somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হরতালে বেতনভুক্ত-প্রশিক্ষিত ক্যাডার নামাবে শিবির!

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হরতালে বেতনভুক্ত-প্রশিক্ষিত ক্যাডার নামাবে শিবির!
সাজেদা সুইটি ও নূর মোহাম্মদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ছবি: ফাইল ফটো
ঢাকা: রোববার ১৮ দলের হরতালে জোটের ব্যানার কাজে লাগিয়ে সহিংসতার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত- শিবির ক্যাডাররা। বিএনপির ঘারে ভর দিয়ে নিজেদের দাবি আদায়ের সুযোগ তৈরির ষড়যন্ত্র করছে দলটি। সূত্র জানিয়েছে, এবারের হরতালে সহিংস কর্মকাণ্ডে দলের প্রশিক্ষিত বাহিনীকে মাঠে নামানোর সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে শিবির।
সূত্রটি জানায়, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াত নেতাদের পুনরায় বিচারের আবেদন ট্রাইব্যুনাল খারিজ করে দেওয়ায় ক্রুদ্ধ শিবির ক্যাডাররা প্রতিশোধ নিতে সহিংস পথই বেছে নিচ্ছে। আর জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদের আড়ালে জামাত-শিবির যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের দাবিকেই সামনে নিয়ে আসবে এই হরতালেও।
অতীতেও দেখা গেছে, যে দাবিতেই বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট হরতাল দিক না কেনো জামাত-শিবিরের হাতে থাকে যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচালের স্লোগান দেওয়া ব্যানার ফেস্টুন।
গত ২৬ ডিসেম্বরের পথসভার কর্মসূচি এবং তারও আগে ৯ ডিসেম্বরের অবরোধ কর্মসূচিতে শিবিরকেই দেখা গেছে সবচেয়ে সক্রিয়। পথসভার কর্মসূচিতে শিবির প্রকাশ্যে ‘রক্ত খাওয়া’র হুমকি দিয়ে স্লোগান দিয়েছে যা অনেকেরই কানে বেজেছে।
খালেদা জিয়ার জনসভাগুলোতেও দেখা যায় বিএনপিসহ অন্য শরিকদলগুলোর ভূমিকা ক্ষীণ। সবচেয়ে জঙ্গিরূপ দেখা যায় জামায়াতে ইসলামির শক্তির প্রধান উৎস শিবিরের উপস্থিতি ও আচরণে।
তবে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এবারের হরতালে শিবিরের সবচেয়ে সহিংস রূপ দেখা যাবে বলেই ধারনা দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।
বিশেষ করে ঢাকা মহানগরীর কমিটির গুলোর সভাপতি সেক্রেটারি জেনারেলদের কৌশলে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করে নেওয়ার পর এই সহিংসতার পথকেই শিবির তার একমাত্র কৌশল হিসেবে দেখছে।
শিবিরের এক নেতা জানান, যদিও জামায়াতসহ ১৮ দলকে নিয়ে বিএনপি হরতাল ডেকেছে, তবু জামায়াত তাদের নিজস্ব অঘোষিত ইস্যুতেই এই কর্মসূচি পালন করবে। হরতাল পালন করবে তারা একদমই নিজেদের মতো করে।
তিনি জানান, এবারের হরতালে সহিংসতার জন্য শিবিরের বিশেষ ক্যাডার বাহিনীকে নামানো হবে। এই বাহিনীর ‘আলাদা প্রশিক্ষণ’ রয়েছে। এ ক্যাডাররা শুধু সহিংসতার জন্যই বেতন পায়।
তিনি বলেন, এই বাহিনীকে কোনো অনুষ্ঠান বা নিরীহ কর্মসূচিতে মাঠে নামানো হয় না। তাদের মূল কাজ পুলিশের ওপর হামলা এবং গাড়ি ভাংচুর।
হরতালের সুযোগ কতোটা ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়, সে ব্যাপারে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই নেতাকর্মীদের মধ্যে শলা-পরামর্শ চলছে বলে এই নেতা জানান।
ঢাকা মহানগর জামায়তের সহকারি সেক্রেটারি ও শিবিরের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদ এ ব্যাপারটি অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, “জামায়াত-শিবিরে বেতনভুক্ত কোনো কর্মী নেই। বরং তারা এয়ানৎ (অনুদান) দিয়ে দলকে চালান। তাই বেতনভুক্ত ও প্রশিক্ষিত কর্মী নামাবে শিবির, এ কথা ভুল।”
তিনি আরও বলেন, আমাদের কর্মীরা অতীতের মতো রোববারের হরতালেও স্বত্বঃস্ফূর্তভাবে সক্রিয় থাকবে।
জামায়াত সাংগঠনিকভাবে সবসময় শক্তিশালী দাবি করে তিনি বলেন, “নির্যাতন করে একে থামানো যাবে না। সহিংসতার রাজনীতি জামায়াত বিশ্বাস করে না। কোনো রকম সহিংস কর্মকাণ্ড করে ১৮ দলের ঘাড়ে চাপানোর ইচ্ছা জামায়াতের নেই।”
ভিন্ন সূত্র জানায়, জামায়াতের আন্দোলনের মূল ইস্যু তাদের নেতাদের মুক্তি। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটকদের পূনর্বিচারের আবেদন খারিজ হওয়ায় কঠোর ও সহিংস আন্দোলনে নামার সুযোগ খুঁজছিলো দলটি। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করে, ভাংচুর করে, আগুন জ্বালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আসছে গত তিন দিন ধরেই। তবে পুলিশের সতর্কতায় ও একক কর্মসূচিতে তেমন সুবিধা করতে পারছিল না জামায়াত-শিবির।
আর এ কারণেই হরতাল কর্মসূচিকে বড় সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে চায় তারা।
শিবিরের অপর নেতা এক জানান, রোববারের হরতালে জামায়াত যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রলম্বিত করতে আরো ইস্যু তৈরির চেষ্টা করবে। এদিন সহিংস কর্মকান্ড যাই হবে, তার দোষ স্বাভাবিকভাবেই বিএনপিসহ ১৮ দলের ওপর বর্তাবে। তাই কিছুটা চাপমুক্ত থাকবে জামায়াত।
সূত্রমতে, দলের বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় নেতারা জেলে। জামায়াতের নেতৃত্ব দেয়ার মতো নেতা এখন উল্লেখযোগ্য কেউ নেই। সর্বশেষ আবদুল্লাহ মো. তাহের আটক হয়েছেন, হামিদুর রহমান আযাদও পলাতক। এ অবস্থায় শিবির মনে করছে সহিংস পথ ছাড়া অন্য কোনো পথ তাদের ‍সামনে নেই।
শিবিরের ওই নেতা বলেন, “প্রতিশোধের এই সুযোগ ষোলোআনা কাজে লাগানো হবে।”
এদিকে অপর একটি সূত্র জানায়, এবার হরতালে বাধা দিলে বা নেতাদের আটক করলে আন্দোলনের নতুন ইস্যু পেয়ে যাবে ১৮ দলীয় জোট। ফলে জামায়াত নেতাদের বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হবে। এটাই তাদের প্রত্যাশা। রোববারের হরতালে ১৮ দলের ব্যানারে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেবে শিবির ক্যাডাররা। সরকারকে আবারো মনে করিয়ে দেবে ‘জামায়াতের মূল দাবি দলের নেতাদের মুক্তি।’
বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৩
এসকেএস/সম্পাদনা: মাহমুদ মেনন, হেড অব নিউজ
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×