে মন্তব্য করতে পারেন না। তাছাড়া, মহানবীকে তিনি 'সে' বলেও স্বম্বোধন করতে পারেন না। তাঁকে 'তিনি' বলা উচিত, কারণ তিনি বিশ্বব্যাপী সম্মানিত ব্যাক্তি। তাঁর আদর্শ কেউ ঠিকঠাক মানে না-- এমন কথাও ঠিক নয়। বিশ্বের অনেক মুসলিমই তাঁকে মানেন, তাঁর জীবনযাপনের রীতি অনুসরণ করেন, এই যেমন আফগানিস্তানের তালেবানরা অনেকটাই পালন করেন বলে জানি। কিন্তু যুগের সাথে তাল মিলাতে চাইলেও অনেক কিছু হয়তো মানা যায় না। কিন্তু এ নিয়ে এমন মন্তব্য করা উচিত নয়, যা তিনি করেছেন। সবচেয়ে বড় কথা, তিনি এমন সেন্সেটিভ বিষয় নিয়ে হাসিঠাট্টা করেছেন। এটা অন্যায়।

মহুয়া ইসলামের সাথে আমার ব্যাক্তি পরিচয় নেই, তবে তার স্বামী আমাকে বিনা শোকজে ও বিনা অপরাধে ফরিদপুর থেকে বদলির অন্যতম কুশীলব। তিনি ফরিদপুর যুব মহিলা লীগের নেত্রী ও রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষক সুজন স্যারের স্ত্রী হিসেবেই পরিচিত। এই সুজন স্যার হচ্ছেন রাজেন্দ্র কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জুটি অসীম সাহা ও রমা সাহার ডান হাত, যারা রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষর আসনকে পারিবারিক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিলেন। তিনি পৌরসভার বহিষ্কৃত কাউন্সিলর মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী তৃষ্ণা সাহারও অত্যন্ত ঘনিষ্ট। ৫ অগাস্টের পটপরিবর্তনের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্ডারে রমা সাহাকে অধ্যক্ষর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাকে ছাত্ররা কিছু বলেনি বা করেনি। রমা সাহা, অসীম সাহা, কেমিস্ট্রির সাইফুদ্দিন, ফিজিক্সের আশিকুর রহমান, সারদার উপাধ্যক্ষ বাংলার আনিস স্যারদের কখনও বদলী হয় না। যেই সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, ইনারা ফরিদপুরেই তাল মিলিয়ে থাকেন আর আবাসন বাণিজ্য, টিউশিন ইত্যাদি বেআইনি ও চাকরিবিধি বিরুদ্ধে কাজ করে কোটিপতি হতে থাকেন। আর আমরা যারা ফিজিক্সের শিক্ষক ও বিসিএস ক্যাডার হয়েও প্রাইভেট-ব্যাচ-কোচিং করাই না, বাণিজ্য করি না, এমনকি শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিকতাও ছেড়েছি, কোনো দুর্নীতি করি না, অন্যায়ের প্রতিবাদ করি, তারা হই বারবার বদলীর শিকার, অপমানিত, বেতন-ভাতাবঞ্চিত। এটাই বাস্তবতা।

ফরিদপুরের শিক্ষকরা এখনও অসীম সাহা-রমা সাহা-সুলতান মাহমুদ হীরক-সাইফুদ্দিন (সাবেক এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলামের শ্যালক)-দের সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি, যারা এখনও প্রাইভেট বাণিজ্য, আবাসন প্রকল্পসহ নানা সুবিধার আশায় ও বদলির আতংকে তাদেরকে সাপোর্ট দেন। এদের কখনও বদলী হয় না। সারাজীবনই ফরিদপুরে চাকরি করলেন আরামসে। কথিত আছে বিপুল অর্থের বিনিময়ে এই স্বামী-স্ত্রী রাজেন্দ্র কলেজের মতো শতবর্ষী কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছিলেন। সেটা ছিলো অনেকটা ওপেন সিক্রেট। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, তাদের চেয়ে যোগ্য আর কেউ কি নেই রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার মতো? আমিও তাদের একজন ছিলাম।


কেন ছিলাম? কারণ আমার দৃষ্টিতে অনেক সিনিয়র ও যোগ্য ব্যাক্তিকে ডিঙ্গিয়ে তারা অধ্যক্ষ হয়েছিলেন এবং বিসিএস ৪র্থ হয়ে ফরিদপুর সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজে যোগদানের পর ক্লাসে ভালো পড়ানোয়, তাদের টিউশন বাণিজ্যে যুক্ত না হয়ে টিউশন-কোচিং না করানোয়, তাদের নির্দেশে প্রাইভেট না পড়লে প্রাক্টিক্যালের খাতা আটকে না রাখায়, পরীক্ষার হলে ছাত্রলীগসহ এমনকি তৎকালীন মন্ত্রী ও শেখ হাসিনার বেয়াইর আত্মীয়কেও বহিষ্কার করায়, আমার বাবার রহস্যজনক অকালমৃত্যুর তদন্ত চাওয়ায় এবং আমার জমির অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় এক বছর না হতেই আমাকে মন্ত্রীর ডিও লেটারে বদলী করা হয় বাড়ির পাশের কলেজ থেকে দূরের একটা স্কুল অ্যান্ড কলেজে, করা হয় হামলা-মামলাও। সেই থেকেই আমি দূরে দূরে। করতে পারছি না সংসার, বারবার আটকে দেওয়া হচ্ছে বেতন-ভাতা, দেওয়া হচ্ছে বিভাগীয় দণ্ডও। অসুস্থ বিধবা মাকে একা ফরিদপুরে শশত্রুবেষ্টিত রেখে আমাকে সীমান্তে চাকরি করতে হচ্ছে অপমানিত হয়েও। রাজেন্দ্র কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ তখন ছিলেন উপাধ্যক্ষ, যিনি নিজেও ঐ সিন্ডিকেটের হিসেবেই পরিচিত। তাই পটপরিবর্তনের পরেও আমি ফরিদপুরে ফিরতে পারিনি। এখনও ফরিদপুরের সকল পদায়ন নিয়ন্ত্রণ করেন উক্ত রমা সাহা-অসীম সাহা-সুজন স্যারদের সিন্ডিকেটই। এখনও তারা আমার বিরুদ্ধে তৎপর, আমার ফেসবুক হ্যাক করেও নানা পোস্ট দিয়ে আমাকে বিপদে ফেলছেন, কর্মস্থলে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছেন না, পরোক্ষভাবে বেতন-ভাতা আটকে দিয়েছেন।


ফরিদপুরে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন হওয়ার পরে এখন কান্নাকাটি করে চোখ ফুলিয়ে ফেসবুকে এসে মাথায় কাপড় দিয়ে নামাজি সাজার চেষ্টা করছেন, চাইছেন ক্ষমা। অঅর্থাৎ তিনি অনুতপ্ত, তিনি নাস্তিক নন। তিনি আসলে সুবিধাবাদী। এখন জীবন বাঁচাতে বা জেলা যাওয়া ঠেকাতে ক্ষমা চাইছেন। এদের হাসতেও সময় লাগে না, কাঁদতেও সময় লাগে না। এটা Taslima Nasrin -এর দেখা উচিত। তিনিও যদি এ থেকে শিক্ষা নিয়ে ফেসবুক লাইভে ক্ষমা চান, তাহলে হয়তো শেষ জীবনে দেশ ফিরলেও ফিরতে পারেন..


মহুয়া ইসলামের শাস্তি হওয়া উচিত। অন্তত তার স্বামীর একটা বদলী হওয়া উচিত। আর কতকাল ফরিদপুরে আরামের জীবন কাটাবেন? নাহলে তিনি ও তার স্বামীরা ফরিদপুরে একটা ঝামেলা বাঁধাবেন। আওয়ামী লীগেরও উচিত তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে প্রমাণ করা যে কমেন্টেএ দাবিগুলো সঠিক নয়, অর্থাৎ তার এহেন অপকর্মের মধ্য দিয়ে ফরিদপুরকে উত্তপ্ত করে তাদের ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই। #mohuaislam #Faridpur #faridpurcity #RajendroCollege #RajendraCollege #viralreelschallenge #viralchallenge #BangladeshAwamiLeague


সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১:০৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×