সোহাগ আর পিংকির আজ দেখা করার কথা ছিল ফামগেটে। সেখানে পিংকি তার সার্টিফিকেট নিয়ে নিবে। সোহাগের বাসা গ্রিনরোডে। বিকেল পাচটায় তাদের দেখা হল। পিংকির ঘর থেকে বলা ছিল কোন বান্ধবিকে সাথে রাখতে, কিন্তু পিংকি একলাই যায়। সোহাগও একলা আসে।
ফোনে রিং দিয়ে দুজন দুজনাকে চিনল। আর এমনি বলা ছিল বাটার দোকানের সামনে তারা দেখা করবে। পিংকি চেয়েছিল রেস্তুরেন্টে বসতে কিন্তু সোহাগ রাজি হল না। তারা রাস্তায় তাদের কথা সারল।
পিংকি বল্ল, “আপনাকে ধন্যবাদ।”
সোহাগ বল্ল, “আমাকে ধন্যবাদ বলে লাভ নাই। আমি এমন কিছু করিনি। এটা মোবাইল বা টাকাপয়সা না তো।
“তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন, টাকা পয়সা হলে আপনি ফোন দিতেন না।”
“হতেও পারে. নাও পারে- সময় তখন আমাকে কি করতে বাধ্য করত, জানিনা।”
“ইস আপনি দেখি সবার মত।” “হুম আমিও তো মানুষ, আর ভুল তো মানুষ করে।”
“তাই বলে এমন ভুল করবেন।”
“বাহ! আপনি ভুল করেননা। আপনি কেন সার্টিফিকেট হারিয়েছেন।”
“এই ভুলে তো আর কারো ক্ষতি হয় না।”
"নিজের ক্ষতি হয়। আপনার মত এমন বোকা মেয়ে সংখ্যা ঢাকায় এখন আছে। যে নিজেদের নিয়ে সচেতনন না। একটা ফোন নাম্বার ফাইলটির মধ্যে রাখলে তো আরও আগেই পেয়ে যেতেন। এত কষ্ট করতে হত না। বাচ্চাদের মত কাদতে হত না। এত জরুরি একটা কাগজ এর ক্ষেত্রে ভুল মানা যায় না।”
“আপনি কিন্তু এবার বেশি বলে ফেলছেন। আমি অনেক কেদেছি, এটাও বাবা আপনাকে বলেছে। থাক! মানুষেরই তো ভুল হয়।”
”আমার কথা আমাকে বলা দরকার নেই। যা হোক আপনার জিনিস আপনি পেয়েছেন। এখন আমি চলি।”
“আপনি আমাকে অপমনি করলেন।”
“ইস আপনার সাথে আমার কথা বলতে ভাল লাগছে না। আপনি আপনার পথে হাটেন আর আমি আমার পথে চলি।”
“আপনি আমাকে আমার অপমান করলেন। শুধু আমার উপকার করলেন বলে আমি কিছুই বল্লামনা।”
“আমি আপনাকে এমন কিছু বলিনি যাতে আপনি অপমান বোধ করবেন আর আমি এমন কোন মহৎ কাজ করিনি। আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি। এখন আমি চলি।”
“আচ্ছা থাক। এ কথা আর না বাড়াই ভালো। আমরা আবার কবে কথা বলছি বা দেখা করছি।”
“দু:খিত আমরা আর কথা বলছিনা বা দেখা করছিনা।”
“কেন আমার মধ্যে কি খারাপি আছে।”
“ যদিও প্রথম দেথায় আপনার এমন বলা সোভা পায় না। আমি বুঝেছি, আপনি বড়লোকের আহলাদি মেয়ে। আপনার কোন ভুল নেই। আমি আপনার মত না। তারপরও বলছি- খারাপি আপনার মধ্যে না আমার মধ্যে আছে। আমি মেয়েদের সাথে এত কথা বলতে পছন্দ করি না।”
“ও আচ্ছা তাই কিন' আমার অনেক কিছু বলার ছিল। আপনিই সুযোগ করে দিলেন।”
“দু:খিত কোন কথায় কষ্ট পেয়ে থাকলে। আমার কাজ আছে আমি এখন চলি।"
“যা হোক আমি আপনাকে ফোন করব, এখন না হয় আপনাকে ডিস্টার্ব করলামনা।”
“ঠিক আছে। এখন চলি।”
“খোদা হাফেজ।”
“বাই বাই।”
রাতে পিংকি চুরি করে বাবার মোবাইল থেকে সোহাগের নাম্বর নিল। কারণ প্রথম সোহাগের সাথে তার বাবার কথা হয়েছিল। পিংকির প্রথম কথা আজ ফার্মগেটেই হয়। পিংকি, সোহাগরে ফোন দিয়ে দেখল ফোন বন্ধ। পিংকির সূক্ষ একটি রাগ ছিল সোহাগের উপর। তাই সে তাকে ফোন দিল। ফোন দিতেই থাকল কিন্তু কেও ধরলনা। আজ সময় বদলায় গেছে। ছয় মাস হয়ে গেছে- এখনও পিংকি, সোহাগের নাম্বরে ট্রাই করে যায়। ওর সাথে অনেক কথা আছে। যা এখনও বলা হইনি। কিন্তু কি বলবে, সবই তো পিংকি ভুলে গেছে। তারপরও কেন জানি পিংকি ফোন করে যায়।
চলবে.........

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




