চেকআপের জন্য নিউইয়োর্ক যাচ্ছি। অভ্রকে অনেক মনে পড়ছে। তাই মনটা ভাল নেই। প্রায় বত্রিশ বছর হয়ে গেছে। মনে হয় আর কখনোই তার সাথে দেখা হবেনা। অাজ অামি অভ্র থেকে ওনেক দূরে। ও যেখানেই থাকুক, ভালো থাকুক। আমি এখন আমস্টেরর্ডাম ইয়ারপোর্টে। প্লেন তিন ঘন্টার জন্য ডিলেয়। আমার পাশের সিটে যে বসে আছে তাকে খুব চেনা চেনা লাগছে। তার আচরণ গুলো দেখে মনে হচ্ছে, একলা একলা তার ভালো লাগছেনা। আচরণ গুলো অনেকক্ষাণী অভ্র এর মত। ওর চেহারাটা ভালো করে দেখার চেষ্টা করলাম। অভ্রই মনে হচ্ছে। ওর এই বিশেষভাবে কাগজ ছেড়া আমি কখনই ভুলবনা। আগেও যখন ও আমার সাথে রাগ করত এভাবেই কাগজ ছিড়ত। আসলেই কি ও অভ্র। হয়ে থাকলে আল্লাহ তোমাকে হাজার শুকরিয়া। জানি, অভ্র আমাকে মনে রাখবেনা। হয়তবা বিয়েও করেছে। অভ্র আমার মত নাকি। কথা বলে দেখি। আমি বলি, “আমি কি আপনার সাখে কথা বলতে পারি।”
অনেক্ষন পরে উত্তর দিল। আমি আমার পরিচয় দিলাম। কি ভেবে মিথ্যে নাম বল্লাম বুঝলাম না। অভ্র তার নাম বল্ল। আমি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষ। কারণ শেষ বারের জন্য হলেও আমি আমার প্রিয়ের সাথে দেখা করতে পেরেছি। অভ্রর অনেক কথাই আমার কানে যাচ্ছেনা। আমি এমন ভাব করছি যেন আমি ওর সব কথাই শুনছি। বাহিরে প্রকাশ করছি না যে, আমি কত খুশি। হঠাৎ থমকে গেলাম । অভ্র ছেলের বাড়ি যাচ্ছে, অনেকদিন তার নাতিপুতনিদের সাথে নাকি দেখা করেনি। এ কথা শুনে মনটা কেমন জানি শুন্য হয়ে গেল। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, “তুমি বিবাহিত”
এই প্রশ্ন শুনে একটু অবাক হল। আমি বলি,
“আমাকে চিনলে না। আমি তোমাকে ঠিকই চিনেছি, সবসময় চিনব।”
“বুঝলামনা।”
অভ্র অনেক কিছু বলছে, বেশির ভাগই বুঝতে পারছিনা। আমার হুশ নেই। আমার কথা মনে আসছেনা। তখন আমি ওকে মনে করানোর জন্য বলি,
“মনে আছে ত্রিশ বছর আগে একটি মেয়েকে ক্যাট্সঅাই দোকানে চিনেও না চিনার ভান করেছিলে কারণ তোমার সাথে এক বন্ধু ছিল। সেই মেয়েটিকে তুমি ভালবাসতে। আমিই সেই মেয়ে।”
অভ্র বলে, “প্রেম করেছি অনেক কিন্তু ভালোবেসেছি একজনকে আর তাকেই জীবনসঙ্গী করেছি তবে দু:খের বিষয় সে এখন আমার সাথে নেই।”
আমি নিস্তব্ধ ভাবছি মনে মনে, এ কি বলছ! কত প্রেম করেছো। এমন একটি লোকের উপর বিশ্বাস করে তার প্রতিক্ষায় সারা জীবন কাটালাম। কখনো ভাবিনি এই লোকটি এমন করবে। তাহলে কি মিথ্যা ছিল তার সব কথা। তারপরেও কেন জানি কষ্ট লাগছে শুনে, অভ্রর জীবনসঙ্গী মারা গেছে। হে মাবুদ, কেন ওর সাথে এমন হল তুমি ওই কষ্টটুকু আমাকে দিয়ে দিতে। আমি বলি,
“আমি দু:খিত, তোমার হয়তবা মনে নেই। তুমিই বলেছিলে আমাকে ছাড়া আর কেওকে ভালোবাসবেনা। আমাকে না পেলে আর কেওকে বিয়ে করবেনা। আমি যেমনই হই দেখতে তোমার আপত্তি নেই....”
ও বলে, ওয়েইট মোবাইলে রং নাম্বারে প্রমেটা শুরু হয়। কারণ এমন পাগলামি আমি মোবাইলে এক মেয়ের সাথে বলেছিলাম। কিন্তু তার নাম বৈ দিয়ে শুরু হয়না।”

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




