somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিউম্যান ট্রাফিকিং: মানবপ্রাচার মানবতা লঙ্ঘনের সবচেয়ে বড় অপরাধ যা বর্তমান পৃথিবীর আতংক বা মহামারীর ন্যায় এক সমস্যা।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অভাব অনটন দারিদ্র কষ্ট হয়তো কম হয়ে যায় বলে দারিদ্রতা বিমোচনের আশায় ফাঁদে পা ফেলা আমাদের দেশের এক অংশের মানুষের জীবন হয় দারিদ্র্যের চেয়ে নির্মম করুন এক কষ্টের মানবপ্রাচারকারী চক্রের হাতে প্রতারণার শিকার হয়ে।যে নির্মম করুন কষ্টের পরিস্থিতি ভাষায় ব্যাক্ত করাও হয়তো সহজ হয়না কোন মানবিক স্বাভাবিক মানুষের কাছে।মানব প্রাচারকারীর ফাঁদে পা ফেলা কিছু মেয়ে এমনও আছে যারা দারিদ্রতায় নয় প্রেম,লোভ বা উন্নত দেশের ভালো চাকরির আশায় মানব প্রাচারকারি প্রতারণাচক্রের ভিক্টিম এ পরিণত হয়।আমাদের দেশে প্রায়ই গ্রাম থেকে কিংবা আদিবাসী এলাকা থেকে কোনো কোনো বিশেষ ক্ষমতাবান চক্র মানুষকে প্রথমত প্রতারিত করে শহরে এনে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়, কিংবা কোনো শিশুকে ধরে এনে বিকলাঙ্গ করে তাকে ভিক্ষার কাজে নিয়োজিত করে। এইসব বিকলাঙ্গ শিশুদের অনেককে দেখা যাবে হাইকোর্টের পাশের ফুটপাতে, ফার্মগেটের কাছাকাছি কোনো এলাকায়। আর গ্রাম থেকে শহরে আসা প্রতারিত মেয়েদের খোঁজ পাওয়া যাবে শহরের পতিতালয়ে, তাদের অনেকেই নিশ্চিত চাকুরির প্রলোভনে গ্রাম ছেড়েছিলো, এবং তারা শহরে এসে মূলত প্রাথমিক পর্যায়ে গণধর্ষিত হয় এবং এই ধর্ষণে মৃত্যু বরণ করলে তাদের নাম পরিচয়বিহীন লাশ খুঁজে পাওয়া যায় শহরের নিরব জনবিরল অঞ্চলে বস্তা কিংবা বাক্সে পুরে তাদের ফেলে রাখা হয় এবং যারা এই অমানবিকতা সহ্য করে বেঁচে যায়, তাদের বেচে দেওয়া হয় অন্য কোনো পতিতালয়ের মালিকের কাছে।

সাউথ এশিয়ান কান্ট্রি গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ মানবপ্রাচার এর ক্ষেত্রে একটি মুল্যবান ট্রানজিট পয়েন্ট হলেও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০১৪ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয় মানবপাচার রোধে ন্যূনতম মান রক্ষা করতে পারেনি বাংলাদেশ সরকার ৷ “ট্রাফিকিং ইন পারসনস” রিপোর্ট ২০১৪’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ প্রিভেনশন অ্যান্ড সাপ্রেশন অব হিউম্যান ট্রাফিকিং অ্যাক্ট ২০১২ অনুযায়ী অনেক মামলা তদন্ত ও পরিচালনা করলেও খুব কম পাচারকারীকে দণ্ড দেওয়া হচ্ছে৷ দেশটিতে পাচার রোধে প্রয়োজনীয় পদ্ধতি এবং পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও ব্যর্থতা রয়েছে৷

হিউম্যান ট্রাফিকিং(মানবপ্রাচার) মানবতা লঙ্ঘনের সবচেয়ে বড় অপরাধ।



"Trafficking against human persons is a crime against humanity."
Pope Francis(12.12.2013)


হিউম্যান ট্র্যাফিকিং(মানব প্রাচার-যা শক্তিশালী সিন্ডিকেট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত,হিউম্যান ট্র্যাফিকিং কিডন্যাপ এর শিকার কেউ এক হাত থেকে বদল আরেক হাত হয়ে অল্প সময়েই অনেক হাতে প্রাচার হয় এবং হাত বদল করা হাতগুলোর একজন আরেকজন সম্পর্কে কিছুই জানে না ।হিউম্যান ট্র্যাফিকিং এর শিকার বিশেষ করে নারী আর শিশুরাই।হিউম্যান ট্র্যাফিকিং বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক। আমাদের দেশ এবং পাশের দেশ ভারত সহ,আমেরিকা এই হিউম্যান ট্র্যাফিক রেকেটের সিন্ডিকেট কিছুটা মাঝেমধ্যে নিয়ন্ত্রন করতে পারলেও বন্ধ করার মত কোন সুযোগ বা বাস্তবায়ন হওয়ার মত কোন পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত হয়নি ।

" এককথায় হিউম্যান ট্রাফিকিং এর শিকার ভিক্টীম তাঁর নিজের ইচ্ছার বাইরে শিকলে বন্দি এক অমানবিক অত্যাচার সম্বলিত ক্রিতদাস হয়ে জীবন নির্বাহ করতে হয়।বর্তমান বিশ্বের আধুনিক সময়ে হিউম্যান ট্রাফিকের স্বীকার বাচ্চা কিংবা মেয়েরা শুধুমাত্র সেক্সের জন্য ক্রিতদাসি হিসেবে ব্যাবহার হয়ে থাকে আর এই ক্ষেত্রের সেক্স মানে একধরনের টর্চার যা মেয়েটিকে পুতুলের ভূমিকায় পালন করতে হয় যেই ভূমিকা পালনকারী ভিক্টিম মেয়েদেরকে একজনের কৃতদাসিত্ব নয় বহুজনের কৃতদাসিত্ব করতে হয় এবং বিনা পারিশ্রমিক এর পরিশ্রম তাঁদের করতে হয় "

হিউম্যান ট্র্যাফিকিং এর স্বীকার একটি বাচ্চা(মেয়ে)অভিভাবক সাথে থাকা অবস্থায়ও অসতর্ক হলে স্কুল যাওয়া আসার পথে,শপিংমল কিংবা থেকে রাস্তা থেকে যে কোন মুহূর্তেই কিডন্যাপ হয়ে অল্প সময়ে অনেক হাত বদল হয়ে যায় এবং টিন এজার মেয়েদের ক্ষেত্রে বেশীর ভাগ যা হয় প্রেমের ফাঁদে ফেলে,চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয় ।বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই হিউম্যান ট্র্যাফিকিং এর শিকার কেউ পুলিশ কিংবা অন্যভাবে বাঁচতে পারলেও তাঁদের উপর অত্যাচার কিংবা কারা এই ব্যাপারে জড়িত কেউ মুখ খুলে না কারন পৃথিবীর যেকোন দেশে হিউম্যান ট্রাফিকিং সিণ্ডিকেট নিয়ন্ত্রন বা চালনা কারী হয়ে থাকে সে দেশের বিশিষ্ট জনেরা ফলে এই ভিক্টিমদের অনেককেই পুলিশের কাছে মুখ খোলার পর তাঁদের শক্তিশালী এই সিন্ডিকেট এর লোকজন দ্বারা খুন হতে হয়েছে।ভিক্টিমদের তাঁদের উপর এতটাই অমানবিক ভয়ংকর নির্যাতন করা হয় যা কল্পনাতীত( হলিউডে হিউম্যান ট্র্যাফিকিং উপর নির্মিত কিছু মুভি আছে যা দেখলে অনুভব করবেন আপনার গায়ের পশম দাঁড়িয়ে আছে,রানী মুখারজি অভিনীত ২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া হিন্দি মুভি "মারদানি" তে এ বিষয়ে অতটা ফুটিয়ে তুলতে না পারলেও মূলত মুভিটা ভারতের হিউম্যান ট্র্যাফিক রেকেট এর উপর ভিত্তি করেই নির্মিত হয়েছিল হলিউড এর একটা মুভির মত করে )।

হিউম্যান ট্র্যাফিকিং এর শিকার হওয়া এড়াতে প্রাথমিক গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী পদক্ষেপটি হচ্ছে নিজেকে সচেতন হওয়া এবং অভিভাবকদের উচিৎ তাঁদের ছোটবড় সব বয়সী সন্তানের সব ব্যাপার সম্পর্কে অবগত থাকা ।

বিঃদ্রঃ "হিউম্যান ট্র্যাফিকিং" এর বিষয়ে আপনারা হয়তো সবাই জানেন জানেন,পোষ্ট খানা দেওয়ার কারন আমাদের আশেপাশে অনেকেই আছে যারা এ বিষয়ে জানে না, সচেতনা বৃদ্ধির জন্য আমারা যারা জানি তাঁদের স্ব অবস্থান থেকে আশে পাশের মানুষকে অবগত করাটা হয়তো অসম্ভব কোন কিছু না আমাদের জন্য।আমাদের সবার মনে রাখা উচিত হিউম্যান রাইটস আর নট অপশনাল সাবজেক্ট যা প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভাবে প্রাপ্য এবং প্রযোজ্য।










লেখাটির সুত্রঃ ক্লিক হিয়ার ।view this link







সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×