কথায় কথায় কিয়ামত আর দজ্জাল কে দেখা মানুষের একটা স্বভাব। অথচ কিয়ামত একটা মহাজগতিক বিষয়। কিয়ামতের আগে সূর্য তার উজ্জ্বলতা হারাবে এটা তো ধর্মের ই কথা। আমাদের সূর্য এখনো তরুণ, হুটকরে তার সব জ্বালানী ফুরিয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন হবার কথা নয়। আর কাল যদি পৃথিবী তার শেষ পারফেক্ট দিন টি দেখেও তারপরও মৃত প্রায় সূর্য আলোক বিকিরণ ছড়াবে কয়েকশ বছর, হয়তো কয়েক হাজার। প্রচন্ড খাদ্য সংকট আর প্রাকৃতিক দূর্যোগের ভেতর দিয়ে মানুষ ধ্বংসের দিকে এগোবে ধীরে ধীরে।
দজ্জাল তো পৃথিবীতে বহুবার এসেছে। ১২৫৮ তে যখন মঙ্গোলরা মধ্য এশিয়া থেকে এসে বাগদাদ ধূলোর সাথে মিশিয়ে দিলো আর নির্বিচারে সবাইকে হত্যা করলো তখন বাগদাদবাসী জেনেছিলো হালাকু খান ই সেই দজ্জাল, ল্যাংড়া তৈমুর যখন ইস্পাহানে খুলির মিনার বানালো আর দিল্লির পথে সিন্ধুকে রক্ত সিন্ধুতে পরিণত করলো তখন তৈমুরই ছিলো সেই দজ্জাল।
যুগে যুগে দজ্জাল এলেও কিয়ামত আসেনি, অথবা কিয়ামত এসেছিলো যে যার কিয়ামত দেখে ধূলো হয়ে গেছে। পাঁচশো বছর আগে লোদি বংশের লোকেরাও নিশ্চয় পানিপথে তাদের কিয়ামত দেখেছিলো। ইউরোপ দেখেছিলো কর্ডোবা আর হিটলারের গ্যাস চেম্বারে। এরই মধ্যে পৃথিবীতে হয়তো সহস্র বার কিয়ামত এসেছে। কিয়ামত মানে যে হিটলারের গ্যাস চেম্বারের বিষাক্ত হাইড্রোজেন সায়ানাইড গ্যাস, হিরোশিমার দূরন্ত মাশরুম ক্লাউড এ আমরা মানতেই রাজি নই, আরো বড় ধ্বংস আমাদের চাই। কিন্তু আরো বড় বিলাশ দেখতে মানুষকেই তার মেধার সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছাতে হবে যেখান থেকে সে এখনো বহু দূরে। মানুষের কাঙ্ক্ষিত কিয়ামত এতো সহজ হবে না। আর সুপ্রিম ক্রিয়েটর তাঁর সুপ্রিম ক্রিয়েশনকে মাঝ পথে থামিয়ে দেবেন না। মানুষ নিজে তার ধ্বংসের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করবেন নিশ্চয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৩:৩২