জীবনের গল্প ১ Click This Link
পূর্বের পর্ব Click This Link
আমি ভোরে ঘুম থেকে উঠি। দেখি সবাই ঘুমিয়ে আছে। সকালে অফিসে চলে গেলাম। আমি বিকেল চারটার আগে ঘরে ফিরতে পারিনা কিন্তু সেদিন বারটায় ফিরলাম। আমি মনে করেছিলাম ওরা মনে হয় চলে যাবে। ঘরে যেয়ে দেখি মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে। উঠেই মদ চাচ্ছে। কানর, আমার ঘরের চাকর এসে বলে- “এখন কি করি।” আমি নিজেই ওদের কাছে গেলাম।
“কি খবর আমার দেশের সোনার ছেলেরা।”
একজন বলে- “মাল কই।”
“কত লাগবে।”
” সকালে প্রতিজেনর দুইটা বাংলা দিলেই হবে, ওই বিদেশীতে আমাদের হয় না।”
“সেটা তো এখন ঘরে নেই ঘরে নাস্তা আছে তা আজ একটু কষ্ট করে খাও। তোমাদের চাহিদার ব্যবস্থা করছি।”
“মাল ছাড়া আমার গলা দিয়ে কিছুই তো নামবেনা।”-একজন বল্ল।
“চেষ্টা কর। একটা দিন মাত্র । তোমাদের চাহিদাটা জানিয়ে দিও। সেভাবেই আনা হবে। ”
”এই তুই ফকফক বেশি করছ। যা বলছি তাই কর যেখান থেকে পারিস বাংলা নিয়ে আয়।” -অন্য আরেকজন বল্ল।
ওদের মধ্যে একজন বল্ল, “ঠিক আছে আমরা নাস্তাই করছি।” তারা কিজানি আলোচনা করছে বুঝতে পারছিনা।”
আমি তার নাম জিজ্ঞেস করলাম যে নাসতা খাওয়ার জন্য সবাইকে মানাল।
আমার নাম জামাল। সেদিন রাত্রে আমি বাকি তিনজনের কমান্ড করছিলাম। আমরা চারজন ভালো বন্ধু ছিলাম। সবাই আমাকে বেশি মানত। আমাদের চারজনের দু:খ ছিল চাররকম। দু:খ আমাদের বন্ধুত্বের উতস। এই দু:খ কমানোর জন্যই আমরা মাদককে আমাদের সাথি করে নিয়েছিলাম। আমি বাকি তিনজনের সাথে পরামর্শ করে, রাজি করিয়ে এখানে এসেছিলাম। আমার টাকাপয়সার কোন দরকার নেই। আমার এই মানুষটাকে মারা দরকার ছিল। আমি ছোট থাকতেই আমার বাবাকে হারাই। এর পর আমার বড় ভাই আমাদের সংসারের হাল ধরেছিল। আমার বড়ভাই সত ছিল, সবার উপকার করে বেড়াত বলে এমনই বড়লোকের পালা কুত্তাদের গুলিতে মরে গিয়েছিল। আমার বড় ভাই শিক্ষক ছিল। আমার বড় ভাই , গার্মেন্টস মালিকের ছেলে রকির একটা অপরিস্থিতিকর ঘটনা দেখে ফেলেছিল। মেয়ে ঘটিত ব্যপার ছিল। মেয়েটি গরিব ছিল বলে তার পক্ষে বলার কেও নেই। আমার ভাই প্রতিবাদ করতে চাইলে রকির বাবা আমার ভাইকে মেরে ফেলে তার সাঙ্গপাঙ্গ দ্বারা। আমি এমন মানুষকে মেরে ফেলতে চাই যারা আমাদের মত যুবকের হাতে বন্দুক তুলে দেয়। এই ক্ষভেই আমি এখানে এসেছিলাম। ওর বন্দুক নিয়ে ওকেই প্রথমে মারব । আমার যা হবে হোক। আমি ছাড়া আমার ঘরে মা আর বোন আছে। আমি বেচে থেকেই বা কি উপকার করছি এর চেয়ে মরাও ভালো। কিন্তু আমি অবাক হয়ে গেলাম লোকটিকে দেখে। আমি ভাবতেও পারিনি লোকটি এমন ধরনের হবে। তৌশিক না থাকলেতো আমি এই মানুষকে চিনতেই পারতামনা। আমরা চারজনই খাবার টেবিলে এসে নাসতা খেতে বসি, আমাদের সাথে স্যারও বসেন। তবে উনি আমাদের সাথে খান না।
আমি তৌশিক। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আমার বাবা সরকারি নিম্নপর্যায়ের কর্মকর্তা। আমার ছোটবোনের হৃদরোগ ছিল। আমার বাবার সামার্থ ছিলনা চিকিতসা করানোর। আমি আমার ছোট বোনকে অনেক ভালোবাসি। আমি চোখের সামনে ছোট বনকে এভাবে দেখতে পারবনা তাই রাজনীতির সাথে জড়িয়ে গিয়েছিলাম। একজনের পাল্লায় পড়ে মদ, গাজা আর বন্দুক চালানো, সেখান থেকেই শিখেছি। কিন্তু কেওকে মারিনি। সেখানে গিয়ে পড়ে থাকতাম ফ্রি মদ, হেরোইন আর গাজা পেতাম তাই। আমার মনে বিশাল ব্যথা ছিল। এই ব্যথা দমানোর জন্য আমি সেবন করতাম এই মরণপানীয়। আমি এমনটি হতে চাইনি। আমাকে সময় বাধ্য করেছে এমনটি হতে। আমি ভালো হতে চেয়েছিলাম। আর্থিক অভাব আর সংসারের বিভিন্ন সমস্যা আমাকে ব্যথিত করে তুলেছে। সেদিন আমার মনে একটা কথা বলার ইচ্ছা ছিল, নাসতা খাবার সময় ভাবছিলাম লোকটাকে বলব কিনা।
সাহস করে বলেই ফেল্লাম, “আমার লাখ বিশেক টাকা লাগবে। আপনি আমাকে এখন দেন আমি সারা জীবন আপনার এখানে গোলামি করব।”
পররে পর্ব Click This Link