somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নির্বাক স্বপ্ন
চিন্তা প্রসবের বেদনা মগজব্যাপী স্থায়ী হওয়ার আগেই কলম ধরতে হতো। মাথার মধ্যে জমে থাকা ভয়ংকর সব চিন্তাগুলোকে পরিণতি দেয়া মত শব্দ কোনো কালেই ছিল না।তারপরও সেই সব গল্প লেখতেই হতো,যেগুলো লেখার পর শান্তিতে ঘুমানো যায়।

তিথির জীবনানন্দ ফ্যান্টাসি

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চোখ বন্ধ করলে একটা গল্প শুরু হয়।বন্ধ চোখের গল্পে আমি তিথি আর জীবনানন্দ সাত নাম্বার বাসে করে সবুজ পাহাড় আর শাদা মেঘ কেটে সাজেক ভ্যালী যাই।

নানা পদের বই পড়তে পড়তে বড় হলেও পড়ার বই পড়া আগ্রহ খুব একটা পাই নি জীবনানন্দের জন্য।
জীবনানন্দ দাশ পড়ি প্রায় দশ বছর ধরে।প্রথম দিকে জীবনানন্দ পড়তাম জীবনানন্দ না পড়া বন্ধুদের কাছে ভাব জমানোর জন্য।কয়েক লাইন পড়ে মুখস্থ করে রাখতাম বন্ধুদের গার্লফ্রেন্ডদের কাছে কবিতা প্রেম প্রকাশ করার জন্য।তারপর প্রকৃতই জীবনানন্দে অভ্যস্ত গেয়েছি।খুব কম মানুষ ই এই অভ্যস্ততা কে মূল্য দিয়েছে।

যে অল্প কয়েক জন আমার কবিতা প্রেম কে শুধুমাত্র মেয়েদের কাছে বাহবা পাওয়ার স্ট্যান্ট হিসেবে দেখে নি,তারচেয়ে বেশি কিছু বলে চিন্তা করেছে তিথি তাদের একজন।২০১৩ সালের মাঝামাঝি তিথির সাথে পরিচয় হয়।দ্বিতীয়বার তিথির সাথে দেখার হওয়ার পর প্রথম বারের মত একটি মেয়েগল্প লেখতে শুরু করি।কারণ তিথি যেকোন গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হওয়ার যোগ্যতা রাখে।কনফিডেন্ট,এক্সট্রভারট আর কিছুটা ঝগড়াটে।

আজিজ মার্কেটের হাতা কাটা কুর্তি পড়ে তিথি আমার সাথে জীবনানন্দের গল্প নিয়ে গল্প করতো।হয়তো সে জীবনানন্দ অথবা আমাকে পছন্দ করত। বেশীর ভাগ সময় শাহবাগ চায়ের টংগুলো তে বসতাম।আবার কখন আমার বন্ধুর খালি বাসাতে শুতাম।আমি এই এক্ষেত্রে ও জীবনানন্দ দাশের কাছে কৃতজ্ঞ।তিনি আমাদের এক বিছানায় জলদি নিতে সাহায্য করেছেন।না হলে আমি কোন দিনই তিথির শরীর দেখার,ছোঁয়ার ইচ্ছে থাকলে ও বলার কনফিডেন্স ছিল না।যাই হোক জীবনানন্দ কে পাশ কাটিয়ে কুঁচকানো বেড সীটে তিথির ঘাম জড়িয়ে তিনটি বছর পার করে দিয়েছিলাম।তিথি কে লুকিয়ে বাঁচিয়ে রাখার ভয় ছিল না।কারণ মন কে আমি সব সময় শরীরের অংশ আর প্রেম কে শরীরের অভ্যাস মনে করেছি।

আমি আর তিথি ইন্টেল্যাকচুয়াল ঘরানার রিলেশনশীপে ছিল।কোন প্রকার কমিটমেন্ট ছিল না।হ্যা তবে দুই জনের মধ্যেই একটা মানসিকতা ছিল যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।ভালো কিছু করতে হবে।নিজেদের কে ভালো একটা অবস্থানে নিতে পারলে সারা জীবন একসাথে থাকার চেষ্টা করা যেতে পারে।বিয়ে করা যেতে পারে।আমরা দুই জন বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কারণ আমরা ঠিক করেছিলাম আমরা এক সাথে সাজেক ভ্যালী যাব।আর তাছাড়া আমারা এক জন আরেক জন্য কে উপভোগ করা শিখে গিয়েছিলাম।আমরা শিউর ছিলাম আরো পঞ্চাশ বছর পরেও আমরা ঠিক এক ই রকম উপভোগ্য থাকবো।

কালো তিথির অন্যতম প্রিয় রং ছিল।যদিও ওর বেশীর ভাগ জামাগুলো ছিল গেরুয়া রংয়ের।আমি ওর জন্মদিন উপলক্ষ্যে কালো শাড়ী দিয়েছিলাম।জন্মদিনে তিথি আমার দেয়া শাড়ী পড়ে এসেছিল।

শাড়ীতে অনভ্যস্ত আনমনা তিথি ছোট ছোট পা ফেলে রাস্তা পার হচ্ছিল। হয়তো একটু বেশীই আনমনা ছিল।কারণ ওর বাম পাশ থেকে আসা সাত নম্বর বাসের ড্রাইভার হর্ন দিয়েছিল,ও শুনতে পায় নি আমার শত চিৎকার ও।
ড্রাইভার হর্ন দিয়ে যাচ্ছিল তিথি কে চাপা দেয়ার আগ পর্যন্ত।ড্রাইভার হর্ন দিয়ে যাচ্ছিল পাশের জানালা দিয়ে পালাবার আগ পর্যন্ত।সাত নাম্বার বাসের হর্ন আমার কানে বাজচ্ছিল হর্ন বাজানো বন্ধ করার পর ও।সাত নাম্বার বাসের হর্ন আমার কানে বাজচ্ছিল তিথির থেতলে যাওয়া শরীর ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে পড়ে থাকার সময়ও।

চোখ বন্ধ করলে একটা গল্প শুরু হয়।বন্ধ চোখের গল্পে আমি তিথি আর জীবনানন্দ সাত নাম্বার বাসে করে সবুজ পাহাড় আর শাদা মেঘ কেটে সাজেক ভ্যালী যাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×